ছোটভাই বাকেরগঞ্জে মাদকের ডিলার, বড়ভাই বরিশালে যুবদল নেতা! - Alokitobarta
আজ : বুধবার, ১৯শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ছোটভাই বাকেরগঞ্জে মাদকের ডিলার, বড়ভাই বরিশালে যুবদল নেতা!


নিজস্ব প্রতিবেদক:নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের চরামদ্দি ইউনিয়ন কমিটির যুগ্ম আহবায়ক আবু তাহের মাসুদ খান ওরফে মাসুদ রানা। ৫ আগস্টের পর মনোযোগ দেন মাদক ব্যবসায়। অবশেষে গত ২ জুলাই বরিশাল বন্দর থানাধীন দিনারের পোল এলাকা থেকে বিপুল পরিমান ইয়াবা সহ আটক হয়। বন্দর থানার এস আই জাহিদুল ইসলাম তাকে আটক করেন। সে ঘটনায় বন্দর থানায় মামলা নং ৭৪/২।
পুলিশ জানিয়েছে, আটককৃত আবু তাহের মাসুদ খান ওরফে মাসুদ রানার বাড়ি চরামদ্দি ইউনিয়নের কালিদাসিয়া গ্রামে। তার পিতার নাম মৃত হোসেন আলী খান। মাদক বিক্রির সময় হাতেনাতে ধরে ফেলে পুলিশ। এ সময় তার সহযোগী আরিফ পালিয়ে যায়। তাছাড়া পুলিশের কাছে অকপটে নিজের মাদক ডিলাশীপের কথা স্বীকার করে মাসুদ খান।
এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে আরো ভয়ঙ্কর তথ্য। এই মাসুদের বড়ভাই হলেন বরিশাল জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব মামুন খান। তিনি আগামী কমিটিতে জেলা যুবদলের সভাপতি পদ প্রত্যাশী। এলাকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা ছোটভাই মাসুদকে দিয়ে করান মাদক ব্যবসা। যুবদলের ক্ষমতা খাটিয়ে শেল্টার দেন মামুন। বিভিন্ন স্পটে সন্ধ্যার পরে গভীর রাত পর্যন্ত প্রকাশ্যেই গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত ইয়াবা বিক্রি করেছে মাসুদ ও তার বাহিনী। তাদেরকে এলাকাবাসী কিংবা পুলিশ কিছুই বলতে পারেনি। কেননা মাসুদের বড়ভাই জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুন খান। তার ভয়ে অনেকেই মুখ খুলতে সাহস পাননি। অবশেষে বন্দর থানা পুলিশের একটি চৌকস টিমের অভিযানে আটক হয় মাসুদ।
এলাকাবাসী বলেছেন, যুবদল নেতা মামুন তার ছোটভাইকে দ্রুতই জামিন করাবেন। কেননা মাসুদ হলো তার আয়ের বড় উৎস। বেশি দিন মাসুদকে আটকে রাখলে মামুনের অবৈধ আয়ে ভাটা পড়বে।
এদিকে যুবদলের একাধিক নেতাকর্মী বলেন, আমরা এতোদিন লোক মুখে শুনতাম জেলা যুবদল নেতা মামুন খান মাদক ব্যবসায় জড়িত। তার আপন ছোটভাই ইয়াবা বিক্রিকালে ধরা পড়ার পর সেটাই প্রমাণিত হলো। এমন একজন মাদক কারবারীকে দলে কোন পদ না দেওয়ার জন্য নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানান তারা।
এ বিষয়ে যুবদল নেতা আবু তালেব মামুন খান বলেন, আমার ভাই মাদক খায় তবে বিক্রি করেনা। আমি ভাইকে দেখতেও যাইনি এমনকি মামলার কপি ছুয়েও দেখিনি। আমার ভাই আবু তাহের মাসুদ ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত কিন্তু কোন পদ পদবীতে ছিলনা।
এ ব্যাপারে মাসুদ খানের ভাইগ্না রায়হান সাংবাদিকদের বলেন, আমার মামা একজন মাদককারবারী। সে নিষিদ্ধ ঘোষিত চরামদ্দি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ন আহবায়ক । তিনি মাদক ব্যবসা বন্ধে আবু তাহের মাসুদ খান ও তার সহযোগীদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবী জানান।
এব্যাপারে মামলার বাদী বন্দর থানার এসআই জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমি আবু তাহের মাসুদ খানকে ৪৫ পিচ ইয়াবাসহ আটক করেছি।আটকের পরে আদালতে হাজির করি। আদালত কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বন্দর থানার এসআই সাইফুল ইসলাম বলেন, আবু তাহের মাসুদ খান বর্তমানে কারাগারে আছেন। পালিয়ে যাওয়া মাসুদ খানের সহযোগী আরিফকে গ্রেপ্তারের চেস্টা চলছে। উদ্ধারকৃত ৪৫ পিচ ইয়াবা থেকে দু পিচ ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসার পরে চার্জশীট প্রদান করা হবে।
উল্লেখ্য,মাসুদ খান ওরফে মাসুদ রানা তার ভাইগ্না রায়হানের স্ত্রী আসমাকে নিয়ে ২০২৪ সালের ২০ জানুয়ারী সকালে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় লোকজন জানান, মাসুদ খান ওরফে মাসুদ রানা মাদককারবারী হওয়ায় তার প্রথম স্ত্রী মাসুদ খানকে ডিভোর্স প্রদান করে। পরে ভাইগ্না বৌয়ের সাথে পরকিয়া করে তাকে নিয়ে পালিয়ে যায়।

Top