কমে গেছে অনেক ভালো কোম্পানির শেয়ারের দাম - Alokitobarta
আজ : শনিবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কমে গেছে অনেক ভালো কোম্পানির শেয়ারের দাম


আলোকিত বার্তা:মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়েছে। কমে গেছে অনেক ভালো কোম্পানির শেয়ারের দাম। বিপরীতে মহামারির মধ্যেও বেশকিছু দুর্বল কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের ঝুঁকিও বাড়ছে।শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঝুঁকি নির্ণয়ের অন্যতম উপায় মূল্য আয় অনুপাত (পিই)। যে প্রতিষ্ঠানের পিই যত কম, ওই কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ ঝুঁকি তত কম। সাধারণত ১০-১৫ পিই-কে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঝুঁকিমুক্ত ধরা হয়।এই পিই’র ভিত্তিতে বর্তমানে দেশের বাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কাগজ ও মুদ্রণ, ভ্রমণ এবং পাট খাত সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। ওই তিন খাতের পিই ৩০-এর ওপরে রয়েছে। বিপরীতে সবচেয়ে কম ঝুঁকিতে রয়েছে ব্যাংক, খাদ্য ও টেলিযোগাযোগ খাত। ওই তিন খাতের পিই ১০-এর নিচে অবস্থান করছে।শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সার্বিকভাবে বিবেচনা করলে বর্তমান শেয়ারবাজার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নিরাপদ। কিন্তু বর্তমান করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে শুধু পিই দিয়ে ঝুঁকি সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা সম্ভব নয়। অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করায় বাজারে এখন কোনো যুক্তি সঠিকভাবে কাজ করবে না।

তারা বলছেন, এ পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের বিচক্ষণতার প্রমাণ দিতে হবে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সার্বিক বিষয় ভালোভাবে পর্যালোনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। হুজগে বা গুজবে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া ঠিক হবে না। ভালো মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানিতে বিনিয়োগের পরিকল্পনা নিতে হবে।এ বিষয়ে ডিএসইর এক সদস্য বলেন, এখন সার্বিক বাজারের পিই ১১-এর নিচে। আবার কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানের পিই ১০-এরও অনেক নিচে। এদিক বিবেচনা করলে বর্তমান শেয়ারবাজার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে খুবই উপযোগী। তার মানে এই নয় যে, যেমন-তেমনভাবে বিনিয়োগ করলেই মুনাফা আসবে। বরং বর্তমান পরিস্থিতিতে ভুল সিদ্ধান্ত নিলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পিই অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। তবে শুধু পিই’র ওপর ভিত্তি করেই বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত হবে না। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোম্পানির সাম্প্রতিক ব্যবসায়িক পারফরম্যান্স বিবেচনা করতে হবে। পাশাপাশি কোম্পানির অতীত তথ্যও ভালো করে পর্যালোচনা করতে হবে। এছাড়া কোম্পানির পরিচালক হিসেবে কারা আছেন, সেই তথ্যও পর্যালোচনা করতে হবে।তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহের লেনদেন শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৬৪ পয়েন্টে। ডিএসই’র সার্বিক মূল্য অনুপাতেরও নিচে রয়েছে ব্যাংক, খাদ্য ও টেলিযোগাযোগ খাতের পিই।এর মধ্যে সবচেয়ে কম পিই রয়েছে ব্যাংক খাতের। নানা সমস্যায় জর্জরিত ব্যাংকের শেয়ারের ব্যাপক দরপতনের কারণে এ খাতের পিই ৬ দশমিক ৬৯ পয়েন্টে নেমে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংক খাতের পিই ৬-এর ঘরে রয়েছে। এছাড়া খাদ্য খাতের পিই ৭ দশমিক ৫৩ পয়েন্টে এবং টেলিযোগাযোগের পিই ৯ দশমিক ৩৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ওই দুটি খাতের পিইও অনেক দিন ধরে ১০-এর নিচে রয়েছে।

অপরদিকে সবচেয়ে বেশি পিই রয়েছে কাগজ ও মুদ্রণ খাতের। এ খাতের পিই ৪৪ দশমিক শূন্য ৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। পিই ৩০ এর ওপর থাকে বাকি দুটি খাতের মধ্যে ভ্রমণ ও অবকাশের ৩০ দশমিক ৯০ পয়েন্টে এবং পাট খাতে ৩০ দশমিক ২৩ পয়েন্টে রয়েছে।পিই ১৫ এর নিচে থাকা খাতগুলোর মধ্যে- বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের পিই ১০ দশমিক ২২ পয়েন্টে, সেবা ও আবাসনের ১১ দশমিক ১১ পয়েন্টে, বীমার ১১ দশমিক ৫৭ পয়েন্টে, তথ্য প্রযুক্তির ১৪ দশমিক ১৮ পয়েন্টে, প্রকৌশলের ১৩ দশমিক ৩৮ পয়েন্টে, বস্ত্রের ১৩ দশমিক ৪১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।এছাড়া ওষুধ ও রসায়নের ১৬ দশমিক ৮৯ পয়েন্টে, চামড়ার ২১ দশমিক ৮৭ পয়েন্টে, বিবিধের ১৯ দশমিক ৮৯ পয়েন্টে, আর্থিক খাতের ২০ দশমিক ৬৮ পয়েন্টে, সিরামিকের ২০ দশমিক ৩১ পয়েন্টে, সিমেন্টের পিই ২৬ দশমিক শূন্য ১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

Top