মাদক-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে স্বার্থান্বেসী মহলে রোষানলে চৌকিদার মোঃ হাফিজুল হক শহীদ
মল্লিক মো. জামাল,বরগুনা প্রতিনিধিঃ মাদক, সন্ত্রাস, চুরি-ছিনতাই বন্ধের অপরাধে এক গ্রাম পুলিশস্থানীয় বখাটেদের চক্ষুশূল হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। হয়রানীর নানামুখীঅপতৎপরাতার পাশাপাশি ‘গ্রাম পুলিশ কোটিপতি’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমেনাজেহাল হয়েছেন সর্বত্র। গ্রাম পুলিশ হয়েও বখাটেদের ভয়ে সহযোগিতা চাচ্ছেন সচেতন মহলসহগণমাধ্যম কর্মীদের।বরগুনা সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়নের শিয়ালিয়া গ্রামের মৃত্যু ছয়জদ্দিন চৌকিদারের পুত্র মোঃহাফিজুল হক শহীদ দীর্ঘদিন যাবৎ একই ইউনিয়নের গর্জনবুনিয়া মহল্লায় গ্রাম পুলিশের দায়িত্বপালন করে আসছেন। পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত জমিজমায় পারিবারিকভাবেই সচ্ছল জীবনযাপন করছেন শহীদচৌকিদার। শহীদ চৌকিদারের সচ্ছল জীবন যাপন স্থানীয় কয়েকটি পরিবার কখনোই ভালো চোখেদেখেনি। তার বিরুদ্ধে একর পর এক ষড়যন্ত্র ছিল দীর্ঘদিন ধরেই। তাছাড়া এলাকায় মাদক সেবক, মাদকব্যবসায়ীদের নানাবিধ অপকর্মে বাধাসৃষ্টি, সন্ত্রাসীদের মাথাচারা দেয়ায় পুলিশে অবহিতকরণসহ নিজমহল্লাকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখতে যথাযথ দায়িত্ব পালনের কারণে এলাকার কতিপয় চিহ্নিতমাদকসেবী বখাটের নিকট চক্ষুশূল হয়েছেন শহীদ চৌকিদার।মাদকসেবী চক্র শহীদ চৌকিদারের বিরুদ্ধে নানানমুখী অপতৎপরতার পাশাপাশি বিভিন্ন গণমাধ্যমে‘চৌকিদার থেকে কোটিপতি! হাফিজুল হক শহীদের কোটিপতি হওয়ার চোধ ধাঁধানো গল্প ওইগ্রামের মানুষের মুখে মুখে’ শিরোনামে সংবাদ পরিবেশন করিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলেদিয়েছে শহীদ চৌবিদারসহ তার পরিবারকে। প্রকাশিত ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সামান্য বেতনেচাকরী করে শহীদ উচ্চাবিলাসী জীবনযাপন স্বপ্নকেও হার মানায়। তার রয়েছে বাড়ি, গাড়ি, মাছের ঘের,কানি কানি জমিসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক প্লট। শহীদ অষ্টম শ্রেণির জাল সার্টিফিকেট দিয়ে
ঘুষের বিনিময়ে গ্রাম পুলিশের চাকরী নিয়েছেন। শহীদ চৌকিদার পঙ্গুভাতা আত্মসাৎ করেন।ইউনিয়নের উপকারভোগীদের কমিশন ছাড়া সরকারি সহায়তা মেলে না শহীদ চৌকিদারের জন্য। ভোটারআইডি কার্ড, জন্ম-মৃত্যু কার্ড, ওয়ারিশ সার্টিফিকেট উত্তোলনের ক্ষেত্রেও শহীদ চৌকিদারকেটাকা দিতে হয়। শহীদ চৌকিদারকে টাকা না দিলে কাগজেকলমে গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়া যায় না।
নিরীহ মানুষের জমিজমা দখলেরও অভিযোগ রয়েছে শহীদ চৌকিদারের বিরুদ্ধে। রাতে মহল্লা পাহারা দেয়ারনামে অসহায় মানুষের মাছ চুরি তার পেশা। শহীদ চৌকিদার গ্রামের সহজসরল নারীদের সাথে নানাভাবেপ্রলোভন দেখিয়ে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। তার অনৈতিক কর্মকান্ডের কারণে অনেকের সোনারসংসার ভেঙ্গেছে। শহীদ চৌকিদার বহু নারীকে মারধর করেছে। বাবুগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির অফিসারদের ভুলবুঝিয়ে সাধারণ মানুষদের হয়রানী করছে। কেউ শহীদ চৌকিদারের বিরুদ্ধে কথা বললে পড়তে হয় রোষানলে।
এলাকাবাসী শহীদ চৌকিদারের কালো থাবা থেকে বাঁচতে চায়।’নলটোনা ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ শহীদের বিরুদ্ধে প্রকাশিত রিপোর্টের সত্যতা যাচাইয়ের জন্যবরিবার সকালে সরেজমিনে গেলে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। স্থানীয় মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে পুলিশ ফঁিড়তেরিপোর্ট করায় রোষানলে পড়তে হয় শহীদ চৌকিদারের। রয়েছে জমিজমা সংক্রান্ত জটিলতাও। অন্য যেসকলগল্প পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে তার ছেটেফোটারও সত্যতা মেলেনি। পৈত্রিকসূত্রে যে জমিজমা শহীদচৌকিদার পেয়েছেন তাতে স্বাভাবিকভাবে ভালো জীবনযাপন করা যায়। বাড়ি গাড়ির অভিযোগ আনাহয়েছে, সেখানে কোন গাড়ি তো শহীদের নেই। নেই একটা বাইসাইকেলও। বাড়ি বলতে শহীদচৌকিদারের রয়েছে টিনশেড একটি বাড়ি। মাছের ঘের বলতে রয়েছে পারিবাপিরক একটি ছোট্টপুকুর। সেখানে নিজেদের খাওয়ার জন্য স্বল্প পরিমানে মাছ রয়েছে।
এব্যাপারে শিয়ালিয়া গ্রামের ষাটোর্ধ আব্দুল হাই বলেন, শহীদ চৌকিদার একজন নিরীহ মানুষ। এলাকারকিছু লোকের স্বার্থে আঘাত লাগায় এখন খুব খারাপ হয়েছে।অবসরপ্রাপ্ত পেশকার আনোয়ার মৃধা বলেন, এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা ঠিক রাখতে গিয়েই শহীদের বিরুদ্ধে যতঅপপ্রচার। সে বাপের পাওয়া সম্পত্তি দিয়ে বেশ ভালো আছে। তার বিরুদ্ধে আনীতঅভিযোগগুলো হাস্যকরও অবান্তর।নানান অভিযোগে অভিযুক্ত নলটোনা ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ হাফিজুল হক শহীদের সাথে কথা বললেতিনি বলেন, আমি এলাকায় মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি।আমার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে একটা মহল, যার কোন ভিত্তি নেই। একটি নিউজের আমি খুব
বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছি।এব্যাপারে নলটোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হুমায়ুন কবির বলেন, শহীদ চৌকিদারের বিরুদ্ধেআনীত অভিযোগগুলো হাস্যকর। একজন চৌকিদারের বিরুদ্ধে কোন প্রকার অভিযোগ উত্থাপিত হলেপ্রথমেই পরিষদের জানার কথা। অভিযোগ সত্য হলে ইউনিয়ন পরিষদই কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।সেখানে স্বার্থান্বেষী একটি চক্র শহীদ চৌকিদারকে অহেতুক হয়রানী করছে।