চামড়ার কম মূল্য পাওয়ায় অখুশি বরিশালের মাদরাসা ও লিল্লাহ বোডিং প্রতিষ্ঠানগুলো
মোহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম: কোরবানির পশুর চামড়ার কম মূল্য পাওয়ায় অখুশি বরিশালের মাদরাসা ও লিল্লাহ বোডিং প্রতিষ্ঠানগুলো। দরিদ্র ও এতিম তহবিলের বড় আয়ের উৎস এই চামড়া থেকে আসে। এসব চামড়া বিক্রির অর্থ দিয়ে মাদরাসার লিল্লাহ বোর্ডিং ও এতিমখানার ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ালেখার খরচ ও খাবারের ব্যবস্থা হয়ে থাকে। কিন্তু চামড়ার দাম কম হওয়ায় আর্থিক সংকট হবে বলে মনে করছেন মাদরাসার শিক্ষক ও এতিমখানা কর্তৃপক্ষ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এবার বরিশালে ছোট ও বড় গরুর চামড়া প্রকারভেদে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকায় ক্রয় করেছেন চামড়া ব্যবসায়ীরা। তবে বর্গফুট আকারে চামড়ার দর সরকার নির্ধারণ করলেও সে নিয়মে চামড়া বিকিকিনি হয়নি।তবে বড় মাদরাসাগুলো সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি না করে গতবারের চেয়ে ভালো দাম পেয়েছে। তারা ৫০০ থেকে ৬৮০ টাকা পর্যন্ত পশুর চামড়া বিক্রি করেছেন।গরুর চামড়া বিক্রয় করতে পারলেও ছাগলের চামড়া কেউ নিতে চাইছে না। এতে পশুর চামড়া নিয়ে বিপাকে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ।বরিশালের কোরবানির চামড়া সংগ্রহকারী বিভিন্ন মাদরাসা কর্তৃপক্ষ জানায়, মাদরাসা ও এতিমখানাগুলোর আয়ের বড় উৎস কোরবানির পশুর চামড়া। এসব চামড়া বিক্রির অর্থ দিয়ে মাদরাসার লিল্লাহ বোর্ডিং ও এতিমখানার ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ালেখার খরচ ও খাবারের ব্যবস্থা হয়ে থাকে।
এ ছাড়া চামড়া ব্যবসায়ীরা টাকা বাকি রেখে চামড়া ক্রয় করেছে ব্যবসায়ীরা। পশু কোরবানি হওয়ার পর চামড়ার সংগ্রহে খরচ ও দাম কম হওয়ায় এ বছর অনেক মাদরাসা প্রতিষ্ঠান চামড়া সংগ্রহ করেনি।জামিআ ইসলামিয়া মাহমুদিয়া মাদরাসার মোহতামিম হাফেজ মাওলানা ওবায়দুর রহমান বলেন, আমরা ৬১৫টি চামড়া বিক্রি করেছি ৬৫০ টাকা দরে। কিন্তু গতবারের চেয়ে ভালো দাম পেলেও বছর পাঁচেক আগে চামড়া দাম ৪-৫ গুণ বেশি ছিলো। এই আয়ের ওপর নির্ভর করে এখন আর মাদরাসার শিক্ষার্থীদের খরচ বহন করা সম্ভব হয় না।
বরিশাল কাউনিয়া ব্রাঞ্চ রোড হাফিজিয়া মাদরাসার মোহতামিম ছিদ্দিকুর রহমান বলেন ৭০ পিস গরুর চামড়া সংগ্রহ করে নগদ অর্থে বিক্রি করেছি ৩৫ হাজার টাকায়। এই আয় দিয়ে ৪০ জন শিক্ষার্থীর খাবার খরচও হয় না। আমাদের অন্য উপায়ে খরচের ব্যবস্থা করতে হয়। ব্যবসায়ী জিল্লুর রহমান মাসুম বলেন বরিশাল জেলায় ৭-৮ জন ব্যবসায়ী চামড়া সংগ্রহ করেন। মান ও আকারভেদে ৩০০ থেকে সর্বোচ্চ ৬০০ টাকায় কিনছি। যা গতবারের থেকে তুলনামূলক বেশি। চামড়া সংরক্ষণে গড়ে ৪০০ টাকার বেশি খরচ হয়। খরচ বুঝে মূল্য পরিশোধ করা হচ্ছে। হাইড অ্যান্ড স্কিন অ্যাসোসিয়েশন বরিশালের সভাপতি বাচ্চু মিয়া বলেন, চামড়া ব্যবসায়ীরা সংরক্ষণ ও পরিবহন খরচ বাড়ার কারণে এই মূল্যে চামড়া কিনছে, সিন্ডিকেটের কারণ নেই। আবার সংরক্ষণ করা চামড়ার মধ্যে এই গরমে ১৫ শতাংশ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা আছে। বরিশাল প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রমতে, এবারে বরিশাল জেলায় এক লাখের ওপর পশু কোরবানি হওয়ার কথা।