দেশের সম্ভাবনাময় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতকে (এসএমই) এগিয়ে নিতে ৫ দফা নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর - Alokitobarta
আজ : শুক্রবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেশের সম্ভাবনাময় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতকে (এসএমই) এগিয়ে নিতে ৫ দফা নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর


আলোকিত বার্তা:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘৮ম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলা-২০২০উদ্বোধনকালে দেশের সম্ভাবনাময় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতকে (এসএমই) এগিয়ে নিতে ৫ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন,আমাদের এসএমই খাতে উৎপাদিত অনেক পণ্য বিশ্বমানের। এগুলোর সঙ্গে আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য জড়িত। কাজেই এই খাতের উন্নয়নে আমাদের বেশ কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।প্রধানমন্ত্রী বুধবার রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে ৯ দিনব্যাপী এসএমই মেলার উদ্বোধন করেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ৯ দিনব্যাপী এ মেলা হচ্ছে। মেলায় ৫টি সেমিনার হবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে এবং কোনো প্রবেশমূল্য নেই।এসএমই পণ্যের প্রচার এবং স্থানীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোক্তাদের এক ছাদের নিচে আনার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এ বছর ৮ম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলা হচ্ছে। এসএমই খাতের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী তার ৫ দফা নির্দেশনার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ‘আমাদের ঐতিহ্যবাহী পণ্যের পাশাপাশি উন্নত বিশ্বে ভোক্তাদের চাহিদা-নির্ভর শতভাগ রফতানিমুখী পণ্য উৎপাদনে মনোনিবেশ করতে হবে।’

দ্বিতীয়ত,দেশজ কাঁচামাল ব্যবহার করে ভারী শিল্পের পরিপূরক পণ্য এসএমই শিল্পের মাধ্যমে প্রস্তুত করা। তৃতীয়ত, ‘এসএমই শিল্পের মাধ্যমে সুনীল অর্থনীতির বিকাশ ঘটানো।’ চতুর্থত, ‘কেউ যাতে আমাদের আর সস্তা শ্রমের দেশ মনে না করে। সেজন্য আমাদের দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি করতে হবে এবং উচ্চতর মূল্য সংযোজনের লক্ষ্য নিয়ে স্বল্প উৎপাদন খরচের সঙ্গে উন্নত প্রযুক্তির সংযোগ ঘটিয়ে গ্লোবাল ভ্যালু চেইন’র অংশীদার হওয়া।প্রযুক্তিনির্ভর এসএমই খাত গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী তার নির্দেশনায় বলেন, ‘আমাদের দেশীয় বিজ্ঞানী ও গবেষকগণ ডিজিটাল, বায়োলজিক্যাল ও ফিজিক্যাল উদ্ভাবনে এগিয়ে রয়েছেন। ভবিষ্যতে উদ্ভাবনী এই তিন ধারার সংমিশ্রণ ঘটাতে হবে। দেশের মাটিতে তা করতে পারলেই আমরা আসন্ন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারব।’ শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। শিল্প মন্ত্রণালয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আমির হোসেন আমু বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন।

শিল্প সচিব আবদুল হালিম এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল ইসলাম অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, উচ্চপদস্থ বেসামরিক এবং সামরিক কর্মকর্তা, বিদেশি কূটনীতিক, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী নেতা ও উদ্যোক্তা আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ৫ জন শিল্প উদ্যোক্তার মাঝে ‘এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার-২০২০’ প্রদান করেন।বিজয়ীরা প্রত্যেকে এক লাখ টাকার চেক, ট্রফি এবং সনদপত্র লাভ করেন। এবারের শিল্প মেলায় ১৯৫ নারী উদ্যোক্তাসহ মোট ২৯৬ জন এসএমই উদ্যোক্তা তাদের পণ্য প্রদর্শন করবেন। এরমধ্যে রয়েছে- পাটজাত পণ্য, কৃষি ও চামড়াজাত পণ্য, ইলেকট্রিক্যাল সামগ্রী, হাল্কা প্রকৌশল শিল্প পণ্য, হস্ত ও কুটির শিল্প, প্লাস্টিক এবং সিনথেটিকজাত পণ্য। মেলা উপলক্ষে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, ‘এবার মেলায় বিদেশি পণ্য থাকবে না।প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘সরকার সারা দেশে ১০০ বিশেষ শিল্পাঞ্চল (এসইজেড) গড়ে তুলছে। এই বিশেষ শিল্পাঞ্চলে আমার নির্দেশ রয়েছে আমাদের নারী উদ্যেক্তারা যেন বিশেষ সুবিধা পান।’ ‘কারণ আমি মনে করি নারী-পুরুষ যেন সমানভাবে এগিয়ে আসে এবং আরও বেশি করে যেন নারী উদ্যেক্তা সৃষ্টি হতে পারে।
সেদিকেই আমরা বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে চাই’, যোগ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আশা করব আমাদের বোনেরা আরেকটু আগ্রহী হবেন।’ স্ত্রীর নামে ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তুললে স্বামীরা বিশেষ সুবিধা পাবেন উল্লেখ করে সেই সুযোগ গ্রহণে ব্যবসায়ী মহলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি ফসলি জমি রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

Top