রাজাকারের তালিকায় নাম রয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
আলোকিত বার্তা:রাজাকারের বিতর্কিত তালিকা প্রকাশ নিয়ে জাতীয় সংসদে তোপের মুখে পড়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।বৃহস্পতিবার সরকারি দলের সংসদ সদস্যদের ক্ষোভের জবাব দিতে গিয়ে তিনি বলেন,রাজাকারের তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তারা সক্রিয় ছিলেন কি না,তা শুধু যাচাই করার ব্যাপার।তবে তাদের নাম যে ওই তালিকায় আছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।এ ব্যাপারে দালিলিক প্রমাণও আছে।তবে বিষয়টি আরও যাচাই-বাছাইয়ের প্রয়োজন রয়েছে।তিনি বলেন,দুঃখ প্রকাশ করে তালিকাটি এরই মধ্যে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ভবিষ্যতে সবার সহযোগিতা নিয়ে যাচাই-বাছাই করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে আবার তালিকা প্রকাশ করা হবে।
স্পিকার ড.শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হয়।এতে প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন,রাজাকারের তালিকা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে তৈরি করা হয়নি।মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে ১০ হাজার ৭৮৫ জন রাজাকার,আলবদর,আলশামস এবং স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা পাঠানো হয়।প্রাপ্ত তালিকা হুবহু মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় তালিকাটি তৈরি করেনি।তবে কারও গাফিলতি থাকলে তার বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নিতে পারে।এমন জবাবে ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রশ্নকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন রতন সম্পূরক প্রশ্নে বলেন,মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেই-কথাটি সরাসরি বলা যায় না।কারণ ওই মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এটা প্রকাশ হয়েছে।এ তালিকা সঠিক আছে কি না,তা দেখার দায়িত্ব ছিল মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের।জবাবে মন্ত্রী বলেন,ভুলত্রুটি থাকার কারণে দুঃখ প্রকাশ করে সেই তালিকা প্রত্যাহার করেছি।ভবিষ্যতে যাতে আর ভুলত্রুটির পুনরাবৃত্তি না হয়,সেজন্য সবার সহযোগিতা নিয়ে এবং যাচাই-বাছাই করে ভবিষ্যতে তালিকা প্রকাশ করব।
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ও সরকারি দলের সদস্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, মন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করি।
তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ই তো তালিকাটি প্রকাশ করতে পারত। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী কেন সেটা প্রকাশ করলেন? তিনি (মন্ত্রী) সঠিক তালিকা প্রকাশ করতে পারেননি, পারবেনও না।জবাবে মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করতে গিয়ে আমার যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তা হল, তখন মেম্বর-চেয়ারম্যানদের কাছে তালিকা চাওয়া হয়েছিল? তারা সামনে যাদের পেয়েছে এবং অনেকের নাম তাদের অজ্ঞাতেই হয়তো বা দিয়েছে। এজন্যই এ বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। ভবিষ্যতে যাচাই-বাছাই করেই তালিকা প্রকাশ করব।পেঁয়াজের দাম আরও কমবে : পেঁয়াজের দাম আরও কমবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। সদস্য শিরিন আখতারের প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী জানান, ভারত এরই মধ্যে পেঁয়াজ রফতানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। সরকারও পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য প্রণোদনাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশে পেঁয়াজের মৌসুম শুরু হয়েছে। এর দাম কমে আসবে বলে আমি আশাবাদী।এম আবদুল লতিফের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, সারা দেশে পেঁয়াজ নিয়ে নানা রকম ক্ষোভ ও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছিল। এখন স্থিতিশীল পর্যায়ে এসেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আগামী দিনে পেঁয়াজের কোনো সংকট সৃষ্টি হবে না। আমদানির প্রয়োজন হলে আগেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। কৃষক যাতে পেঁয়াজের উৎপাদনের ন্যায্য দাম পায় এবং স্থানীয় পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিমানে অনিয়ম ঠেকাতে ১২ পদক্ষেপ : বাংলাদেশ বিমানের অনিয়ম ঠেকাতে ১২ পদক্ষেপের কথা সংসদে তুলে ধরেছেন বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বিমানের অনিয়ম ঠেকাতে সরকার কিছুু পদক্ষেপ নিয়েছে। এগুলো হল- টিকিট কেনার ক্ষেত্রে সিট ব্লকিং পদ্ধতি বাতিল, নিয়োগ পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা আনা, আরএফআইডি মেশিনের মাধ্যমে হাজিরা, ই-টিকিটিং পদ্ধতি, লাগেজ হ্যান্ডলিং ব্যবস্থার উন্নয়ন, পেনশন সহজীকরণ, হজ অ্যাপ চালু, ওয়েবসাইট এবং অনলাইনে টিকিট বুকিং, মোবাইল অ্যাপস চালু, ই-জিপি টেন্ডারিং পদ্ধতি চালু, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট তালিকাভুক্তিকরণ।বিমান পরিবহনমন্ত্রী মাহবুব আলী আরও বলেন, বিমান ইতোমধ্যে সিট বুকিং পদ্ধতি বাতিল করেছে। ফলে টিকিট বিক্রি থেকে রাজস্ব আয় বেড়েছে। নিয়োগ পদ্ধতিতেও ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আগ্রহী প্রার্থীদের আবেদন অনলাইনে গ্রহণ ও টেলিটকের সহযোগিতায় আবেদন বাছাই করা হচ্ছে।এছাড়া শারীরিক ফিটনেস, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা এবং চূড়ান্ত নির্বাচনের মাধ্যমে কার্যক্রম শেষ করা হচ্ছে।