নেয়ামতি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সরকারি চাল গায়েব করার চেষ্টা, চাপের মুখে বিতরন
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ ১৪ নং নেয়ামতি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জেলেদের নামে বরাদ্দও ভিজিডি কার্ডের গরীবের চাল গায়েব করার পরিকল্পনা ফাঁস হয়েছে। দশ বস্তা চাল পাচার করে স্থানীয়নেয়ামতি বন্দরের আউয়াল নামে এক ব্যবসায়ীর কাছে গোপনে বিক্রি করা হয়েছে এমন একটি খবরএলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়লে সরকারি কর্মকর্তাদের তৎপরতায় চাল গোপন করে রাখার তথ্য ফাঁস হয়। শেষপর্যন্ত পরিষদের মেম্বর ও স্থানীয় জনতার চাপের মুখে ঘটনার একদিন পর চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির জেলে ওভিজিডি কার্ড ধারীদের চাল বিতরন করতে বাধ্য হন। তবে এই অনিয়মের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়েউপজেলা ট্যাগ অফিসার, মৎস্য অফিসার কেবলমাত্র বিতরন কার্যক্রমে উপস্থিত থেকে ঘটনার ধামাচাপাদিলেন তার কোন ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। চেয়ারম্যান হুমায়ুন জানিয়েছেন, বিতরনের সময় শেষ হলেও নিতেনা আসার কারনে তার পরিষদের গোডাউনে ৫১ বস্তা চাল গচ্ছিত ছিলো। তবে এ তথ্য কেন দুই মাস সময়পার হলেও ইউএনও কিংবা ট্যাগ অফিসারকে জানানো হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, চালগচ্ছিত থাকলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানাতে লিখিত ভাবে জানাতে হয় অভিজ্ঞতা না থাকার বিষয়টিভুল হয়েছে বলে সাংবাদিকদের কাছে জানান । কিন্তু তার পরিষদের আতিকুর রহমান পিন্টু, খালেকসহ বেশকয়েকজন মেম্বর জানিয়েছেন, চাল গায়েব করার উদ্দেশ্যে পরিষদের ভেতর চাল থাকার তথ্য গোপন রাখাহয়েছিল। তথ্যসূত্রে জানা যায়, গেল বুধবার (২৭-০৪-২২ইং) নেয়ামতি ইউনিয়নের সুমন নামে এক অটোড্রাইভার ১০ বস্তা চাল নেয়ামতি বন্দরের চাল ব্যবসায়ী আউয়ালের কাছে খুব ভোরে পৌছে দেয়। সেই চালবাকেরগঞ্জ ১৪ নং নেয়ামতি ইউনিয়ন পরিষদের বলে খবরটি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টির সত্যতাস্বীকার করে চাল ক্রেতা আউয়াল জানান, পরিষদের চাল সুমনের মাধ্যমে চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবিরের কাছথেকে কিনেছেন। সাংবাদিক ও স্থানীয়দের সামনে ক্রেতা আউয়াল চেয়ারম্যানকে মোবাইল ফোনে চালফেরত নিতে বলেন। এ সক্রান্ত একটি ভিডিও রয়েছে। এদিকে চাল বিতরন দুই মাষ আগে শেষ হলেও কিভাবেপরিষদ থেকে চাল বাইরে বিক্রি হচ্ছে? তা খতিয়ে দেখতে কিংবা পরিষদের গোডাউন চেক করতে ইউএনওউপজেলা ট্যাগ অফিসার হুমায়ুন কবির ও মৎস্য কর্মকর্তা নাছির উদ্দিনকে ঘটনা স্থলে পাঠান। তারাগোডাউন চেক করে ৩০ কেজি ওজনের ৩০বস্তা ভিজিডি কার্ডেও ও জেলেদের নামে বরাদ্দকৃত ২১ বস্তামোট ৫১ বস্তা চাল গোপন রাখার সত্যতা পান। পাশাপাশি পরিষদ থেকে আরো ১০ বস্তা পরিমান চাল বিক্রিকরা হয়েছে তার প্রমাণ মিললেও চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
তবে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, অনিয়ম হলে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধেনিয়মিত মামলা করা হবে। কিন্তু ট্যাগ অফিসার হুমায়ুন কবির ও মৎস্য অফিসার নাসির উদ্দিনচেয়ারম্যানের দুর্নীতির পক্ষে মৌন সমর্থন দেওয়ায় ইউএনও’র পক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি বলেনির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে। পরিষদের মেম্বর পিন্টু ও খালেক জানান, চাল গোপন রাখার ঘটনা ফাঁসহওয়ার একদিন পরে বৃহস্পতিবার (২৮-০৪-২২) সরকারি ওই কর্মকর্তাদের উপস্থিত রেখে উদ্ধার হওয়া সেই চালকার্ড ধারীদের ডেকে এনে বিতরন করেন চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির। কিন্তু অবৈদ ভাবে পরিষদ থেকেদোকানে চাল বিক্রি করার তথ্য প্রমাণ মিললেও কোন আইনি ব্যবস্থা দেখতে পাননি তারা। বিষয়ে ট্যাগঅফিসার হুমায়ুন কবির ও মৎস্য কর্মকর্তা জানান, চাল বিতরনের সময় শেষ হলে কি পরিমান চাল পরিষদেরকাছে গচ্ছিত আছে তা আমাদেরকে অবহিত করবেন। কিন্তু চেয়ারম্যান বিষয়টি আমাদেরকে জানাননি।তাই যাদের চাল দেওয়া হয়নি বা নিতে পারেননি তাদেরকে আমরা উপস্থিত থেকে চেয়ারম্যান হুমায়ুনেরমাধ্যমে বিতরন করেছি। এছাড়াও চেয়ারম্যান হুমায়ুন এর আগে যে চাল বিতরন করেছেন সে সময় ট্যাগঅফিসার ও ওয়ার্ড মেম্বরদের উপস্থিত না রেখে বিতরন কার্যক্রম চালানোর এ অনিয়মের বিষয়ে সতর্ককরেছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ওই কর্মকর্তারা।