করোনা মহামারীর কারণে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে - Alokitobarta
আজ : শনিবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

করোনা মহামারীর কারণে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে


মোহাম্মাদ.আবুবকর সিদ্দীক:করোনা মহামারীর কারণে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।আর্থিক লেনদেন হ্রাস পাওয়ায় কমে গেছে সরকারের রাজস্ব আয়।এর ফলে আর্থিক ব্যবস্থায় যে ঝুঁকির আশঙ্কা বেড়েছে, তা মোকাবেলা করা সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুচিন্তিত পদক্ষেপের মাধ্যমে এ পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। কেননা রাজস্ব আয় কমে গেলেও সরকারের ব্যয় থেমে নেই।করোনা, বন্যা ইত্যাদি পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারের ব্যয় বরং স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেড়েছে। ফলে সরকারের ব্যাংক ঋণ বেড়েছে লাগামহীনভাবে। তবে সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকেই ঋণ নিচ্ছে বেশি।এ ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
অন্যদিকে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে বেশি ঋণ নিলে সমস্যায় পড়বে বেসরকারি খাত। সেটি সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। কারণ জিডিপিতে জোগানের বড় অংশই আসে বেসরকারি খাত থেকে। এ পরিস্থিতিতে সরকারের উচিত আয় ও ব্যয়ের মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে চলা।সেক্ষেত্রে সরকারকে ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে অপচয় কমানোর ওপর জোর দিতে হবে। অন্যদিকে দৃষ্টি দিতে হবে রাজস্ব আয় বাড়ানোর ওপর। এটি ঠিক, করোনা পরিস্থিতির কারণে এ কাজটি সহজ হবে না। তারপরও সরকারকে এদিকে দৃষ্টি দিতে হবে।

দেশের আর্থিক ব্যবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকির কারণ হয়ে রয়েছে মাত্রাতিরিক্ত খেলাপি ঋণ। উদ্বেগের বিষয় হল করোনাকালেও এ প্রবণতা কমেনি। বরং করোনার কারণে বিশেষ ছাড়ের সুযোগ নিয়ে আবারও খেলাপি হয়েছেন ঋণখেলাপিরা।উল্লেখ্য, জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোনো নতুন ঋণ খেলাপি করা যাবে না- এমন নির্দেশনা থাকার পরও এপ্রিল থেকে জুন এই তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩ হাজার কোটি টাকা।বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সরকার থেকে ঋণখেলাপিদের বিভিন্ন সময় ছাড় দেয়ার কারণে খেলাপি ঋণ না কমে আরও বাড়ছে। দেশে ব্যাংকিং খাতে দীর্ঘদিন ধরে নানা সমস্যবিরাজ করছে।এর মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল উচ্চ খেলাপি ঋণ। মাত্রাতিরিক্ত খেলাপি ঋণ ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বস্তুত খেলাপি ঋণ শুধু ব্যাংকিং খাতে নয়,দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেই ঝুঁকি তৈরি করছে। মাত্রাতিরিক্ত খেলাপির প্রভাব পড়ছে ঋণ ব্যবস্থাপনায়।এ কারণে এগোতে পারছেন না ভালো উদ্যোক্তারা। ফলে বাড়ছে না বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান। কাজেই খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। খেলাপি ঋণের মতো আর্থিক খাতের অপসংস্কৃতি থেকে বের হতে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আরও কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।করোনার কারণে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য তথা সামগ্রিক অর্থনীতির ওপর যে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে, তা থেকে উত্তরণে আর্থিক ব্যবস্থার ঝুঁকির কারণগুলো দূর করতে হবে দক্ষতার সঙ্গে।বিশেষ করে বেসরকারি খাত যাতে দ্রুত করোনার ক্ষত কাটিয়ে উঠতে পারে সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। সেক্ষেত্রে এ খাতে ঋণপ্রাপ্তির পথে সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে।

Top