ইস্তিগফার পাপ মোচন ও আত্মশুদ্ধির মাধ্যম - Alokitobarta
আজ : বুধবার, ৩১শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদঃ
বরিশালে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের হাজার হাজার টাকা গচ্চা নির্বাচনি সমীকরণে ওলটপালট রাজনীতি ঘন কুয়াশার কারণে সারা দেশে সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা গাজায় ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের ৭০০র বেশি স্বজনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল ঢাকা-১১ আসনে নাহিদকে শুভ কামনা জানিয়ে সরে গেলেন শিবিরের সাবেক সভাপতি হাসনাতের আসনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা জামায়াত প্রার্থীর ভোটকেন্দ্র মেরামত,সিসি ক্যামেরা স্থাপনে ইসির নির্দেশ অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদেই শহীদ ওসমান হাদির হত্যার বিচার সম্পন্ন করা হবে সাইবার নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে সংখ্যালঘু হত্যাকাণ্ড ও সহিংসতার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ

ইস্তিগফার পাপ মোচন ও আত্মশুদ্ধির মাধ্যম


আলোকিত বার্তা :ইস্তিগফার তথা ‘ক্ষমা চাওয়া’ শব্দটি এসেছে আরবি ‘গাফারা’ শব্দমূল থেকে, যার অর্থ হলো ঢেকে দেওয়া বা গোপন রাখা। অর্থাৎ যখন আল্লাহ কোনো বান্দার পাপ ঢেকে দেন বা প্রকাশ করেন না, তখনই তিনি তাকে ক্ষমা করেন। পরিভাষায় ইস্তিগফার হলো— এমন একটি আবেদন, যেখানে বান্দা নিজের দ্বারা সংঘটিত পাপ ও সীমা লঙ্ঘনের জন্য আল্লাহর কাছে দয়া ও ক্ষমা প্রার্থনা করে। মুসলমানদের মধ্যে এমন কেউ নেই, যার আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনার প্রয়োজন নেই— তার ঈমান যতই দৃঢ় হোক বা তার ধার্মিকতা যতই উচ্চমানের হোক না কেন।এমনকি আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.)-ও প্রতিদিন বহুবার আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতেন। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুল (সা.) বলেছেন : ‘আল্লাহর কসম! আমি প্রতিদিন সত্তরবারেরও বেশি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই এবং তাঁর কাছে তাওবা করি।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৩০৭)

আল্লাহ তাআলা সুরা নুহে বলেন, “অতঃপর আমি বললাম, ‘তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো; নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের জন্য আকাশ থেকে প্রাচুর্যে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি বৃদ্ধি করবেন, তোমাদের জন্য বাগান সৃষ্টি করবেন এবং প্রবহমান নদী প্রবাহিত করবেন।” (সুরা : নুহ, আয়াত : ১০-১২)

অতএব, ইস্তিগফার শুধু পাপ মোচনের মাধ্যম নয়, বরং এটি বরকত, রিজিক, সন্তান-সন্ততি ও জীবনের প্রশান্তি লাভেরও এক অনন্য উপায়।

যখন কোনো মুসলমান পাপে লিপ্ত হয়, তারপর আন্তরিকভাবে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, তখন আল্লাহ তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সেই পাপ মুছে দেন, যতক্ষণ না তার আমলনামা সম্পূর্ণ পরিষ্কার হয়ে যায়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যে কেউ কোনো মন্দ কাজ করে বা নিজের ওপর অন্যায় করে, কিন্তু পরে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, সে দেখবে আল্লাহ ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ১১০)আল্লাহ তাআলা ক্ষমা প্রার্থনাকারী বান্দাদের ভালোবাসেন, তাদের তাওবায় আনন্দিত হন এবং তাদের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

এমনকি তিনি ফেরেশতাদের কাছেও এই ক্ষমা প্রার্থনাকারী বান্দাদের নিয়ে গর্ব প্রকাশ করেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারীদের ভালোবাসেন এবং ভালোবাসেন যারা নিজেদের পবিত্র রাখে।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২২২)

ক্ষমা প্রার্থনা করা শুধু একটি ইবাদত নয়, বরং এটি আল্লাহর শাস্তি ও কবরের আজাব থেকে মুক্তির এক নিরাপদ আশ্রয়। আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.)-কে উদ্দেশ করে তাঁর উম্মতের জন্য সুসংবাদ দিয়ে বলেছেন, ‘আর আল্লাহ তাদের শাস্তি দেবেন না, যতক্ষণ তুমি (হে নবী) তাদের মধ্যে উপস্থিত আছ এবং যতক্ষণ তারা ক্ষমা প্রার্থনা করে, ততক্ষণও আল্লাহ তাদের শাস্তি দেবেন না।’ (সুরা : আনফাল, আয়াত : ৩৩)

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিয়মিতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করে, আল্লাহ তাকে প্রতিটি দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেন, প্রতিটি সংকট থেকে বের হওয়ার পথ দান করেন এবং এমন জায়গা থেকে রিজিক দান করেন, যেখানে সে কখনো আশা করে না।’ (আবু দাউদ, ইবনু মাজাহ) অতএব, ইস্তিগফার একদিকে যেমন আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে, তেমনি জীবনের জটিলতা ও মানসিক ভার দূর করে দেয়।

Top