ঐতিহাসিক জয়ের কৃতিত্ব পুরো দলের
মোহাম্মাদ নাসির উদ্দিন:২১ বছর আগে মুলতান টেস্টের স্মৃতি এখনো চোখ ভিজিয়ে দেয় হাবিবুল বাশারের। প্রথম ইনিংসে তার ৭২ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে বাংলাদেশ জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। সেদিন বিতর্কিত আম্পায়ারিংয়ে বাংলাদেশ এক উইকেটে হেরে যায়। এবার রাওয়ালপিন্ডিতে এতদিনের বয়ে বেড়ানো কষ্টের পাথর সরে গেল। দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্ট ১০ উইকেটে জিতে গোটা দেশকে আনন্দে ভাসিয়েছেন মুশফিকুর রহিম, মেহেদী হাসান মিরাজরা। হাবিবুল বাশার এবং সেই টেস্ট ম্যাচে বাংলাদেশ অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ, অভিজ্ঞ কোচ ও বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিমের বিশ্লেষণে টেস্টে প্রথম পাকিস্তান-জয়।
হাবিবুল বাশার
জয় সব সময়ই আনন্দের। পাকিস্তানের বিপক্ষে তাদের মাটিতে জয় আরও বেশি স্পেশাল। টেস্ট ম্যাচের উইকেট যেভাবে পঞ্চমদিনে হওয়ার কথা, সেরকম হয়নি। আমাদের ছেলেরা ভালো বোলিং করেছে। পাকিস্তানও বলেছে তারা যা আশা করেছিল, উইকেট তেমন ভাঙেনি। সবাই নিজেদের সুবিধামতো উইকেট বানায়। তারাও চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বোলিংটা আমাদের হয়েছে দারুণ।
২১ বছর আগে পাকিস্তানে মুলতান টেস্ট প্রায় জিতেই গিয়েছিলাম আমরা। সেবার আমাদের পক্ষে ছিল সব কিছু। কিন্তু হেরে যাই। মুলতান টেস্ট জিততে পারলে বড় পাওয়া হতো। এখন বাংলাদেশ ম্যাচ জিততে অভ্যস্ত। নিউজিল্যান্ডে আমরা টেস্ট জিতেছি। পাকিস্তানকে প্রথমবারের মতো হারানো বিশেষ কিছু। ২১ বছর আগে জয়ের কাছে গিয়ে মুলতান টেস্ট হারার পর আমাদের সবারই মন খুব খারাপ হয়েছিল। পুরো টেস্টেই ভালো অবস্থানে ছিলাম।
নাজমুল আবেদীন ফাহিম
রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে বাংলাদেশ দলকে মানসিকভাবে খুবই শক্তিশালী মনে হয়েছে। বিশেষ করে প্রথম ইনিংসে প্রতিপক্ষ বেশি রান করে ফেললে নেতিবাচক চিন্তা হয়। আমাদের পারফরম্যান্স খুবই ভালো হয়েছে। এই ঐতিহাসিক জয়ের কৃতিত্ব পুরো দল ও খেলোয়াড়দের।
মুশফিকের ১৯১ রানের ইনিংস জয়ের সম্ভাবনা জাগায়। সেই সঙ্গে এ-ও সত্য যে, জেতার জন্য ১০ উইকেটও নিতে হয়। অনেক সময় এরকম জায়গায় এসে আমরা জিততে পারিনি। হেরেও গেছি। বোলারদের কৃতিত্ব দিতে হবে। পেস বোলার, স্পিনার সবাই দারুণ অবদান রেখেছে। ফিল্ডিং ভালো হয়েছে। এই জয়ে দলীয় অবদানই মুখ্য।
খালেদ মাহমুদ
মুলতান ছিল এতদিন আমাদের জন্য হতাশা ও আক্ষেপের আরেক নাম। জিততে পারতাম ২০০৩ সালেই। আমার কাছে ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানে মুলতান টেস্ট এতদিন ছিল আক্ষেপের। ২১ বছর আগে আমরাই জিততাম। ২০০৪ সালে জিম্বাবুয়েকে হারানোর আগেই বড় দলকে টেস্টে হারাতে পারতাম সেবার। সেই আক্ষেপ ঘুচল। আর কোনো দুঃখ থাকবে না। সাদমানের ব্যাট থেকে ম্যাচজয়ী বাউন্ডারি আসার পর সব হতাশা ভুলে গেছি। এখন থেকে রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট জয়ের সুখস্মৃতি নিয়ে থাকব।