বিচারকাজে অংশ নেওয়া যাবে বিদেশ থেকেও অডিও-ভিডিওতে
মোহাম্মাদ নাসির উদ্দীন:আদালতে হাজির না হয়েও দেশ বা বিদেশের বিভিন্ন অবস্থান থেকে অংশ নেওয়া যাবে মামলার বিচারকাজে।অডিও-ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এই বিচারকাজ পরিচালিত হবে। আদালত পরিচালিত এই বিচারকাজের মধ্যে সমন্বয় করবেন একজন সমন্বয়কারী।রবিবার (২০ আগস্ট) আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার আইন, ২০২০ এর ৫ ধারার ক্ষমতাবলে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এসব ‘প্র্যাকটিস নির্দেশনা’ জারি করেছেন।অধস্তন আদালতের বিচারকদের জন্য জারি করা এই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আদালত কক্ষ থেকে কোনও স্থানে অবস্থানরত মামলার কোনও পক্ষ, সাক্ষী, অভিযুক্ত ব্যক্তি, আইনজীবী, বিশেষজ্ঞ এবং মামলার সংশ্লিষ্ট কোনও ব্যক্তির তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অডিও-ভিজুয়ালের মাধ্যমে মামলায় উপস্থিতি, সাক্ষ্যগ্রহণ ও শুনানিসহ সব বিচারিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন।দূরবর্তীপ্রান্ত’– অর্থ এমন একটি স্থান যেখানে মোকদ্দমার কোনও পক্ষ, সাক্ষী, আসামি বা আইনজীবী শারীরিভাবে উপস্থিত থেকে অডিও-ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যিমে আদালতের কার্যক্রমে উপস্থিত হবেন। দূরবর্তীপ্রান্ত বলতে দেশের বাইরে, কারাগার, হাসপাতাল, সেইফ হোম, প্রত্যায়িত প্রতিষ্ঠান, শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র, নিরাপত্তামূলক হেফাজত, সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিস, ফরেনসিক ল্যাবরেটরি ছাড়াও অন্য যে কোনও স্থানকে বোঝানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মনোনীত কোনও ব্যক্তি সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।বিদেশের ক্ষেত্রে বাংলাদেশি সংশ্লিষ্ট কনস্যুলেট/দূতাবাস/হাইকমিশনের একজন কর্মকর্তা সমন্বয়কারী হবেন।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, এই ধরনের বিচারকাজে কনফারেন্সিং এর জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যক্তি নির্ধারিত সময়ের কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে দূরবর্তী প্রান্তে প্রস্তুত থাকতে হবে। কোনও অননুমোদিত রেকর্ডিং ডিভাইস ব্যবহার করা যাবে না। অডিও-ভিডিও কনফারেন্স চলাকালীন কোনও অননুমোদিত ব্যক্তি কনফারেন্স রুমে প্রবেশ করতে পারবে না। যে ব্যক্তিকে পরীক্ষা করা হচ্ছে তাকে কোনোভাবে প্ররোচিত করা, প্রভাবিত করা, বাধ্য করা হয়নি এবং যে ব্যক্তিকে পরীক্ষা করা হচ্ছে তাকে কনফারেন্স চলাকালীন সংশিষ্ট আদালতের অনুমতি ছাড়া কোনও নথি, স্ক্রিপ্ট বা ডিভাইস দেখানো যাবে না।মামলা সংশ্লিষ্ট পক্ষ, সাক্ষী, অভিযুক্ত ব্যক্তি, আইনজীবী, বিশেষজ্ঞ এর আবেদনক্রমে বা আদালত স্ব প্রণোদিত হয়ে যেকোনও মামলার যেকোনও পর্যায়ের কার্যক্রম অডিও-ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের নির্দেশ প্রদান করতে পারবেন।
এরূপ আবেদন প্রাপ্তি এবং সংশিষ্ট ব্যক্তিদের শুনানির পর আদালত সিদ্ধান্ত দেবেন যে, অডিও-ভিডিও কনফারেন্সিং এক্ষেত্রে আবশ্যিক কিনা। আবেদন মঞ্জুর করা হলে আদালত অডিও-ভিডিও কনফারেন্স এর সময়সূচি নির্ধারণ করবেন। অডিও-ভিডিও কনফারেন্সের আবেদনে অডিও-ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপস্থিতি শুনানি অথবা সাক্ষ্য গ্রহণের সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের শনাক্তকরণের সুবিধার্থে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, টেলিফোন নম্বর, ইমেইল আইডি সংক্রান্ত তথ্য উল্লেখ করতে হবে।জেলহাজতে আটক অভিযুক্ত বা সাক্ষীর ক্ষেত্রে কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে। অডিও-ভিডিও কনফারেন্সিং কার্যক্রম শেষ হলে, আদালত আদেশনামায় কনফারেন্সিং এর সময় ও স্থায়ীত্বকাল উল্লেখ করবেন এবং কনফারেন্সিং এ ব্যবহৃত সফটওয়্যার/প্লাটফরম এর নাম উল্লেখ করবেন। এছাড়া আদালত কনফারেন্সিংকালে এর অডিও, ভিডিও এবং সংযোগের বিষয়ে তার সন্তুষ্টি আদেশে উল্লেখ করবেন।