স্বাধীনতার অর্ধশত বছর হতে চলেছে।কিন্তু জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের এখনও সাংবিধানিক স্বীকৃতি মিলেনি। - Alokitobarta
আজ : শুক্রবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্বাধীনতার অর্ধশত বছর হতে চলেছে।কিন্তু জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের এখনও সাংবিধানিক স্বীকৃতি মিলেনি।


আলোকিত বার্তা:স্বাধীনতার অর্ধশত বছর হতে চলেছে।কিন্তু জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের এখনও সাংবিধানিক স্বীকৃতি মিলেনি।এ ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেয়া দল আওয়ামী লীগ পর পর তিনবার ক্ষমতায় থাকলেও তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি।উল্টো ভুয়াদের তালিকাভুক্ত করে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের বঞ্চিত করা হয়েছে। এ অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি জরুরি।রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা’ আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।এ সময়ে তারা সরকারের কাছে ১৫ দফা দাবি তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মো. রুস্তুম আলী মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক কামাল আহমেদ এবং উপদেষ্টা ড. শেখ বাতেন প্রমুখ।
সারা দেশ থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি তাদের সন্তান, প্রজন্ম এবং চেতনায় বিশ্বাসী হাজার জনতা ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে সমাবেশে অংশ নেন। ব্যানারে স্লোগান ছিল- ‘ভুয়া প্রশ্নে আপস নেই, ভুয়ামুক্ত তালিকা চাই’।

বক্তারা বলেন, ৩০ লাখ শহীদের রক্ত ও দুই লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে এ দেশের মানচিত্র ও পতাকা অর্জন হয়েছে।আর যুদ্ধের আগে স্বপ্ন ছিল জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শভিত্তিক শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে। যেখানে সব নাগরিকের জন্য আইনের শাসন এবং মৌলিক মানবাধিকার, রাজনৈতিক ও সামাজিক সাম্য প্রতিষ্ঠিত হবে।কিন্তু ৪৮ বছর পরও ন্যায় ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এমনকি যারা জীবন দিয়ে যুদ্ধ করেছে, সেই মুক্তিযোদ্ধারাও তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত।

মো. রুস্তুম আলী মোল্লা বলেন, ১৯৭২ সালে ৭ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞা নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু সেই গেজেট অনুসরণ না করে ৪৮ বছরে যেসব সরকার ক্ষমতায় এসেছে, তারা নিজেদের মতো করে সংজ্ঞা পরিবর্তন করে হাজার হাজার অমুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাভুক্ত করেছে।এতে যুদ্ধের ইতিহাস কলংকিত হওয়ার পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধার মান-মর্যাদা ক্ষুন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধারা রাষ্ট্রীয়, সামাজিক এমনকি পারিবারিকভাবেও বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করেছিলাম মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেয়া দল, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে পর পর তারা তিনবার ক্ষমতায় এসেও নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি।এ সময়ে তিনি কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো– মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি, তালিকা থেকে ভুয়াদের বাতিল ও তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ, সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বহাল এবং মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন মানোন্নয়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া।কামাল আহমেদ বলেন, যেসব মুক্তিযোদ্ধা জীবিত আছেন- তারা সবাই জীবনসায়াহ্নে উপনীত। নানারকম রোগব্যাধিতে তারা আক্রান্ত। অনেকে স্বাভাবিক চলা ফেরা করতে পারে না।

তিনি বলেন, অত্যন্ত দুঃখের বিষয়- ৪৮ বছরেও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি মেলেনি। উল্টো ভুয়াদের তালিকাভুক্ত অব্যাহত রয়েছে।
তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরির জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। সঠিক তালিকার জন্য একটি জাতীয় কমিশন গঠনেরও আহ্বান জানান তিনি।এক্ষে ত্রে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। বক্তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেছেন, ৫ বছরেও তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি করতে পারেননি। এটা তার ব্যর্থতা।কিন্তু কেন তিনি পারেননি, সে জন্য তাকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত। এ সময় তারা বলেন, ভুয়াদের চিহ্নিত করে বিচার নিশ্চিত করা এবং এদের তালিকাভুক্তিতে যারা সহায়তা করতে তাদেরও বিচারের দাবি জানান তারা।

Top