সংসদ নির্বাচনে ঋণখেলাপির প্রার্থিতা ঠেকাতে প্রস্তুত ব্যাংক
মোহাম্মাদ মহাব্বাতুল্লাহ মাহাদ:আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঋণখেলাপিদের প্রার্থী হওয়া ঠেকাতে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বাণিজ্যিক ব্যাংক, বিশেষায়িত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচনে প্রার্থী হতে ২৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের কমপক্ষে আগের দিন ঋণখেলাপিমুক্ত হতে হবে। এক্ষেত্রে ২৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন হওয়ায় ওইদিন যারা মনোনয়ন জমা দেবেন, তাদেরকে কমপক্ষে আগের দিন খেলাপিমুক্ত হতে হবে।এসব তথ্যের আলোকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নামে ঋণখেলাপির তথ্য যাচাই করা হয়েছে। প্রার্থী হিসাবে আরও যেসব নাম আসছে, তাদের বিষয়ে একই ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোকে দেওয়া হয়েছে।ইতোমধ্যে তারা সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ও ঋণখেলাপি কি না,তা শনাক্ত করার মতো পূর্ণাঙ্গ তথ্য সংগ্রহ করেছে।নির্বাচনি তফসিল অনুযায়ী ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
সূত্র জানায়, প্রতিটি ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিতে নিজস্ব ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো (সিআইবি) রয়েছে। এতে তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের ঋণ ও খেলাপির তথ্য রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রয়েছে মূল সিআইবি। এতে দেশের ব্যাংক এবং আর্থিক খাতের সব ঋণ ও খেলাপি ঋণের তথ্য রয়েছে। ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পনিগুলো ইতোমধ্যে তাদের সিআইবি হালনাগাদ করেছে। তাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও সিআইবি হালনাগাদ করেছে। এখন যারা খেলাপি ঋণ নবায়ন করছেন, তাদের তথ্যও প্রতিদিন হালনাগাদ করা হচ্ছে।
এদিকে বিএনপি যেসব প্রার্থী ঘোষণা করেছে, তাদের তথ্য সংগ্রহ করে খেলাপি ঋণের তথ্য যাচাই করা হয়েছে। আরও যারা প্রার্থী হতে পারেন বা গণমাধ্যমে যাদের নাম আলোচনায় আসছে, তাদের ঋণের তথ্যও হালনাগাদ করা হয়েছে। ২৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র জমার পর ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যেই ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোকে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিস থেকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া প্রার্থীদের নাম ও তালিকা সংগ্রহ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ওই তালিকা প্রতিটি ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিকে যাচাই করে দেখতে হবে কোনো ঋণ খেলাপি আছেন কি না। যদি ঋণখেলাপি প্রার্থী থাকেন তবে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে আপত্তি উপস্থাপন করতে হবে। ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বাছাই করা হবে। বাছাইয়ের সময়ে কোনো ঋণখেলাপি পার পেয়ে গেলে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ব্যাংক আপিল করতে পারবে। ৫ থেকে ৯ জানুয়ারি আপিল করা যাবে। আপিল নিষ্পত্তি করার জন্য শুনানি হবে ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি। প্রতিটি শুনানির সময় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের উপস্থিত থেকে সংশ্লিষ্ট প্রার্থী যে ঋণখেলাপি, সে তথ্য তুলে ধরতে হবে। নির্বাচন কমিশনে শুনানির সময় সংশ্লিষ্ট বাণিজ্যিক ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানির কর্মকর্তাদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারাও উপস্থিত থাকবেন।
নির্বাচনি অগ্রাধিকার : মনোনয়নপত্র বাছাই ও আপিল শুনানির সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী তথ্যের জোগানের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় আইনি ব্যাখ্যা দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ বাণিজ্যিক ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোর সংশ্লিষ্ট বিভাগ খোলা থাকবে।