ডিজিটাল আইন রহিত,৬টি অজামিনযোগ্য এবং ১০টি জামিনযোগ্য ধারা সাইবার নিরাপত্তা আইনে প্রতিস্থাপন হচ্ছে - Alokitobarta
আজ : সোমবার, ৭ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদঃ
ক্রান্তিলগ্নে সেনাবাহিনী দেশের মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে সাম্প্রতিক বন্যায় দেশের ১০ জেলায় ১৪ হাজার ৪২১ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে নিয়ন্ত্রণ ঠিকাদারের হাতে,সোয়া ১২ কোটি ভোটারের তথ্যভান্ডার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নীতি সুদের হার বাড়িয়েই চলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিরোধহীন হারে শুরু বাংলাদেশের সুন্দর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে শিশুদের সুন্দর বিকাশ নিশ্চিত করতে সবার প্রতি আহ্বান মানবিক ও সুন্দর বিশ্ব গড়তে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের বিকল্প নেই অতিরিক্ত ও সহকারী পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ৩০ কর্মকর্তাকে বদলি দেশের ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণও লাফিয়ে বাড়ছে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান গ্রেফতার

ডিজিটাল আইন রহিত,৬টি অজামিনযোগ্য এবং ১০টি জামিনযোগ্য ধারা সাইবার নিরাপত্তা আইনে প্রতিস্থাপন হচ্ছে


মোহাম্মাদ আবুবকর সিদ্দীক ভুঁইয়া :বহুল আলোচিত ও সমালোচিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রহিত করেছে মন্ত্রিসভা। একই সঙ্গে সরকার এ আইনটি সংশোধন ও পরিবর্তন করে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’ নামে নতুন আরেকটি আইনে প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। নতুন আইনে ৬০টি ধারা থাকবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৬টি অজামিনযোগ্য এবং ১০টি জামিনযোগ্য ধারা সাইবার নিরাপত্তা আইনে প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। এটি সেপ্টেম্বরে সংসদে বিল আকারে পাশের জন্য উত্থাপন করা হবে।খসড়াটি ভেটিংয়ের (পরীক্ষা-নিরীক্ষা) জন্য লেজিসলেটিভ বিভাগে পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ আইনে গত পাঁচ বছরে মামলা হয় প্রায় ৭ হাজার। আইনটি পরিবর্তন হলেও সাত হাজার মামলার বিচার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে চলবে।

জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন এবং যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ বিদেশি কূটনীতিকরাও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহারের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে তা বাতিল চেয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন মহলের প্রতিবাদ এবং দাবি সত্ত্বেও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল না করে সাইবার নিরাপত্তা আইনে রূপান্তর করা হচ্ছে।নতুন নামে হলেও সাইবার অপরাধসংক্রান্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারাগুলোই এতে বহাল রাখা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মানহানির মামলায় কারাদণ্ডের বিধান ছিল। এটা ২৯ ধারায় সংঘটিত অপরাধ হিসাবে দেখা হতো।এই ধারা সংশোধনের মাধ্যমে কারাদণ্ডের বিধান রহিত করা হয়। একই সঙ্গে অর্থদণ্ড ৫ লাখ থেকে বাড়িয়ে ২৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি রহিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বেশকিছু ধারায় পরিবর্তন এনে সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হচ্ছে।ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার রোধে আইনের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। সাংবাদিকদের কথা ছিল, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের কারণে মানসিক চাপের মধ্যে থাকতে হয়। সেটাকেও আমরা ধর্তব্যের মধ্যে নিয়েছি এবং সেই কারণে এই পরিবর্তনগুলো আনা হয়েছে। সাংবাদিকদের হয়রানি বন্ধ হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আশা করছি অবশ্যই হবে।

সোমবার বিকালে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন। তিনি জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অনেক ধারা পরিবর্তন করে নতুন আইনের খসড়া তৈরি হয়েছে। নতুন আইনটি পাশ হলে আগেরটি বাতিল হবে। তিনি বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে সরকার মনে করেছে, সাইবার অপরাধ অনেক হচ্ছে। তাই ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের অনেক ধারাকে সংযুক্ত করে নতুন আইনটি করা হয়েছে।সচিব বলেন, নতুন আইন (সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩) অনুযায়ী একটি সাইবার সিকিউরিটি এজেন্সি থাকবে। আগের আইনে জেলের বিধান বেশি ছিল। নতুন আইনে জরিমানার পরিমাণ বেশি রাখা হয়েছে। নতুন আইনে অজামিনযোগ্য ধারা ১৭, ১৯, ২১ ও ৩৩। আর জামিনযোগ্য ধারা ১৮, ২০, ২২, ২৪, ২৬, ২৮ ও ২৯। খসড়াটি আইন মন্ত্রণালয়ের যাচাই-বাছাই (ভেটিং) শেষ করে আবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে বলেও জানান সচিব।অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তন করে নতুন আইন করার সিদ্ধান্ত হলেও এ আইনে চলমান মামলাগুলো বাতিল হবে না। মামলাগুলোর বিচার আগের আইনেই চলবে। সোমবার দুপুরে সুপ্রিমকোর্টে তার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।এদিকে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে জাতীয় সংসদে পাশ হওয়ার পর ওই বছর অক্টোবরে কার্যকর হয় ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮’। আইনটি প্রণয়নে যুক্তি হিসাবে তখন বলা হয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং ডিজিটাল মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধ শনাক্তকরণ, প্রতিরোধ, দমন, বিচার ও আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিধান প্রণয়নকল্পে আইনটি করা হয়েছে।

