চার হাজার কোটি টাকা সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নে
আলোকিত বার্তা:চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে(ডিএনসিসি)নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত ১৮টি ওয়ার্ড।রাজধানীর অংশ হলেও এসব ওয়ার্ড ছিল অনুন্নত।এ এলাকাগুলোর সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়নের মাধ্যমে যান চলাচলে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং যানজট নিরসনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া নর্দমা নির্মাণ ও খাল উন্নয়নের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসন,এলইডি বাতি স্থাপন করা হবে।এজন্য ‘ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত ১৮টি ওয়ার্ডের সড়ক অবকাঠামো ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার নির্মাণ ও উন্নয়ন(ফেজ-১)শীর্ষক একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে।এটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির(একনেক)বৈঠকে উপস্থাপন করা হচ্ছে আজ।অনুমোদন পেলে চলতি মাস থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন।এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৪ হাজার ২৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠেয় এ বৈঠকে গণভবন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রকল্পটি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান সোমবার বলেন,এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে কাউকে পেছনে ফেলে নয়,সবাইকে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। আমরা সেই নীতি মেনেই চলমান উন্নয়নের সঙ্গে সবাইকে যুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছি।এ ক্ষেত্রে কাউকে পেছনে ফেলে রাখা হবে না।শুনেছি এসব ওয়ার্ডে নাকি রাস্তাঘাট, অবকাঠামো বলতে তেমন কিছুই নেই। তাই প্রকল্পটি একনেকে উপস্থাপন করা হচ্ছে।সূত্র জানায়, স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত বছরের ১৭ জুন প্রকল্পটি নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। ওই সভায় দেয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করে ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) সংশোধন করা হয়েছে। ফলে পরিকল্পনা কমিশনের পক্ষ থেকে একনেকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়।প্রকল্পটি সরকারের সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায় পরিকল্পিত নগরায়ণ এবং উন্নত নাগরিক সেবা প্রদান সংক্রান্ত সিটি কর্পোরেশনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই এটি সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) শামীমা নার্গিস বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সম্প্রসারিত এলাকার উন্নয়ন ঘটবে। ওইসব ওয়ার্ডের সড়ক নেটওয়ার্ক, নর্দমা, জলাবদ্ধতা নিরসন, এলইডি বাতি স্থাপনসহ অন্যান্য কার্যক্রমের মাধ্যমে নগরবাসীর কাক্সিক্ষত নাগরিক সেবা লাভ করবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে এটি একনেকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে-১৮২ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ ও উন্নয়ন করা হবে।এছাড়া ২৩৩ দশমিক ৯৭ কিলোমিটার নর্দমা নির্মাণ ও উন্নয়ন, ২৮ দশমিক ৫১ কিলোমিটার খাল উন্নয়ন,১২ হাজার ২৬৭টি এলইডি বৈদ্যুতিক বাতি স্থাপন,৬৯ দশমিক ৪৮ একর ভূমি অধিগ্রহণ এবং থোক থেকে স্থাপনার ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।
প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের ২৮ জুন গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতায় উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত হরিরামপুর ইউনিয়ন এবং পূর্বাঞ্চলের উত্তরখান,দক্ষিণখান,বাড্ডা,বেরাইদ, ডুমনি,সাতারকুল ও ভাটারা ইউনিয়নের এলাকাগুলোকে ১৮টি ওয়ার্ডে বিভক্ত করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ফলে ডিএনসিসি এলাকা ১১৪ দশমিক ৫৬ বর্গকিলোমিটার বৃদ্ধি পায় এবং জনসংখ্যা ১ দশমিক ৫ গুণ বেড়ে গেছে।এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের এয়ারপোর্ট রোড ও প্রগতি সরণি সংলগ্ন ৭টি ইউনিয়নের পশ্চিমাংশ ও উত্তরা আবাসিক এলাকা সংলগ্ন হরিরামপুর ইউনিয়ন তুলনামূলকভাবে অধিক ঘনবসতিপূর্ণ। অধিকাংশ ইউনিয়নের বিদ্যমান রাস্তা ও রাস্তার পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাদি অপর্যাপ্ত হওয়ায় অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা এবং যানজটের সৃষ্টি হয়। অধিকাংশ রাস্তায় কোনো বৈদ্যুতিক আলো না থাকায় রাতে চলাচলের ক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতা লক্ষ করা যায়। এছাড়া বিদ্যমান খালগুলো রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ক্রমেই সংকুচিত হওয়ায় পানি নিষ্কাশন বিঘ্নিত হচ্ছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব করে স্থানীয় সরকার বিভাগ।