প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে কর্মকর্তাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো - Alokitobarta
আজ : শনিবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে কর্মকর্তাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো


আলোকিত বার্তা:প্রায় সাড়ে চার মাস পর রোববার প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে কর্মকর্তাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ৭৫ শতাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মৌখিক নির্দেশে বাড়িতে বসে কাজ করার সুযোগ দিয়েছিল সরকার। ৪ আগস্ট সেই নিয়ম তুলে দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।এ পরিপ্রেক্ষিতে সব কর্মকর্তাকে স্বাভাবিক সময়ের মতোই সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত অফিসে উপস্থিত থেকে দায়িত্ব পালন করার নির্দেশ দেয় সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। এতেই রোববার সরগরম হয়ে উঠে সচিবালয়।তবে বৃদ্ধ, গর্ভবতী নারী ও অসুস্থ চাকরিজীবীদের আগের মতোই বাসায় থেকে অফিস করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি সচিবালয়ের দর্শনার্থী পাস ইস্যু এখনও বন্ধ রয়েছে। রোববার সচিবালয়ে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।এদিন বেলা সাড়ে ১১টায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দফতরে গিয়ে দেখা যায়, বেশির ভাগ কর্মকর্তাই অফিস করছেন। মন্ত্রীর দফতরের একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানান, মন্ত্রণালয়ের প্রায় শতভাগ কর্মকর্তা এখন অফিস করছেন সশরীরে। কয়েকজন বয়স্ক, রোগাক্রান্ত ও নারী কর্মকর্তা আসেননি।
প্রায় অভিন্ন তথ্য দিলেন সুরক্ষা সেবা বিভাগের একজন ব্যক্তিগত কর্মকর্তা। তিনি জানালেন, সুরক্ষা সেবা বিভাগেরও প্রায় সবাই এখন অফিস করছেন। তবে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানা হচ্ছে। দর্শনার্থী না থাকায় কিছুটা আরামে আছেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন। একই ভবনের দ্বিতীয় তলায় ধর্ম মন্ত্রণালয়েও দেখা গেল প্রায় প্রতিটি ডেস্কে কর্মকর্তারা কাজ করছেন।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন বলেন,ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রায় শতভাগ কর্মকর্তা সশরীরে অফিস করছেন। করোনাকালীন সীমিত পরিসরে অফিস চললেও ঈদুল আজহার পর সবাই ৯টা-৫টা অফিস করছেন।প্রায় একই চিত্র দেখা গেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন, বাণিজ্য, খাদ্য, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্য, ভূমি, কৃষি, আইন,অর্থ,স্থানীয় সরকার,শ্রম কর্মসংস্থান,সমাজকল্যাণসহ প্রায় সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কৃষি মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব জানান,করোনার কারণে তাদের মন্ত্রণালয়ের কাজ আরও বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কৃষিমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনায় তাদের প্রতিদিন অফিস করতে হচ্ছে।করোনা-পরবর্তী পরিস্থিতিতে যাতে খাদ্য নিরাপত্তায় ব্যাঘাত না ঘটে বা খাদ্য সংকট দেখা না দেয়, সেজন্য কৃষিমন্ত্রী প্রায় প্রতিদিন অনলাইনে সভা-সেমিনার করছেন। কীভাবে ফসলের উৎপাদন বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিচ্ছেন। ফলে আমাদের কাজের পরিধি আরও বেড়েছে।

এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বৃহস্পতিবার বলেন,আমরা সরকারি কোনো কাজ পেন্ডিং রাখতে চাই না। তাই সরকারি সেবা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম যেন আরও গতিশীল হয়, সেজন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।তবে সবাইকে আগের মতো সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত অফিসে উপস্থিত থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে কি না, এ সিদ্ধান্ত দেবে নিজ নিজ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বা অধিদফতর।করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ২৬ মার্চ থেকে চলা টানা ৬৬ দিনের লকডাউন ওঠার পর ৩১ মে থেকে সীমিত পরিসরে অফিস খোলার পাশাপাশি গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয় সরকার। এরপর অফিস আর বন্ধ করা হয়নি।৩১ মে থেকে অফিস চালুর পর মৌখিক নির্দেশনায় সরকারি দফতরগুলোয় একসঙ্গে ২৫ শতাংশের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অফিসে অবস্থান করতে নিষেধ করা হয়েছিল। ফলে এখনও মৌখিক নির্দেশনা দিয়ে সবাইকে নির্ধারিত সময়ে অফিসে অবস্থান করতে বলা হয়েছে।এ প্রসঙ্গে জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন বৃহস্পতিবার বলেন,সব কর্মকর্তাকে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত অফিস করতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মৌখিকভাবে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে আমাদের মন্ত্রণালয়ের সব কর্মকর্তাকে সেই নির্দেশনা মৌখিকভাবে জানিয়ে দিয়েছি, সব অফিসারকে অফিসে থাকতে বলেছি।এখন কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশ হল- সব অফিসার ৯টা-৫টা অফিস করবেন। ৫টার পরেও যদি অফিসারদের থাকতে হয়, থাকবেন। তবে বৃদ্ধ, গর্ভবতী নারী ও অসুস্থদের জন্য এটি প্রযোজ্য নয়।

Top