আমরা আজ অনেকদূর এগিয়েছি সত্য, আমাদের আরও বহুদূর যেতে হবে
আলোকিত বার্তা:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা আজ অনেকদূর এগিয়েছি সত্য, আমাদের আরও বহুদূর যেতে হবে। হতে পারে সে পথ মসৃণ, হতে পারে বন্ধুর। বাঙালি বীরের জাতি।পথ যত কঠিনই হোক, আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে। আমরা যদি পরিশ্রম করি, সততা-দেশপ্রেম নিয়ে দায়িত্ব পালন করি, তাহলে আমরা সফলকাম হবই, ইনশাআল্লাহ।আওয়ামী লীগ সরকারের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি ও তৃতীয় বছরে পদার্পণ উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।ভাষণে করোনা সংকট মোকাবিলা এবং বর্তমান সরকারের চলতি মেয়াদের দুবছরসহ টানা এক যুগের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, জনগণ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সুফল ভোগ করছে।জনগণের সরকার হিসাবে মানুষের জীবনমান উন্নয়ন করা আমাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য বলেই আমি মনে করি।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের যে মহাসড়ক বেয়ে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, তা যেন কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত না হয়-সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।উন্নয়নের পথে সব প্রতিবন্ধকতা দূর করতে আমরা বদ্ধপরিকর। কিছু অসাধু মানুষ নানা কৌশলে জনগণের সম্পদ কুক্ষিগত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকে। আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছি।দুর্নীতিবাজ যে দলেরই হোক আর যত শক্তিশালীই হোক, তাদের ছাড় দেওয়া হচ্ছে না এবং হবেও না। এ ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশন স্বাধীনভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করছে।আইনের শাসন সমুন্নত রেখে মানুষের নাগরিক এবং গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করতে যা যা করা প্রয়োজন আমরা তা করব।
এর আগে বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা, ৩০ লাখ শহিদ এবং দুই লাখ নির্যাতিত মা-বোন, ১৫ আগস্ট ঘাতকদের হাতে নিহত তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সশ্রদ্ধ সালাম জানান সরকারপ্রধান।এ সময় উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক ও গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর প্রতিও গভীর শ্রদ্ধা জানান তিনি।শেখ হাসিনা বলেন, করোনা মহামারির কারণে এক গভীর সংকটের মধ্যদিয়ে ২০২০ সাল অতিক্রম করতে হয়েছে। সেইসঙ্গে ঘূর্ণিঝড় আম্পান এবং উপর্যুপরি বন্যা আমাদের অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।আমরা সেসব ধকল দৃঢ়তার সঙ্গে কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু করোনাজনিত সংকট থেকে বিশ্ব এখনো মুক্ত হয়নি। তিনি বলেন, মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে বাংলাদেশে এখনো সংক্রমণ এবং মৃত্যুহার অনেক কম।আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি এই মহামারি নিয়ন্ত্রণে রাখার। আশার কথা, বিভিন্ন দেশে কোভিড-১৯-এর টিকা প্রদান শুরু হয়েছে। বাংলাদেশেও আমরা দ্রুত টিকা নিয়ে আসার সব ধরনের চেষ্টা করছি।টিকা আসার পরপরই চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ সম্মুখসারির যোদ্ধাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা প্রদান করা হবে।এ সময় সাহসের সঙ্গে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী এবং মাঠ প্রশাসনের সদস্যসহ সম্মুখযোদ্ধাদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।তিনি বলেন, করোনা ছড়িয়ে পড়ার পর আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ অনেকেই নানা শ্রেণি-পেশার অসহায় মানুষের সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন।সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।শেখ হাসিনা বলেন, করোনা মহামারি ইতোমধ্যে বিশ্ব অর্থনীতিতে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করেছে। অনেক দেশে অর্থনীতিতে স্থবিরতা নেমে এসেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিও ক্ষতির মুখে পড়েছে।তবে বিভিন্ন নীতিসহায়তা এবং বিভিন্ন উদারনৈতিক আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ প্রদানের মাধ্যমে আমরা অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি।এখন পর্যন্ত আমরা এক লাখ ২১ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি, যা মোট জিডিপির ৪.৩ শতাংশ। পরিস্থিতি বিবেচনা করে সে প্রক্রিয়া এখনো অব্যাহত রেখেছি।
বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রায় আড়াই কোটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে আমরা নগদ অর্থসহ বিভিন্ন সহায়তার আওতায় এনেছি। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।গত অর্থবছরে জিডিপি ৫.২৪ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রাক্কলন অনুয়ায়ী এ বছর জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৭.৪ শতাংশ। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রক্ষেপণ অনুযায়ী জিডিপির প্রবৃদ্ধির হারে বাংলাদেশের অবস্থান হবে এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ।আইএমএফ-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২০ সালে সবচেয়ে বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী শীর্ষদেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। ২০২০-এ মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৪ মার্কিন ডলারে।শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের পর আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১২ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে একটি আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।আর্থসামাজিক এবং অবকাঠামো খাতে বিস্ময়কর উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। দি ইকোনমিস্ট-এর ২০২০ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী ৬৬টি উদীয়মান সবল অর্থনীতির দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৯ম।ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের পূর্বাভাস অনুযায়ী ২০৩০ সাল নাগাদ বাংলাদেশ হবে বিশ্বের ২৪তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ।একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ঘোষিত ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ শীর্ষক ইশতাহার প্রসঙ্গে দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের নির্বাচনি ইশতাহারের মূল প্রতিপাদ্য ছিল দক্ষ, সেবামুখী ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন গড়ে তুলে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ নির্মূল করে একটি ক্ষুধা-দারিদ্র্য-নিরক্ষরতামুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা।২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উচ্চ মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের সমৃদ্ধিশালী-মর্যাদাশীল দেশ। ২০২১ সালের আগেই উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছি।প্রত্যাশিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পথনকশা তৈরি করেছি। রূপকল্প ২০৪১-এর কৌশলগত দলিল হিসেবে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১ প্রণয়ন করা হয়েছে।সরকারপ্রধান জানান, গত সপ্তাহে ২০২১-২৫ মেয়াদি অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুমোদিত হয়েছে, যা বাস্তবায়নে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৪ লাখ ৯৫ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা।এ মেয়াদে এক কোটি ১৬ লাখ ৭০ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শেষে দারিদ্র্যের হার ১৫.৬ শতাংশে এবং চরম দারিদ্র্যের হার ৭.৪ শতাংশে নেমে আসবে।
শেষ বছর ২০২৫ সালে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৮.৫১ শতাংশে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর ১০টি উদ্যোগ বাস্তবায়ন অব্যাহত থাকবে যা দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়ক হবে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ঘাত-প্রতিঘাত মোকাবিলা করে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য এর আগে আমরা ‘বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ শীর্ষক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।করোনাভাইরাসের মহামারি সত্ত্বেও আমাদের অর্থনীতি সঠিক পথে অগ্রসর হচ্ছে। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে আমাদের বহুল আরাধ্য নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন পদ্মা সেতুর সর্বশেষ স্প্যান বসানোর মাধ্যমে দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে রাজধানীসহ অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত করা হয়েছে।এ পর্যন্ত পদ্মা সেতুর ৮২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী বছর এই স্বপ্নের সেতু যানবাহন এবং রেল চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া সম্ভব হবে। অন্যান্য বৃহৎ প্রকল্পগুলোর কাজও পূর্ণোদ্যমে এগিয়ে যাচ্ছে।প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০০৯ থেকে ২০২০ পর্যন্ত প্রায় ১৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। ২০০৯ সালে জাতীয় গ্রিডে ১ হাজার ৭৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হতো বর্তমানে যা ২ হাজার ৫২৫ মিলিয়ন ঘনফুটে দাঁড়িয়েছে।গ্যাসের অব্যাহত চাহিদা মেটাতে ২০১৮ থেকে তরলীকৃত গ্যাস আমদানি করা হচ্ছে। বাংলাদেশ আজ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। শেখ হাসিনা বলেন, গ্রামগুলো বরাবরই উন্নয়ন ভাবনার বাইরে ছিল।আমরাই প্রথম গ্রামোন্নয়নকে উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করি। আমাদের নির্বাচনি ইশতাহারে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করে ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণের অঙ্গীকার করি।
