সাইপ্রাস প্রবাসীর স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু - Alokitobarta
আজ : মঙ্গলবার, ১৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাইপ্রাস প্রবাসীর স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু


শাকিল আহম্মেদঃসাইপ্রাস প্রবাসীর স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু।
আবুল কাসেমের স্ত্রী মিম(২২)রহস্যজনকভাবে মারা গেছেন।সোমবার সকালে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার পূর্ব নারায়নপুরের আক্কাস আলী সড়কের একটি ভাড়া বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মিমের গলায় উড়না পেঁচানো অবস্থায় লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়।

নিহত মিমের বাবার নাম বাবুল হাওলাদার। তিনি ৬নং পূর্ব নারায়নপুরের বাসিন্দা। দীর্ঘদিন ধরে মিম স্বামীর অনুপস্থিতিতে বাবার বাড়ির পাশেই আলিম নামে এক ব্যক্তির ভাড়া বাসায় বসবাস করছিলেন।

নিহতের পিতা বাবুল হাওলাদার অভিযোগ করেন, তার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি জানান, মিমের শাশুড়ি হাফিজা এবং ননদ মরজিনা দীর্ঘদিন ধরেই তাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিলেন। ঘটনার আগের রাতে ননদ মরজিনা ফোন করে পাওনা এক লাখ ৭০ হাজার টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করে।

মিমের চাচা আবুল হাওলাদার বলেন, “মিম দুদিন আগে আমার কাছে এক লাখ টাকা ধার চেয়েছিলো ।আর বললো, ওরা টাকা না দিলে ওকে শান্তিতে থাকতে দিবে না।আমি মিমকে বলি আমার বাসায় টাকা আছে আমি বলে দিবো তুই গিয়া আনিস। এরপরেই সকালে ফোন পাই, মিম আর বেঁচে নেই।”

মিমের মা রাশিদা বেগম জানান, “রাতে সাতটার দিকে নাতিকে (মিমের ছেলে) খাওয়াই। পরে মিম আমার সঙ্গে ননদ ও শাশুরিকে আপ্যায়ন করার জন্য কাপ-প্রিজ, লুডুস, শেমাই, বিস্কুট কিনে আনে ও ওর চাচার বাড়ি থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা আনে। রাত ১০টার দিকে বাসার সামনে দিয়ে যাই, তখনো কোনো অস্বাভাবিকতা দেখি নাই। সকালে শুনি মেয়ে আমার আর নেই।আমার মেয়েকে ওর ননদ ও শাশুরি মেরে ফেলেছে। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই।

এদিকে,প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন,ঘটনার সময় ননদ মরজিনার মেয়ে রিয়া ও হাফিজাকে বোরকা পরা অবস্থায় বাড়ি থেকে বের হতে দেখেছে। মিমের মৃত্যুর পর তার মোবাইল ফোনে থাকা ননদের গালিগালাজের রেকর্ডগুলো মুছে ফেলা হয়েছে বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ।

প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে উজিরপুর, গুঠিয়ার কমলাপুর গ্রামের মৃত মোতালেব হোসেনের ছেলে আবুল কাসেম (২৮) সাথে মিমের প্রেম শুরু হয়। পরে পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হয় তাদের। তবে বিয়ের পর থেকেই শাশুড়ির সঙ্গে প্রায়ই কলহ হতো মিমের। তাই তিনি শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বাবার বাড়ির পাশে ভাড়া বাসায় থাকতেন।মরজিনার বিষয় জানতে চাইলে এলাকাবাসী জানায়, মরজিনা প্রায় ৪/৫ টা বিয়ে করেছেন,দীর্ঘ ১৭ বছর ইন্ডিয়াতে ছিলো।ছয়-সাত মাস হলো দেশে এসেছে,সে কারো সাথে ভালো ব্যবহার করতেন না। এমনকি সে তার মাকেও মাঝে মাঝে মারধর করতেন।

এ ঘটনায় উজিরপুর থানায় মিমের পিতা বাবুল হাওলাদার বাদী হয়ে একটি অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মৃত্যুর সঠিক কারণ জানার জন্য তদন্ত শুরু হয়েছে এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

স্থানীয়দের অনেকেই এ মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, এটি কোনো আত্মহত্যা নয়, বরং একটি ঠাণ্ডা মাথার পরিকল্পিত হত্যা। মিমের প্রতি ঘটে যাওয়া এই নির্মম ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

Top