পুরনোদেরই অগ্রাধিকার কোণঠাসা নতুনরা ঢাকা মহানগর আ’লীগের কমিটি - Alokitobarta
আজ : শুক্রবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পুরনোদেরই অগ্রাধিকার কোণঠাসা নতুনরা ঢাকা মহানগর আ’লীগের কমিটি


আলোকিত বার্তা:ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে নানা তৎপরতা শুরু হয়েছে। দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ২১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ কমিটি গঠন করতে হবে।তবে কমিটি গঠন নিয়ে জটিলতায় পড়েছেন দুই মহানগর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। তাদের পক্ষে পুরনোদের রেখে অধিকসংখ্যক যোগ্য নেতাকে কমিটিতে ঠাঁই দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিষয়টি দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে অবহিত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের বরাত দিয়ে নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মহানগর আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।গত বছরের ৩০ নভেম্বর ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে উত্তরে শেখ বজলুর রহমান সভাপতি ও এসএ মান্নান কচি সাধারণ সম্পাদক এবং দক্ষিণে আবু আহমেদ মন্নাফী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে হুমায়ুন কবীর নির্বাচিত হন।

সম্মেলনের এক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা নির্দেশ দিলেও তা প্রায় আড়াই মাসেও হয়নি। কমিটি গঠন বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ সোমবার বলেন, দ্রুততম সময়ে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে দুই মহানগর নেতাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।দলের দুর্দিনে যারা কাজ করেছেন, পরীক্ষিত, সৎ ও যোগ্য তারাই কমিটিতে স্থান পাবেন। পুরনোদের মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে কোনো অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ নেই তারা অগ্রাধিকার পাবেন। নতুন-পুরনো সমন্বয়েই মহানগর কমিটি হবে।

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ সাবেক দু’জন শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রায় একই ধরনের তথ্য দিয়ে যুগান্তরকে বলেন, নানা চাপে এখনও পূর্ণাঙ্গ কমিটির কাজ শুরুই করতে পারেননি দায়িত্বশীল নেতারা। দুই মহানগরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পৃথকভাবে কমিটির তালিকা করছেন। সেখানে নিজ নিজ বলয়ের নেতাদের স্থান দেয়া হয়েছে।আছে ‘কেন্দ্রীয় নেতাদের নানা নির্দেশ’। বিদায়ী কমিটির বিতর্কিতদের নানা সুপারিশ। পুরনোদের জন্য প্রভাবশালী নেতাদের চাপও আছে মহানগর শীর্ষ নেতাদের ওপর। ফলে নতুনদের পদ পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই ক্ষীণ। কমিটি গঠনে বিলম্বে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন পদপ্রত্যাশী নেতারা।

ছাত্রলীগের সাবেক বেশ কয়েকজন নেতা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানান, কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা না পেয়ে ঢাকা মহানগর কমিটিতে পদ পাওয়ার প্রত্যাশা করছিলাম। কিন্তু যারা দায়িত্বে আছেন তাদের কর্মকাণ্ডে মনে হয় না, কমিটিতে জায়গা পাব।এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি সোমবার যুগান্তরকে বলেন, আমরা পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন নিয়ে কাজ করছি। এখনও চূড়ান্ত কিছু হয়নি। সবাইকে রাখার চেষ্টা করছি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কমিটি জমা দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

জানতে চাইলে দক্ষিণ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর যুগান্তরকে বলেন, আমরা পদপ্রত্যাশী নেতাদের বায়োডাটা সংগ্রহ করছি। পুরনোদের অভিজ্ঞতা দীর্ঘদিনের। তাদের রেখেই নতুনদের স্থান দিতে চাই। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ পদে দায়িত্বে থাকা অনেকেই বাদ পড়েছেন।দীর্ঘদিন থেকে ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা কোথাও স্থান পাননি। মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক কয়েকজন শীর্ষ নেতা আছেন কমিটির বাইরে। এসব বঞ্চিত নেতা ও বিগত কমিটির নেতাদের সমন্বয়ে একটি সুন্দর কমিটি উপহার দিতে কাজ করছি। দ্রুততম সময়ে তা করতে পারব বলেও জানান তিনি।আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪ ফেব্রুয়ারি ইতালি যাওয়ার আগে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিসহ সহযোগী ও অঙ্গসংগঠনের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি করতে মৌখিক নির্দেশনা দেন।দলীয় সভাপতির এই সাংগঠনিক নির্দেশনা সেদিনই দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের জানিয়ে দেন। সেদিন ২১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে নির্দেশনা দেয়া হয়।

Top