করোনা পরিস্থিতিতে নিদারুণ কষ্টে সময় পার করছেন শিক্ষিত বেকার যুবকরা। - Alokitobarta
আজ : শনিবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

করোনা পরিস্থিতিতে নিদারুণ কষ্টে সময় পার করছেন শিক্ষিত বেকার যুবকরা।


আলোকিত বার্তা:করোনা পরিস্থিতিতে নিদারুণ কষ্টে সময় পার করছেন শিক্ষিত বেকার যুবকরা।শিক্ষাজীবন শেষ করে চাকরি না পেয়ে টিউশনি বা পার্টটাইম চাকরি করে আগে কোনোমতে চললেও এখন তা বন্ধ হয়ে গেছে। প্রায় ১৫ লাখ বেকার দেশের এমন পরিস্থিতিতে অসহায় হয়ে পড়েছেন। তাদের জন্য নেই কোনো ত্রাণ বরাদ্দ।আবার কারো কাছে হাত পাততেও পারছেন না তারা। তাই অর্ধাহারে-অনাহারে দিন পার করছেন অনেক শিক্ষিত বেকার।রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলার একাধিক শিক্ষিত বেকার যুবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,শিক্ষাজীবন শেষ করে অনেক কষ্ট করেও সরকারি চাকরির সুযোগ পাননি। অনেকে সেশনজটের কবলে জীবনের মূল্যবান চার থেকে পাঁচ বছর সময় হারিয়েছেন।এ কারণে সরকারি চাকরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন অনেকে।তাই টিউশনি করে বা কেউ পার্টটাইম চাকরি করে কষ্টে দিন পার করতেন তারা। বর্তমানে করোনাভাইরাসের কারণে সবকিছু বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আর্থিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়তে হয়েছে তাদের অনেককেই।

তারা জানান,এখন চাকরি কিংবা টিউশনি কিছুই নেই। পরিবার থেকে অনেক টাকা ব্যয় করে পড়ালেখা করানোর কারণে এখন আর বাবা-মায়ের কাছে হাত পেতে কিছু নেয়া সম্ভব নয়,সেই দরজা বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে করোনার কারণে ঘরবন্দী হয়ে খেয়ে না খেয়ে অনেকে দিন কাটাচ্ছেন।তাদের জন্য কেউ ত্রাণ বরাদ্দ দিচ্ছেন না,লজ্জায় কারও কাছে হাত পেতে চাইতেও পারছেন না তারা।নেত্রকোনা সরকারি কলেজ থেকে মাস্টার্স পাশ করেছেন উজ্জল কুমার সরকার। সেশনজট তার জীবনের প্রায় পাঁচ বছর সময় কেড়ে নিয়েছে। সরকারি চাকরি করার অনেক আশা থাকলেও সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। ঢাকায় থেকে তিনটা টিউশনি আর পাশাপাশি পার্টটাইম কাজ করে চলতেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে চাকরি ও টিউশনি বন্ধ হয়ে গেছে। গত মাসের বেতনও পরিশোধ করেনি তারা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে তাকে।তিনি বলেন,করোনা পরিস্থিতিতে আমাদের জীবনে অন্ধকার নেমে এসেছে। হাতে কোনো অর্থ না থাকায় গাজীপুর এক আত্মীয়ের বাসায় এসে আশ্রয় নিয়েছি। নতুবা ঢাকায় থাকলে না খেয়ে মরতে হত। তিন বেলা কোনোমতো খেতে পারলেও নিজের প্রয়োজনে কিছুই করার সমর্থ নেই। পরিবারের অবস্থা খারাপ হওয়ায় সেখান থেকেও টাকা আনার সুযোগ নেই। তার অনেক বন্ধুও এমন পরিস্থিতিতে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন পার করছেন বলে জানান উজ্জল। এভাবে চলতে থাকলে তাদের বেঁচে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়বে। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেন বেকার-যুবকদের প্রতি দৃষ্টি দেন সেই দাবি জানান তিনি।বাংলাদেশ ছাত্রকল্যাণ পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক মুজাম্মেল মিয়াজী রোববার বলেন, চাকরির বয়স শেষ হওয়াসহ বিভিন্ন কারণে দেশের প্রায় ১৫ লাখ শিক্ষিত যুবক বেকার রয়েছে। তারা পার্টটাইম চাকরি ও বিভিন্ন বাড়িতে টিউশনি করে দিন পার করলেও বর্তমানে করোনাভাইরাসের কারণে সব কিছু বন্ধ হয়ে গেছে। সবাই এখন ঘরবন্দী হয়ে পড়ায় বেকার যুবকদের দু’এক বেলা খেয়েই দিন পার করতে হচ্ছে।তিনি বলেন,অনেকের বাবা-মা অনেক কষ্ট করে পড়ালেখা করিয়ে শিক্ষিত করেছেন অনেক স্বপ্ন নিয়ে। অথচ পড়ালেখা করে চাকরি না হওয়ায় অনেকে পরিবার থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে। অনেকের আবার পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় বাড়ি থেকে টাকা নিতে পারছেন না।তিনি আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বেকার যুবকদের প্রতি সরকার যদি দৃষ্টি না দেয় তবে আত্মহত্যা ছাড়া তাদের আর কোনো পথ থাকবে না। চাকরিতে যোগদানের সময়সীমা ৩৫ বাস্তবায়ন করা হলে অনেক শিক্ষিত বেকার চাকরি পাবে। এতে তাদের বিষন্ন জীবনের অবসান ঘটবে বলে জানান তিনি।

Top