নতুন সড়ক আইন সংশোধন না করার প্রতিবাদে মঙ্গলবার দেশের কয়েক জেলায় ঘোষণা ছাড়াই গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।
আলোকিত বার্তা:নতুন সড়ক আইন সংশোধন না করার প্রতিবাদে মঙ্গলবার দেশের কয়েক জেলায় ঘোষণা ছাড়াই গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।হঠাৎ গাড়ি বন্ধে চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রী ও ব্যবসায়ীরা।বিশেষ করে রোগী,বৃদ্ধ ও নারী-শিশুরা বেশি ভোগান্তির শিকার হয়েছেন।পণ্য পরিবহনে অশেষ দুর্ভোগ পোহাতে হয় ব্যবসায়ীদের।এ সুযোগে অটোরিকশাসহ ছোট গাড়িগুলোতে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়েছে।আইনটি কার্যকরের দ্বিতীয় দিন খোদ রাজধানীতেও গাড়ি চলাচল ছিল কম।দাবি আদায়ে আজ মঙ্গলবার সারা দেশে পণ্যবাহী গাড়ি ধর্মঘট কর্মসূচির ডাক দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ পণ্য পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
নতুন সড়ক আইন সংশোধনের দাবি আদায়ে সারা দেশে এমন অস্থির পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।ঘোষণা না দিয়ে হঠাৎ গাড়ি বন্ধ করে দেয়ার ছক সাজানো হচ্ছে।এতেও কাজ না হলে ঘোষণা দিয়েই তারা নামতে পারেন বলে জানা গেছে। যাত্রীদের জিম্মি করে এবারও দাবি আদায়ের সেই পুরনো কৌশলই তারা বেছে নিয়েছেন। তবে এসব ঘটনার দায় নিতে রাজি নন পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতারা।প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, খুলনা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, নড়াইল, ঝিনাইদহ, সিরাজগঞ্জ, সাতক্ষীরা, শেরপুর, রাজশাহী ও সিলেট জেলায় অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট চলছে।
এসব জেলার অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার রুটে বাস চলাচল বন্ধ।দুর্ভোগের সুযোগ নিয়ে অন্য পরিবহনগুলো যাত্রীদের কাছ থেকে কয়েকগুণ ভাড়া আদায় করছে।হঠাৎ শ্রমিকদের এই কাণ্ডে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ।তারা বলছেন,সাধারণ মানুষ ও সরকারকে জিম্মি করে শ্রমিকরা দাবি আদায় করতে চাইছেন। ধর্মঘটকারী শ্রমিকরা জানান, নতুন আইনে সাজার ভয়ে তারা গাড়ি চালাচ্ছেন না।এ আইন সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট প্রত্যাহার হবে না।
এদিকে সোমবার প্রথমবারের মতো নতুন সড়ক আইনে মামলা করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ৮টি মোবাইল কোর্ট।
রাজধানীর কাকলী,মানিক মিয়া এভিনিউ,উত্তরা-দিয়াবাড়ী, মিরপুর,রায়েরবাগ,সায়েদাবাদ,ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় মোবাইল কোর্ট ৮৮টি মামলা ও ১ লাখ ২১ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা করেছে।২টি গাড়ি ডাম্পিংয়ে পাঠিয়েছে।তবে ঢাকা মহানগর পুলিশ নতুন আইনে কোনো মামলা করেনি।পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন,আইন প্রয়োগে তারা এখনও প্রস্তুত নন।তবে তারা সচেতনতামূলক কাজ করে যাচ্ছেন।এদিকে জানাযায়,সারাদেশে পণ্য পরিবহন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। বুধবার সকাল ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পণ্য পরিবহন বন্ধ রাখতে সারাদেশের ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিকদের আহ্বান জানিয়েছে ঐক্য পরিষদ।
মঙ্গলবার সকালে তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ কাভার্ড ভ্যান-ট্রাক পণ্য পরিবহন মালিক অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়।এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন পরিষদের আহ্বায়ক রুস্তম আলী খান। এসময় উপস্থিত ছিলেন সদস্য সচিব তাজুল ইসলামসহ মালিক শ্রমিক নেতারা।নতুন সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ স্থগিত করে সংশোধনের দাবিসহ ৯ দফা দাবিতে এ কর্মসূচি ঘোষণা করলেন কাভার্ড ভ্যান ও ট্রাকের মালিক-শ্রমিকরা।একই দাবিতে মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো দেশের বিভিন্ন জেলায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখেছেন পরিবহন শ্রমিকরা।এতে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে বলে জানিয়েছেন।