পিরোজপুরে একই পরিবারের চার সদস্যকে কুপিয়ে জখম
নেছারাবাদ (পিরোজপুর), পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার সারেংঙ্গল গ্রামে একই পরিবারের চার সদস্যকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় স্বনামে পরিচিত আঃ। রব তালুকদারের নেতৃত্বে তার সাঙ্গোপাঙ্গদের বিরুদ্ধে। আহতদের অভিযোগ, ঘটনাটি ঘটে যখন তারা বাড়ির পাশে সুপারি কাটা–সংক্রান্ত কাজ করছিলেন।
ঘটনায় গুরুতর জখম হওয়া কবির তালুকদার জানিয়েছেন, “আমি ও আমার ছোট ছেলে সুপারি পেড়ে যাচ্ছিলাম, মেয়েটি সুপারি কুরাইতে ছিল। তখন রব তালুকদারের ছেলে সোহেল তালুকদার এসে আমার মেয়ের শরীরে হাত তুললো। আমার মেয়ে ফাতেমা চিৎকার করলে আমি ছুটে গেলে সোহেল, তার ছেলে সানি ও স্বাধীন আগুনের মতো ছুটে এসে আমাকে রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়েছে। পরে আমার স্ত্রী ও ছেলেকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে।”
আহত কবির বলেন, “এরা আগেও আমাদের উপর হামলা করেছে। আমরা গরীব, তাই আমাদের দেখার কেউ নেই — তারা একদিন অনায়াসে আমাদের মেরে ফেলবে। থানায় গেলে কোনো মামলা নেয়া হয়নি; এক কর্মকর্তা আমাদের বলেছেন, ‘প্রথমে চিকিৎসা নাও, সুস্থ হলে দেখা যাবে।’”
কিশোরী ফাতেমা তালুকদার ঘটনার বর্ণনায় বলেন, “সোহেল প্রথমে আমাকে থাপ্পর দিয়েছে; আমি চিৎকার করলে আম্মু এলে তারা মাকে ধরপাকড় করে গলার চেন ছিনিয়ে নিয়েছে। আমার কানের দুলও নিয়ে গেছে। আমার আব্বুকে চাপাটি দিয়ে কুপিয়েছে। স্বাধীন আমার ভাইয়ের পিঠে ধারালো অস্র দিয়ে কোপ দিয়েছে। এর আগেও সানি কলেজে যাওয়ার সময় আমাকে নানাভাবে ভূতপূর্বভাবে বিরক্ত করত, গায়ে পানি ছিটাতো, অশোভন আচরণ করত।”
আহত পরিবারকে স্থানীয়রা তাদের নেছারাবাদ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছে। পরিবারের অভিযোগ অনুযায়ী, থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রসঙ্গে এখনো কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
জঘন্য ঘটনার বিষয়ে জানতে আঃ রব তালুকদারের বাড়িতে গেলে ওই বাড়িতে কাউকে পাওয়া যায়নি। পরে মোবাইল ফোনে কথা বললে আঃ রব তালুকদার জানিয়েছেন, তিনি ওই সময়ে বাড়ির বাইরে আছেন এবং পরে কথা বলবেন।
অভিযোগে নাম উল্লেখ করা হয়েছে: আঃ রব তালুকদারের ছেলে সোহেল তালুকদার, ও তার সাঙ্গোপাঙ্গ সানি ও স্বাধীন। স্থানীয়রা বলছেন, বিষয়টি রাজনৈতিক ছায়ায় চলছে — ওই পক্ষ ‘আওয়ামী লীগ আমল’ হিসেবে পরিচিত ছিল, বর্তমানে তারা ‘বিএনপি’ বলে নিজেকে পরিচয় দিচ্ছে — এবং এর ফলে তাদের পরিবার এলাকায় দূর্বল হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আহত কবির।
পুলিশের প্রতিক্রিয়া পাওয়া না গেলেও স্থানীয় থানায় আহতদের দাবি অনুসারে তারা এখনও বাদী হয়ে অভিযোগ করতে পারেননি। স্থানীয় প্রশাসন ও থানার পক্ষ থেকে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে সে বিষয়ে জানতে আজ সন্ধ্যার মধ্যে কর্তৃপক্ষের মন্তব্য নেয়া হবে বলে প্রত্যাশিত। (জরুরি: সূত্র-মতদের বক্তব্য এবং হাসপাতালে থাকা তথ্য অনুসারে রিপোর্ট করা হয়েছে।)
আহতদের বর্তমান অবস্থাঃ কবির, তাঁর স্ত্রী, মেয়ে ফাতেমা ও তাঁদের এক ছেলে নেছারাবাদ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। পরিবারের দাবি জরুরি আইনি ও নিরাপত্তা সহায়তা প্রয়োজন।
স্থানীয়দের আহ্বানঃ আহত পরিবার নিরাপত্তা ও ন্যায় চান — পুলিশি তদন্ত ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেছেন তাঁরা।