সর্বোচ্চ দরদাতা ইজারা পাননি,সাহেবের হাট হাটে খাস আদায় করছেন ‘পছন্দের’ ব্যক্তিরা
জামাল হোসাইন,অতিথি প্রতিবেদক : বরিশাল সদর উপজেলার সাহেবের হাট হার্টের জন্য সরকারনির্ধারিত দর ছিল ২১ লাখ ৬৯ হাজার ১শত ৯২ টাকা। সর্বোচ্চ দর দিয়ে নিতে চায় সাবেক ইজারাদার । যা নির্ধারিত দরের চেয়ে ৬ লক্ষ টাকার বেশি। সঙ্গে আরও ২৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর ও আয়কর (ভ্যাট ও আইটি) রাজস্ব খাতে যুক্ত হতো। তবে সর্বোচ্চ দরদাতা সাবেক ইজারাদারকে হাটের ইজারা দেয়নি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এমনই অভিযোগ করে সাবেক ইজারাদার সবুজ, অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, একটি জাতীয় দুটি স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার পর কেউ কোন টেন্ডার দাখিল করেনি। কোন ইজারাদার না পাওয়ায় আমরা খাস কালেকশন করাচ্ছি । ইজারার বদলে সাহেবের হাট হাটে এখন খাস আদায় করাচ্ছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। ইজারা দিলে সব মিলিয়ে এই হাট থেকে সরকারের বছরে ৬ লাখ লাখ টাকার বেশি আয় হতো। সেখানে খাস আদায়ে গিয়ে আশা স্বরুপ ওই পরিমাণ টাকা আয় করতে পারেনি সংস্থাটি। এক মাসে সামান্য কিছু টাকা আদায় করছে। সাহেবের হাট হাটের একাধিক ব্যবসায়ীরা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন,সাহেবের হাট হাটের দরপত্রপ্রক্রিয়ায় প্রশাসকের পছন্দের ব্যক্তি সর্বোচ্চ দরদাতা হতে পারেননি। অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ রাজনীতির সাথে জড়িত চেয়ারম্যান জাহিদ,বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত জব্বার, জাকির হোসেন নান্নু, মসজিদ কমিটির আমিন, কামরুজ্জামান মাসুদ দরপত্র আহ্বানে সাবেক ইজারাদারকে দরপত্র ক্রয় না করার জন্য চাপ দেওয়া হয় এমনটাই অভিযোগ করেন সাবেক ইজারাদার সবুজ । তাই প্রশাসক ইজারার পরিবর্তে খাস আদায়ের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। বাস্তবে খাস আদায়ের নামে ওই হাট থেকে হাসিল আদায় করছেন প্রশাসকের পছন্দের বিএনপি ও আওয়ামী লীগের লোকজন। খাস আদায়ের বিষয়ে তশিলদারের দাবি,আমার একার পক্ষে কালেকশন করা সম্ভব না তাই কিছু স্বেচ্ছাসেবী দিয়ে কালেকশন করার জন্য দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের ইজারা-সম্পর্কিত নীতিমালায় দরপত্রের বিজ্ঞপ্তিটি সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিটের (সিপিটিইউ—বর্তমান নাম বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি বা বিপিপিএ) ওয়েবসাইটে প্রকাশের বিধান থাকলেও তা করা হয়নি। সাহেবের হাট হাট নিয়ে সম্পূর্ণ আইনবিরোধী। কোনো বিশেষ মহলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য এই পথ অনুসরণ করা হয়েছে কি না, এটা খতিয়ে দেখা দরকার এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।ইজারা দিতে কমিটির সুপারিশ
দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভার কার্যবিবরণী অনুযায়ী, হাট ইজারা দিতে দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সম্পত্তি বিভাগ। একটি জাতীয় দুইটি স্থানীয় পত্রিকায় ওই বিজ্ঞপ্তি ছাপা হয়।সাহেবেরহাট হাটের গত তিন বছরের ইজারামূল্যের গড় দামের সঙ্গে ৬ শতাংশ যুক্ত করার পর সরকারনির্ধারিত মূল্য ছিল ২১ লাখ ৬৯ হাজার ১শত ৯২ টাকা।হাট ইজারা নিতে কাঙ্ক্ষিত ইজারাদার সর্বোচ্চ দর দেওয়ার দাবি জানায়। এর সঙ্গে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর ও ১০ শতাংশ আয়কর মিলিয়ে সরকারের রাজস্ব খাতে জমা হতো কিন্তু এখন আর তা হয় না।।দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির প্রধান ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। সরেজমিনে ১৫ মে শুক্রবার সাহেবের হাট হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাসিল ঘরে টাকা আদায়ের কাজ করছেন জাহাঙ্গীর নামের এক ব্যক্তিসহ তিনজন। তসিলদারকে গিয়ে পাওয়া যায়নি। জাহাঙ্গীর নিজেকে ক্যাশিয়ার বলে পরিচয় দিয়ে বলেন, তিনিসহ যাঁরা হাটে কাজ করছেন, তাঁদের বসিয়েছেন তশিলদার। হাটের সার্বিক তত্ত্বাবধান করছেন তশিলদার । নাসির মোল্লা বিএনপির রাজনীতি করেন।তসিলদার রুহুল আমিন বলেন, কিছু লোক তাঁদের সহযোগিতার জন্য নেওয়া হয়েছে। তাঁরা খাস কালেকশনে সহযোগিতা করছেন।যদিও বাইরের কোনো লোককে স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়টি জানেন কিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রশ্ন করলে তিনি বলেন আমি জানি । সর্বোচ্চ দরদাতা সাবেক ইজারাদার বলেন, ‘পয়লা বৈশাখের দিন হাট মেয়াদ শেষ হয়। ইজারা দেবে না, এমন কোনো সিদ্ধান্তও জানায়নি। ব্যবসায়ীরা বলেন, কোরবানির সময় প্রচুর আয় হয়। এখানে নয়ছয় ও লুটপাটের সুযোগ রয়েছে। দ্বিতীয়ত, কোরবানির শেষে সরকারি দরের চেয়ে বেশি দামে ইজারা নিতে আগ্রহী দরদাতা পাওয়া যাবে না।