বাড়িতে নেই বড় উঠান সড়কেই ধান মাড়াই! বেতাগীতে বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি
শাহাদাত হোসেন মুন্না বেতাগী থেকেঃ বরগুনার বেতাগীতে চলছে ইরি ধান কেটে ঘরে তোলার মহাযজ্ঞ। প্রতি ধান কাটার মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামীণ সড়কের দুই পাশে ধান মাড়াই ও ধান-খড় শুকানো হয়। প্রায় দেড় থেকে দুই’মাস ধরে চলে এই কার্যক্রম। এতে সড়ক ছোট হয়ে যানবাহনগুলো সড়কের মাঝখান দিয়ে চলাচল করছে। ফলে ধান কাটার মৌসুমে দুর্ঘটনার আশংকা বাড়ছে এসব সড়কে।এ মৌসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গে উপজেলার বিভিন্ন পাকা সড়কের ওপর শুরু হয়ে যায় ধান মাড়াই আর খড় শুকানোর প্রতিযোগিতা। এরপর স্তুপ করে রাখা হয় ওই সব শুকনো খড়। এমন দৃশ্য এখন চোখে পড়ে উপজেলার প্রতিটি সড়কে।গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে উপজেলার ঝোপখালি, মোকামিয়া, কাজিরহাট, উত্তর বেতাগী এলাকার সড়ক-মহাসড়ক ঘুরে দেখা গেছে, চাষিরা মাঠ থেকে ধান কেটে রাস্তার উপর স্তুপ করে রাখছেন। অনেক স্থানে সড়কের উপরই চলছে ধান মাড়াই-এর কাজ। ধান মাড়াই করার পরও শেষ হচ্ছে না এর যন্ত্রনা। এরপর খড় রাস্তায় বিছিয়ে শুকানো হচ্ছে দিনের পর দিন। এর ফলে এসব কালো পিচের সড়ক এখন সোনালী রং ধারন করেছে। এসব সড়কে চরম আতংক আর ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে পথচারীসহ সব ধরনের যানবাহন। ভিজা ধানের খড়ের কারনে অটো-মোটরসাইকেলসহ যানবাহন পিছলে দুর্ঘটনা ঘটছে।ঝোপখালি এলাকায় আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর ধানমাড়াই করছিলেন কৃষক মাইনুল সিকদার। তিনি জানান, আগে ধান মাড়াইয়ের জন্য বাড়ির উঠানে অনেক খোলা জায়গা ছিল। এখন নেই। তাই গ্রামের প্রায় সবাই এভাবে রাস্তার ওপরে ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজ করে।বেতাগী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন হিজলতলাজ-জলিশা বাঁজার সড়কের হোসনাবাদ ইউনিয়নের নিউ মার্কেট এলাকায় রাস্তার উপর খড় শুকাচ্ছিলেন হানিফ সরকার। রাস্তার উপর কেন খড় শুকাচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন খোলা জায়গা না থাকায় ধান, খড় এগুলো শুকানো কঠিন হয়ে পড়েছে। অথচ সময়মতো শুকাতে না পারলে ধান নষ্ট হয়। তাই পাকা রাস্তার ওপরই ধান শুকাতে হচ্ছে। তা ছাড়া সড়কে এসব শুকাতে সময়ও কম লাগে।
তবে এতে পথচারীদের চলাচলে সমস্যার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, একটু দেখে শুনে গেলেই আর সমস্যা হবে না।ভাড়ায় চলিত মোটরসাইকেল চালক মো আব্বাস উদ্দিন হাওলাদার বলেন, সড়কগুলোতে ধান মাড়াই ও শুকানোর সময় চলা কঠিন হয়ে যায়। তা ছাড়া এসব শুকানোয় রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে থাকায় একটু অসতর্ক হলেই দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে।এ বিষয়ে বেতাগী উপজেলা নাগরিক অধিকার ফোরামের সাধারন সম্পাদক মহসিন খান বলেন, রাস্তায় ধান মাড়াই ও শুকানোটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এই জনদুর্ভোগ নিরসনে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন, রাস্তা আটকে যাতে কেউ যানচলাচলে বাধা ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।