পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও ভারতের ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষার আহ্বান
প্রতিবেদক,আলোকিত বার্তা :কখনো বাঙালি ও অ-বাঙালির মধ্যে দাঙ্গা, কখনো বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলোর আধিপত্য বিস্তারের লড়াই, কখনো আবার আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী ও সাধারণ জনগণের ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনা ঘটছে। সবচেয়ে দুঃখজনক হলো- ভারতীয় সহযোগিতায় চাকমা জাতি পরিচালিত ইউপিডিএফ ও জেএসএস নামক সংগঠনসমূহ পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশের মূল ভূখ- থেকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। তারা সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি, লোভ ও প্রলোভন দেখিয়ে ভারত থেকে অস্ত্র প্রশিক্ষণ প্রহণে উৎসাহিত করছে বলে বক্তারা দাবি করেন।পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ও ভারতের ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন সিএইচটি সম্প্রীতি জোটের নেতারা। গতকাল রোববার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান জোটের নেতারা।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জোটের প্রধান সমন্বয়ক ইঞ্জিনিয়ার থোয়াই চিং মং শাক বলেন, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান জেলা বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। অথচ দীর্ঘদিন ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামকে অশান্ত রাখার জন্য দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে। ইঞ্জিনিয়ার থোয়াই চিং মং শাক বলেন, প্রতিবছর এসব সংগঠন কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি করে ব্যবসায়ী, ঠিকাদার, এমনকি সাধারণ কৃষক পর্যন্ত জিম্মি করছে। সেই অর্থ দিয়ে ভারত থেকে অস্ত্র আনা হয়। আবার অনেক নেতা পালিয়ে ভারতে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন এবং সেখান থেকেই ‘জুম্মল্যান্ড’ প্রতিষ্ঠার নীলনকশা আঁকছেন।
প্রতিনিয়ত পাহাড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, নির্যাতন, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছে এসব সংগঠন। ইউটিউব, ফেসবুক ও অন্যান্য মাধ্যমে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে সেনাবাহিনী ও বাঙালিদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে চেষ্টা করছে। মূল লক্ষ্য হলো- বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করা এবং সার্বভৌমত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করা।সিএইচটি সম্প্রীতি জোটের মুখ্য সমন্বয়ক পাইশিখই মারমা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করেন বাংলাদেশ আমাদের সবার। পাহাড়-সমতলের প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। সংবাদ সম্মেলনে সিএইচটি সম্প্রীতি জোট পাহাড়ে স্বস্তি ফেরাতে কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। প্রস্তাবনাগুলো হলো- জাতীয় ঐক্য গড়ে বাঙালি ও অ-বাঙালি জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি রুখে দিয়ে সম্প্রীতির বন্ধন দৃঢ় করতে হবে, ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে বিদেশি অর্থায়ন ও প্রভাবিত সংগঠনগুলোর কার্যক্রম কঠোরভাবে দমন করতে হবে।
রাষ্ট্রীয় নজরদারি বৃদ্ধি করে সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি শক্তিশালী করতে হবে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও উন্নয়ন, স্থায়ী শান্তির জন্য শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ বাড়াতে হবে, সেনা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি- পার্বত্য এলাকায় স্থায়ী সেনা ক্যাম্প বৃদ্ধি ও পুলিশ বাহিনীর দক্ষতা বাড়াতে হবে, সংস্কার কমিশনের ভূমিকা হিসাবে আদিবাসী, উপজাতি, জুম্ম, সেটলার বাঙালি ইত্যাদি বিভাজনমূলক শব্দ বাতিল করে জাতীয় পরিচয়ে ঐক্যবদ্ধ করা জরুরি।
ইঞ্জিনিয়ার থোয়াই চিং মং শাক বলেন, ভারতপন্থী ইউপিডিএফ ও জেএসএস কর্তৃক পরিচালিত সব ধরনের সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, হত্যা, গুম ও বিদেশি ষড়যন্ত্র অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। পাহাড়ে শান্তি ও উন্নয়ন প্রতিষ্ঠায় সরকার ও দেশপ্রেমিক জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পাইশিখই মারমা, রাকিব হোসাইন নওশাদ, মো. আজাদ, আব্দুল্লাহ আল চাউদ প্রমুখ।