আগুনের ঘটনা ঘটেনি বগুড়ারধানক্ষেতে
আলোকিত বার্তা:বগুড়ার ধানক্ষেতে আগুন লাগার কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্র এখনো থামেনি। সুযোগ পেলেই তারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে। বর্তমানে তারা ধান নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। সম্প্রতি বগুড়ার ধানক্ষেতে কোনো আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেনি। ভারতের পাঞ্জাবের একটি গমক্ষেতের আগুন দেয়ার ঘটনাকে ফেসবুকে পোস্ট করে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে।বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপ-কমিটির আয়োজনে ‘নারীর অগ্রযাত্রায় সমৃদ্ধ বাংলাদেশ : শেখ হাসিনার অবদান’ শীর্ষক সেমিনার এসব কথা বলেন মাহবুব-উল আলম হানিফ।
হানিফ বলেন, আমাদের সকল সংগঠন, শুধু মহিলা আওয়ামী লীগ না,আমাদের যুবলীগ বলেন, ছাত্রলীগ বলেন, আওয়ামী লীগ বলেন আমরা সবাই স্লোগান দিচ্ছি ‘জয়বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘শেখ হাসিনা এগিয়ে চলো, আমরা আছি তোমার সাথে’। কিন্তু যে আদর্শটা ধারণ করে আমাদের রাজনীতির চলার পথ, সেটা কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না। এমনকি বাংলাদেশের ইতিহাস বা বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কেও আমরা জানি না। যে বাংলাদেশ মানেই হচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এক ও অভিন্ন একটা অংশ, অবিচ্ছেদ্য-এই বাংলাদেশের সৃষ্টির সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস জড়িত।
বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের ইতিহাস জানার তাগিদ দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশকে চিন্তাও করা যায় না। কেন এই বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু এক ও অভিন্ন শব্দ-এই ইতিহাস জানা সবার প্রয়োজন। কিন্তু আমার ধারণা আমাদের বেশির ভাগই এটা জানে না। আজকে বাংলাদেশের ইতিহাস জানার প্রয়োজন আছে। জাতির পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে যারা ক্ষমতা দখল করে ছিল সেই ৭১-এর পরাজিত শক্তির দোসর, তারা ক্ষমতা দখল করে শুধু বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার বন্ধ করেনি, শুধু এই দেশে পাকিস্তানের ভাবধারা প্রতিষ্ঠিত করেনি, তারা সবচেয়ে যেই ক্ষতিটা করেছিল, সেটা হলো তারা সমাজের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে দিয়েছে।’
তিনি বলেন, আজকে দেখুন বাংলাদেশর দুটি ধারা। একটি হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা নেতৃত্বে। আরেকটি ধারার সৃষ্টি হয়েছে যেটি স্বাধীনতাবিরোধী, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরোধী। মুক্তিযুদ্ধের আর্দশ বিরোধী ধারা সৃষ্টি হয়েছে বিএনপি নেত্রী বেগম জিয়ার নেতৃত্বে। এটার সৃষ্টি করেছিলেন জিয়াউর রহমান। তার নেতৃত্ব শুরু হয়েছিল, সেটা উত্তারাধিকার সূত্রে বেগম খালেদা জিয়া ধারণ করে আসছেন।জাতির এই বিভাজন দূর করা প্রয়োজন বলে মনে করেন হানিফ। তিনি বলেন, ‘জাতিকে বিভাজন করার কারণে দেশ বারবার হোঁচট খেয়েছে, বারবার উন্নয়নে বাধাগ্রস্ত হয়ে পিছিয়ে পড়েছে। দেশের উন্নয়ন করতে হলে এই বিভক্তি দূর করতে হবে। বিভক্ত জাতি নিয়ে কোনো দেশ বেশি দূর এগোতে পারে না।
হানিফ বলেন,আজকে আমাদের দেশে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে আমাদের জাতির মধ্যে নীতি, নৈতিকতা ও সততার সংকট। প্রত্যেকটা সেক্টরে আজকে মানুষের যে অসততা দেখি, অনৈতিকতা দেখি, এ রকম অসততা নিয়ে একটা দেশ খুব বেশি দূর এগোতে পারে না।দেশের ৮০ ভাগ মানুষ শারীরিকভাবে অসুস্থ দাবি করে আওয়ামী লীগ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এই অসুস্থ মানুষের মধ্যে শতকরা ২৭ ভাগ কিডনি রোগী। বাকি ২৫ ভাগ মানুষ ক্যানসারের রোগী। এর একটাই কারণ হচ্ছে আমাদের নীতিহীনতা, অসততা ও অনৈতিক মানসিকতা। আমরা খাদ্যে ভেজাল দিচ্ছি। মাছে ফরমালিন দিচ্ছি। এসব করে একে অপরকে ঠকাচ্ছি।দেশের মানুষের দুর্নীতি নিয়ে হতাশার সুরে মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘দেখুন আজকের নৈতিকতা কোন পর্যায়ে চলে গেছে। বিভিন্ন সময় কথা আসে, দুর্নীতির কথা আসে। বালিশ কিনতে যেয়ে দুর্নীতির কথা আসে। অবাক হতে হয়, যখন দেখি একটি সরকারি দফতরের ক্রয় নিয়ে দুর্নীতির কথা আসে। ইলেকট্রনিকস জিনিস যার দাম ৭শ’ থেকে দেড় হাজার টাকা তা বেশি দাম দিয়ে ক্রয় করা হয়েছে। আবার তা উত্তোলনের জন্য দুই হাজার, তিন হাজার টাকা চার্জ কাটা হয়। নৈতিকতার কোন পর্যায়ে গেলে মানুষ এমন কাজ করতে পারে!’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে নারীরা অনেক দূর এগিয়ে গেছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের দেশে প্রধানমন্ত্রী নারী, বিরোধীদলীয় নেতা নারী, স্পিকার নারী, উপনেতা নারী। এখন শুধু বাকি আছে রাষ্ট্রপতি পদটা। সেটাও দাবি করছেন আজকের নারীরা।তিনি বলেন,গ্রামগঞ্জে নারীরা আজ নানা চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে সফল হচ্ছেন। স্থানীয় সরকারের নেতৃত্বে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিচ্ছেন এবং নির্বাচনে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে তারা নেতৃত্বে আসছেন। এসব শেখ হাসিনার অবদান।আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপ-কমিটির সভাপতি ড. সুলতানা সফির সভাপতিত্বে সেমিনার আরও বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মাতিয়া চৌধুরী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, সাবেক মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক প্রফেসর ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।