দিনে দিনে বরিশালে মাদকের ভয়াবহতা বেড়েই চলছে।
পাখি আক্তার:দিনে দিনে বরিশালে মাদকের ভয়াবহতা বেড়েই চলছে।প্রশাসনের তৎপরতায়ও থামানো যাচ্ছে না মাদকের অবাধ বিস্তার। যদিও বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ ও র্যাবের পক্ষ থেকে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করা হয়েছে। এরপরেও থামছে না মাদকের ভয়াবহতা। নগরীর এয়ারপোর্ট থানা এলাকায় হাত বাড়ালেই মিলছে মাদক। যার বাস্তব প্রমাণ এয়ারপোর্ট থানা এলাকার রামপট্টি, দোয়ারিকা, মানিককাঠি ও মহিষাদি গ্রামের প্রতিটি রাস্তার পাশে তাকালেই দেখা মেলে ফেন্সিডিলের খালি বোতল।
ট্রাকে করেই এ এলাকায় ফেন্সিডিল আনা হয় বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,এয়ারপোর্ট থানা এলাকার এ চারটি গ্রামের মাদকের নিয়ন্ত্রণকারী দুলাল ওরফে দুলাল মেম্বার। তার বিরুদ্ধে রয়েছে ৪টি মাদক মামলা। তিনি এ এলাকায় ফেন্সিডিলের ডিলার হিসেবে পরিচিত। পাশাপাশি নয়ন মেম্বার নামের এক ব্যক্তিও এ এলাকায় ফেন্সিডিল সরবরাহ করেন। নয়ন মেম্বার দোয়ারিকার পুরাতন ফেরিঘাট ও মানিককাঠি এলাকায় অবাধেই ফেন্সিডিল বিক্রয় করেন বলে কথিত রয়েছে। সূত্রটি আরও জানায়, দুলাল মেম্বার প্রভাবশালী এক ব্যক্তির ছত্রছায়ায় থেকে এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। ওই এলাকার অনেকের অভিমত, দুলাল মেম্বার ট্রাকে করে ফেন্সিডিল এনে তা বিক্রি করেন। ট্রাক ভর্তি ওই মাদক অনেকটা প্রকাশ্যেই আনেন বলে জানান অনেকে। সন্ধ্যার পরপরই নগরী থেকে মোটরসাইকেল অথবা প্রাইভেটকারযোগে মাদকসেবীরা ভিড় করে এয়ারপোর্ট এলাকায়। আগে থেকেই তারা দুলাল মেম্বারের লোকজনের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে থাকে।
ফলে মাদকসেবীরা দুলাল মেম্বারের লোকজনের নির্দেশ মোতাবেক নির্দিষ্ট একটি জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকে। কিছুক্ষণ পরেই ওই স্থানে ফেন্সিডিল নিয়ে পৌঁছে যায় তার লোক। এক হাতে টাকা, অপর হাতে ফেন্সিডিল। টাকা পেলেই ফেন্সিডিল দিয়ে চলে যায় দুলাল মেম্বারের লোক। পরবর্তীতে মাদকসেবীরা ওই স্থানে দাঁড়িয়েই ফেন্সিডিল সেবন করে খালি বোতলটি ফেলে গন্তব্যে ফিরে যায়। ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে এভাবেই চলতে থাকে দুলাল মেম্বার ও নয়ন মেম্বারের বছরের পর বছর ফেন্সিডিল ব্যবসার কার্যক্রম। অপরদিকে ওই এলাকার পুরান ফেরিঘাট এলাকায় ইয়াবার স্বর্গরাজ্য তৈরি করে রেখেছেন শাহীন রানা ও হেলাল। তারা ওই এলাকায় অবাধে বিক্রয় করেন ইয়াবা। অবশ্য এ এলাকার উল্লেখিত মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তারা মাসোয়ারা নেন বলেও কথিত রয়েছে। পাশাপাশি কথিত কিছু সাংবাদিকও তাদের কাছ থেকে মাসোয়ারা নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। যদিও এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদ বিন আলম বলেছেন, রামপট্টি, দোয়ারিকা, মানিককাঠি ও মহিষাদি এলাকায় মাদকের ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। যত বড় প্রভাবশালী ব্যক্তিই মাদকের সাথে জড়িত থাকবে, সকলকেই আইনের আওতায় আনা হবে।
এসকল বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো.শাহাবুদ্দিন খান বলেন,গোটা মেট্রোপলিটন এলাকাজুড়েই মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। তবে এয়ারপোর্ট থানা এলাকায় মাদকের বিস্তাররোধে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।পাশাপাশি প্রভাবশালী কোনো ব্যক্তি মাদকের সাথে জড়িত থাকলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।