এ আইন প্রণয়নের শুরু থেকেই গণমাধ্যমের সম্পাদক ও সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী এবং অনেক রাজনৈতিক দল তা বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে। আইনটি পাশের পর গ্রেফতার হয়ে জেলে গেছেন একাধিক সাংবাদিক, বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও মানবাধিকার কর্মীরা। তাই শুরু থেকেই আইনটি বাতিলের জন্য প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ও সমাবেশ অব্যাহত রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, আইনটি মূলত মতপ্রকাশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ব্যবহার হয়ে আসছে।২০২০ সালের মে মাসে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর ও লেখক মুশতাক আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়। পরে আটক অবস্থায় কাশিমপুর কারাগারে মারা যান লেখক মুশতাক আহমেদ। ওই ঘটনায় তীব্র সমালোচনা ও প্রতিবাদের মুখে সরকার আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেয়।মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক শেষ করে সচিবালয়ে এসে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, এটাকে (ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন) বাতিল বলা যাবে না। কারণ, ওই আইনের অনেক ধারা নতুন আইনে (সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩) আছে। আগের আইনের অনেক ধারা আমরা সংশোধন করেছি। তিনি আরও বলেন, যেসব পরিবর্তন আসছে, এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে মানহানির মামলায় আগে জেল ও জরিমানার বিধান ছিল। জেলের বিধানটি বাদ দিয়ে শুধু জরিমানার বিধান রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।

সাইবার নিরাপত্তা আইন : আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তন করে তার জায়গায় সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩ করা হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বেশ কয়েকটি ধারায় পরিবর্তন এনে এ আইনটি করা হচ্ছে। নতুন আইনে মোট ধারা ৬০টি। এটি সেপ্টেম্বরে জাতীয় সংসদে বিল আকারে পাশের জন্য উত্থাপন করা হবে। তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তন করা হয়েছে, বাতিল করা হয়নি। নামটা নতুন করে দেওয়া হয়েছে।

যেসব ধারায় পরিবর্তন আসছে : সাইবার নিরাপত্তা আইনে যেসব ধারায় পরিবর্তন আনা হয়েছে তার মধ্যে আছে ২১ ধারা। এই ধারায় পরিবর্তন এনে সাজার মেয়াদ ৭ বছর করা হয়েছে। দ্বিতীয়বার একই অপরাধ করলেও সাজা দ্বিগুণ হবে না।

এই ধারা অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি ডিজিটাল মাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকার বিরুদ্ধে কোনো রকম প্রোপাগান্ডা ও প্রচারণা চালায় বা তাতে মদদ দেয়, তাহলে সেটি অপরাধ বলে গণ্য হতো এবং এর জন্য ১০ বছরের কারাদণ্ড বা এক কোটি টাকা জরিমানার বিধান ছিল। একই অপরাধ কেউ দ্বিতীয়বার করলে তার সাজা দ্বিগুণ করার বিধান ছিল। বারবার একই অপরাধের ক্ষেত্রে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা তিন কোটি টাকা জরিমানার বিধান ছিল। নতুন আইনে এসব থাকছে না।

পরোয়ানা ছাড়া গ্রেফতার থাকছে : ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৪৩ ধারা নিয়ে তীব্র বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়ায় এটি অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। ৪৩ ধারা অনুযায়ী, যদি কোনো পুলিশ কর্মকর্তা মনে করেন, কোনো স্থানে এ আইনের অধীনে কোনো অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বা হওয়ার আশঙ্কা আছে, তাহলে সাক্ষ্যপ্রমাণাদি হারানো, নষ্ট হওয়া, মুছে ফেলা, পরিবর্তন হওয়ার বা করার আশঙ্কা রয়েছে, তাহলে কোনো পরোয়ানা ছাড়াই সেখানে তল্লাশি, সরঞ্জাম জব্দ, দেহ তল্লাশি এবং পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতারের এখতিয়ার রয়েছে। এ বিধানটি নতুন আইনে প্রতিস্থাপিত হচ্ছে।

