সারা দেশে ১৫-১৬ হাজার সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশ কিছু ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যবহার অনুপযোগী। - Alokitobarta
আজ : শুক্রবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সারা দেশে ১৫-১৬ হাজার সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশ কিছু ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যবহার অনুপযোগী।


আলোকিত বার্তা:সারা দেশের ঝুঁকিপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের (হাসপাতাল) তালিকা তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। এ মাসের মধ্যেই মাঠপর্যায় থেকে তালিকা করে কেন্দ্রে পাঠানোর কথা। পরবর্তী ৩ মাসের মধ্যে মাঠপর্যায় থেকে পাঠানো তালিকার ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করে করণীয় নির্ধারণে মন্ত্রীর কাছে পেশ করার কথা।সারা দেশে ১৫-১৬ হাজার সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশ কিছু ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যবহার অনুপযোগী। ঝুঁকিপূর্ণ এসব ভবনের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে রোগী আহতের ঘটনাও ঘটেছে এর আগে। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে এসব স্বাস্থ্য কেন্দ্র বা হাসপাতাল ভবনের দ্রুত সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ করা সম্ভব না হলে সেখানকার স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হতে পারে।গত ১২ জুন নোয়াখালী সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের ছাদের পলেস্তার খসে ৮ শিশুসহ ১০ জন আহত হন। এর আগে ২০১৮ সালের ১২ জুলাই এই একই হাসপাতালের পুরনো ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি ওয়ার্ডের ছাদ খসে পড়ে দু’জন নার্স আহত হয়েছিলেন। অথচ ২০১৫ সালে নোয়াখালীর গণপূর্ত বিভাগ এই হাসপাতালের ৩টি ভবনকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। এর পরও ওই ভবনে চলেছে চিকিৎসা কার্যক্রম। এখনও ওই ভবনেই পরিচালিত হচ্ছে শিশু ওয়ার্ডসহ আরও কয়েকটি ওয়ার্ড।

মূলত ২০০৮ সাল থেকে এই শিশু ওয়ার্ডের ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে পড়া শুরু হয়।ঝুঁকির মধ্যেই চিকিৎসকরা চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন এবং রোগীরাও সেবা নিচ্ছেন। এ দুর্ঘটনার পরই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তালিকা তৈরির কাজে হাত দেয়।সূত্র জানায়,ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকার তৈরির সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের সম্প্রসারণ (উপরের দিকে) ও মেরামতযোগ্য ভবনের তালিকা তৈরির কাজটিও করা হচ্ছে। এ ছাড়া ভবন নির্মাণের পর ব্যবহার না হওয়ার কারণ অনুসন্ধান,প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় জনবল,সরঞ্জামাদি নিরূপণের নির্দেশও দেয়া হয়েছে।

কথা হয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের হসপিটাল সার্ভিস ম্যানেজমেন্টের কর্মকর্তা ডা.সত্যকাম চক্রবর্তীর সঙ্গে।তিনি আলোকিত বার্তা বলেন,নোয়াখালীর দুর্ঘটনার পর দেশের সব সিভিল সার্জন এবং হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চিকিৎসাসেবা দেয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। নির্দিষ্ট বিভাগ বা ওয়ার্ডগুলো অন্যত্র সরিয়ে নিতে,সম্ভব না হলে ভাড়া করা ভবনে কাজ চালাতে বলা হয়েছে।মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়,সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমন নির্দেশনা দিয়েছেন। এই তালিকা প্রণয়নের মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বড় একটি প্রকল্প গ্রহণের কথা রয়েছে। এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে স্বাস্থ্য খাত আরও এগিয়ে যাবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।জানা গেছে,গত ৩০ জুন ঝুঁকিপূর্ণ সরকারি হাসপাতালের তালিকা তৈরির জন্য স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব(নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি) মোহাম্মদ শাহাদত হোসেনকে আহ্বায়ক এবং সহকারী সচিব মো.রফিকুল ইসলামকে(সিবিএমই)সদস্য সচিব করে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটির সদস্যরা হলেন-স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপ-সচিব মো.আবু রায়হান মিঞা,গণপূর্ত অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী(পিপিসি)মো. মাহফুজুল আলম এবং স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কাইয়ুম খান। কমিটিকে ৩ মাসের মধ্যে তালিকাসহ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে।জানতে চাইলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শাহাদত হোসেন আলোকিত বার্তা বলেন,আংশিক তালিকা পেয়েছি।পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রণয়ন এবং তার ভিত্তিতে প্রতিবেদন না হলে কিছুই বলা যাবে না।

গণপূর্ত অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহফুজুল আলম আলোকিত বার্তাবলেন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের আওতাধীন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান বা হাসপাতালের মধ্যে ১০০ শয্যা বা তার উপরের অবকাঠামো ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসমূহের নির্মাণ, মেরামত ও অকেজো ঘোষণার বিষয়টি গণপূর্ত বিভাগের এখতিয়ারভুক্ত। আমরা এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে কাজগুলো করার চেষ্টা করছি। মাঠপর্যায়ের সব তথ্য আসার পরেই আমাদের কাজ শুরু হবে।স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কাইয়ুম খান বলেছেন, ৫০ শয্যা, ২০ শয্যা, ১০ শয্যা এবং ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর নির্মাণ, মেরামত ও অকেজো ঘোষণার কাজ করছে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর।

Top