আজ দেশের প্রায় সব গ্রামে পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। এ সময় ২০০৯ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরেন সরকারপ্রধান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ আজ একটি সমীহর নাম। জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনসহ আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব চোখে পড়ার মতো।সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’-জাতির পিতা প্রণীত বৈদেশিক নীতির এই মূলমন্ত্রকে পাথেয় করে আমরা বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছি।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে এই মুহূর্তে শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসাবে বাংলাদেশ শীর্ষে। তিনি বলেন, মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত ১১ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে শান্তিপূর্ণভাবে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।কক্সবাজারে বিভিন্ন ক্যাম্পে তাদের কষ্ট লাঘবের জন্য ভাসানচরে এক লাখ মানুষের বসবাস উপযোগী উন্নতমানের অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে শুধু স্ব-ইচ্ছায় যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পাঠানো হচ্ছে।আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্বদেশে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আরও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া হবে। তবে এখন শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ নেই। শিক্ষার্থীদের বই দেওয়া হচ্ছে।মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে ২০২১ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের এক হাজার টাকা করে কিট অ্যালাউন্স দেওয়া হবে।তার সরকারের আমলে সড়ক, নৌ ও আকাশপথের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ৪৫৩ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক চার বা তদূর্ধ্ব লেনে উন্নীত করা হয়েছে।আরও ৬৬১ কিলোমিটার মহাসড়ক চার এবং তদূর্ধ্ব লেনে উন্নীত করার কাজ চলছে। ঢাকায় বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ ২০২৩ সাল নাগাদ শেষ হবে।২০০৯ থেকে ২০২০ পর্যন্ত ৪৫১ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণ এবং এক হাজার ১৮১ কিলোমিটার রেলপথ পুনর্বাসন করা হয়েছে।৪২৮টি নতুন রেলসেতু নির্মাণ করা হয়েছে।কিছুদিন আগে আমরা যমুনা নদীর ওপর ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছি।লোকোমোটিভ যাত্রীবাহী ক্যারেজ এবং মালবাহী ওয়াগন সংগ্রহ করা হয়েছে এক হাজার ৪০টি। এ সময় বাংলাদেশ রেলওয়েতে ১৩৭টি নতুন ট্রেন চালু করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের বিমানবহরে ১২টি নতুন অত্যাধুনিক বোয়িং এবং ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ সংযোজিত হয়েছে। গত মাসে ১টি ড্যাশ-৮-৪০০ উড়োজাহাজ সংযোজিত হয়েছে।চলতি মাসে আরও ২টি ড্যাশ-৮-৪০০ উড়োজাহাজ সংযোজিত হবে। এ ছাড়া সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে স্বাস্থ্যখাতে বাংলাদেশের ব্যাপক ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে।আমাদের স্বাস্থ্যসেবার সম্প্রসারণ এবং গুণগত মানোন্নয়নের ফলে মানুষের গড় আয়ু ২০১৯-২০ বছরে ৭২ দশমিক ৬ বছরে উন্নীত হয়েছে।৫ বছর বয়সি শিশুমৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ২৮ ও অনূর্ধ্ব ১ বছর বয়সি শিশুমৃত্যুর হার ১৫-তে হ্রাস পেয়েছে। মাতৃমৃত্যু হার কমে দাঁড়িয়েছে প্রতি লাখে ১৬৫ জনে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনের সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। ইউনেসকো সৃজনশীল অর্থনীতির ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর নামে একটি পুরস্কার চালু করেছে।আগামী ২৬ মার্চ আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। করোনার প্রকোপ না থাকলে আমরা সাড়ম্বরে এই অনুষ্ঠান উদ্যাপন করব, ইনশাআল্লাহ। একইসঙ্গে চলতে থাকবে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানমালা।তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের সৌভাগ্য এবং আওয়ামী লীগের জন্য গর্বের বিষয় যে, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এই মাহেন্দ্রক্ষণে স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়।১৯৯৭ সালে রজতজয়ন্তী উদ্যাপনকালেও আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিল। আওয়ামী লীগ ব্যতীত অন্য কোনো দল বা গোষ্ঠী স্বাধীনতার এই মাহেন্দ্রক্ষণকে স্মরণীয় করে রাখার তাগিদ অনুভব করবে না।জাতীয় কবি কাজী নজরুলের দুর্গম গিরি, কান্তার-মরু, দুস্তর পারাবার, লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি-নিশীতে যাত্রীরা হুঁশিয়ার! কবিতা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে সামনে রেখে আসুন আমরা নতুন করে শপথ নিই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং আদর্শকে ধারণ করে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্য-নিরক্ষরতামুক্ত একটি অসাম্প্রদায়িক কল্যাণকামী বাংলাদেশ গড়ে তুলব। করোনাভাইরাসের এই অমানিশা দ্রুত কেটে যাক, এই প্রার্থনা করি। ততদিন আপনারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে জীবনযাপন করুন।