অজামিনযোগ্য কিছু অপরাধ হচ্ছে জামিনযোগ্য : ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৮ ও ২৯ ধারা নিয়েও তীব্র বিতর্ক রয়েছে। এই ধারাগুলো বাতিলের দাবিতে সোচ্চার রয়েছেন আন্দোলনকারীরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এ ধারাগুলো বাতিল না করে নতুন আইনে সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানান আইন মন্ত্রী আনিসুল হক। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৮ ধারায় বলা হয়েছে,যদি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে ধর্মীয় মূল্যবোধ বা অনুভূতিতে আঘাত করা বা উসকানি দেওয়ার জন্য ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক মাধ্যমে এমন কিছু প্রকাশ বা প্রচার করে, যা ধর্মীয় অনুভূতি বা ধর্মীয় মূল্যবোধের ওপর আঘাত করে, তাহলে তা অপরাধ হবে। এই অপরাধের ক্ষেত্রে পাঁচ বছর কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান ছিল। একই অপরাধ বারবার করলে সাজা ও জরিমানার মেয়াদ দ্বিগুণ হওয়ার বিধান ছিল। এই ধারায় সাজা কমানো হয়েছে। এটা আগে ছিল অজামিনযোগ্য। নতুন আইনে তা জামিনযোগ্য করা হয়েছে।ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৯ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক মাধ্যমে মানহানিকর তথ্য প্রকাশ বা প্রচার করেন, তাহলে তিনি তিন বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন বা পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। একই অপরাধ বারবার করলে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান ছিল।এ ধারায় পরিবর্তন এনে কারাদণ্ডের সাজা সম্পূর্ণভাবে বিলুপ্ত করা হয়েছে। এখানে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে শুধু জরিমানা। আর জরিমানা অনাদায়ে সর্বোচ্চ ছয় মাস, সর্বনিম্ন তিন মাসের কারাদণ্ডের বিধান সংযোজন করা হচ্ছে। আইনমন্ত্রী জানিয়েছেন, ২৫ লাখ টাকা সর্বোচ্চ জরিমানা করা হবে।

আইনমন্ত্রী বলেন, দেওয়ানি আইনে কেউ মানহানির জন্য মামলা করলে ক্ষতিপূরণ চাওয়ার কোনো সীমা নেই। তিনি চাইলে ১০০ কোটি টাকাও ক্ষতিপূরণ চাইতে পারেন। তবে সেটা কমিয়ে সর্বোচ্চ আদায়যোগ্য জরিমানার পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ লাখ টাকা। তবে কত টাকা জরিমানা করা হবে, তা নির্ধারণ করবেন আদালত। মানহানির মামলায় এখন যেহেতু কোনো কারাদণ্ড নেই, তাই এই ধারায় কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না।

নতুন সংযোজন হ্যাকিং সম্পর্কিত ধারা : ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩৩ ধারায় বলা হয়েছিল, যদি কোনো ব্যক্তি কম্পিউটার বা ডিজিটাল সিস্টেমে বেআইনিভাবে প্রবেশ করে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা কোনো আর্থিক বা বাণিজ্যিক সংস্থার কোনো তথ্য-উপাত্তের কোনো ধরনের সংযোজন বা বিয়োজন, স্থানান্তর বা স্থানান্তরের উদ্দেশ্যে সংরক্ষণ করেন বা করতে সহায়তা করেন, তাহলে তা অপরাধ বলে ধরা হবে।

৩৩ ধারা সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করে হ্যাকিং সম্পর্কিত অপরাধ নামে নতুন ধারা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এই অপরাধের শাস্তি অনধিক ১৪ বছরের কারাদণ্ড বা এক কোটি টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। হ্যাকিং হচ্ছে, কম্পিউটারের তথ্যভান্ডারের কোনো তথ্য বিনাশ, বাতিল বা পরিবর্তন বা তার মূল্য বা উপযোগিতা কমানো বা অন্য কোনোভাবে ক্ষতিসাধন বা নিজ মালিকানা বা দখলবিহীন কোনো কম্পিউটার, সার্ভার, নেটওয়ার্ক বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক সিস্টেমে অবৈধভাবে প্রবেশের মাধ্যমে তার ক্ষতিসাধন হবে হ্যাকিং।ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩১ ধারায় এর আগে উল্লেখ করা হয়েছিল, যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইট বা ডিজিটাল মাধ্যমে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন বা করান, যা বিভিন্ন শ্রেণি বা সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা বা বিদ্বেষ সৃষ্টি করে বা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে বা অস্থিরতা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে অথবা আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটায়, তাহলে সেটি অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল ৭ বছর এবং পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা। একাধিকবার একই অপরাধ করলে সাজা বেড়ে ১০ বছর এবং জরিমানা ১০ লাখ টাকা করার বিধান ছিল।এ ধারায় পরির্বতন এনে সাজার সময়সীমা কমানো হয়েছে। আগে সাত বছরের কারাদণ্ডের পরিবর্তে এটা কমিয়ে পাঁচ বছর করা হয়েছে। বারবার একই অপরাধ করলে সাজা বাড়ানোর বিষয়টি বাতিল করা হয়েছে। ৩২ ধারায় সরকারি গোপনীয়তা ভঙ্গের অপরাধের শাস্তি আগে ছিল ১৪ বছর, সেটি কমিয়ে ৭ বছর করা হয়েছে। বারবার এই অপরাধ করলে সাজা বাড়ার বিধান বাতিল করা হয়েছে।

Top