ভারতের এনআরসি ইস্যুটিকে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে বিবেচনা করে বাংলাদেশ।
আলোকিত বার্তা:স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ভারতের জাতীয় জনসংখ্যা নিবন্ধন(এনআরসি)ইস্যুটিকে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে বিবেচনা করে বাংলাদেশ।বাংলাদেশের ওপর এর কোনো অযাচিত প্রভাব পড়বে না সে নিশ্চয়তা ভারত সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে বাংলাদেশ সরকারকে দেয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশ এ ব্যাপারে ভারতের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।রোববার (২৬ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে অসীম কুমার উকিলের (নেত্রকোনা-৩) লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান অনস্বীকার্য। ভারতের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি ভারত সরকার তাদের নিজস্ব পলিসি অনুযায়ী বিভিন্ন প্রদেশে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ও জাতীয় জনসংখ্যা নিবন্ধন (এনআরসি) পরিকল্পনা নিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনকে (সিএএ) ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মনে করে। একইভাবে বিলটিকে ঘিরে ওঠা বিতর্ককে ভারতের ঘরোয়া রাজনীতির অংশ হিসেবে দেখা যেতে পারে। আমরা বিশ্বাস করি, ভারত সরকার তার রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেয়ার সময় প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের সঙ্গে তাদের দৃঢ় পারস্পরিক বিশ্বাস, সৌহার্দ্য ও বোঝাপড়ার প্রতি পূর্ণ মনোযোগ দেবে। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশ এ ব্যাপারে ভারতের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
তিনি আরও বলেন, বেশ কিছু বছর ধরে বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অভাবনীয় সাফল্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবদ্ধি, বিশেষ করে উত্তরোত্তর জিডিপি বৃদ্ধি অর্জন করে যাচ্ছে। তাই বাংলাদেশি নাগরিকদের ভারতে অবৈধ অভিবাসনের কোনো অর্থনৈতিক অনুপ্রেরণা বোধের যৌক্তিকতা আছে বলে প্রতীয়মান নয়।তিনি বলেন, সীমান্তে অবৈধ গমনাগমন, চোরাচালান প্রতিরোধসহ সীমান্তবর্তী অপরাধ দমনে সীমান্তরক্ষী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সর্বদাই কড়া নিরাপত্তা গ্রহণ করে থাকে। তবে বিজিবি সীমান্ত সংক্রান্ত অপরাধসহ যে কোনো ধরনের বেআইনি কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে সদা সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে। উদ্বেগজনক কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে সীমান্ত ও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সীমান্ত দিয়ে যাতে ভারত থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ না ঘটে সে ব্যাপারে বাহিনীর অধীনস্থ রিজিওন, সেক্টর, ব্যাটালিয়ন সীমান্ত এলাকায় টহল জোরদারসহ গোয়েন্দা ও সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখা হচ্ছে। একই সঙ্গে সীমান্তের আট কিলোমিটারের বাইরেও প্রয়োজনে টাস্কফোসের মাধ্যমে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
তিনি আরও বলেন, চোরাচালান প্রতিরোধে সীমান্তে ৬৯৭টি বিওপি নির্মাণ করা হয়েছে। বিওপিসমূহের মধ্যবর্তী স্থানে নজরদারি বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ পর্যন্ত ১২৮টি বর্ডার সেন্ট্রি পোস্ট (বিএসপি) তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়া সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধে স্থানীয় জনগণের মধ্যে প্রয়োজনীয় জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিজিবি নিয়মিত প্রেষণা দেয়া হচ্ছে। ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের নিকটবর্তী এলাকায় কোস্ট গার্ড বাহিনীর স্টেশন, আউট পোস্ট দ্বারা নিয়মিত টহল দেয়া হচ্ছে।