করোনাভাইরাসের দুঃসময়ের মধ্যেও যারা মেয়াদোত্তীর্ণ মেডিকেলসামগ্রী ব্যবহার ।
আলোকিত বার্তা:মেয়াদোত্তীর্ণ টিউব ও সিরিঞ্জ ব্যবহার করে করোনা রোগীদের নমুনা সংগ্রহের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত নেয়া হয়নি কোনো কার্যকর ব্যবস্থা। গঠন করা হয়নি কোনো তদন্ত কমিটিও।এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের শুধু মৌখিকভাবে সতর্ক করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।তবে জড়িতদের বিরুদ্ধে অবশ্যই তদন্তসাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়া জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তদের মতে,এমন অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে অন্যরাও এ ধরনের কাজে উৎসাহিত হবেন।স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় বা অধিদফতর কোনো ব্যবস্থা না নিলেও এ ব্যাপারে অনুসন্ধান করার উদ্যোগ নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)এ প্রসঙ্গে সংস্থাটির পরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বলেন,করোনাভাইরাসের দুঃসময়ের মধ্যেও যারা মেয়াদোত্তীর্ণ মেডিকেলসামগ্রী ব্যবহার করেছেন তারা অমানুষ।এদের বিষয়ে অবশ্যই অনুসন্ধান করবে দুদক। দুদকের উচ্চপর্যায় থেকে স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি নিয়ে অনুসন্ধান কার্যক্রম চালু রয়েছে এবং একাধিক মামলাও করা হয়েছে।করোনার এ সময়ে দুদকের পক্ষ থেকে তদন্ত সাময়িক স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে এর মধ্যেও কেউ দুর্নীতিতে জড়ালে তা খতিয়ে দেখা হবে।এদিকে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় কেন্দ্রীয় ঔষধাগার (সিএমএসডি) থেকে চিকিৎসকদের জন্য নিুমানের এন-৯৫ ফেস মাস্ক পাঠানোর ঘটনায় পৃথকভাবে একাধিক কমিটি তদন্ত শুরু করেছে। এসব মাস্ক পাঠানো হয় বিভিন্ন হাসপাতালে- এমন অভিযোগ চিকিৎসকদের। তাদের মতে, এসব পণ্য ক্রয় ও সংগ্রহের সময় কোনো মান যাচাই করা হয়নি।এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু হয়েছে তদন্ত।মেয়াদোত্তীর্ণ টিউব ও সিরিঞ্জ ব্যবহার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন,বিষয়টি জানার পরে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআরের কাছে ব্যাখ্যা চান। সেখান থেকে তাকে জানানো হয়,কিছু সরঞ্জাম হয়তো মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে পড়েছে। আরও কিছু সরঞ্জাম শিগগিরই মেয়াদোত্তীর্ণ হতে যাচ্ছে।করোনাসংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা স্বাভাবিক রাখতে দ্রুত এসব সরঞ্জাম তাদের প্রয়োজন বলেও জানানো হয়।অধ্যাপক ডা. আজাদ বলেন, এখন দেশে একটি ‘জরুরি অবস্থা’ চলছে।তাছাড়া আইইডিসিআর (রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান)একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, তাই করোনা সংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা স্বাভাবিক রাখতে কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি। তবে এ বিষয়ে তাদের মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে। এছাড়া আইইডিসিআরের বিষয়ে আরও কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এখন থেকে প্রতিষ্ঠানটি আর ব্যাপক হারে পরীক্ষা করবে না। তারা সীমিত পরিসরে পরীক্ষা করবে। পাশাপাশি অন্যান্য ল্যাবের মান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন রক্ত পরিসঞ্চালন বিশেষজ্ঞ (ট্রান্সফিউশন মেডিসিন স্পেশালিস্ট) বলেন,ডিসপোজেবল সিরিঞ্জ এবং ভ্যাকুয়াম টিউব নিরাপদ রক্ত সংগ্রহ, পরিসঞ্চালন ও পরীক্ষার কাজে ব্যবহৃত হয়। এসব পণ্যে মেয়াদ দেয়া হয়, কারণ এসব পণ্য জীবাণুমুক্তকরণ থাকে এবং প্লাস্টিক পণ্যের মানের ব্যবহার উপযোগিতা নিশ্চিত করে। এসব সরঞ্জামের মেয়াদোত্তীর্ণ হলে সেটি আর জীবাণুমুক্ত থাকে না। ব্যবহৃত প্লাস্টিক টিউবও ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে এসব পণ্য রক্ত গ্রহণ ও সংরক্ষণের কাজে ব্যবহার করা হলে সেই নমুনা কোনোভাবেই মানসম্পন্ন থাকে না। আর মেয়াদোত্তীর্ণ সিরিঞ্জ মানবদেহে ব্যবহার ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ এটি থেকে সুস্থ দেহেও বিভিন্ন ধরনের টক্সিসিটি (বিষক্রিয়া) ছড়িয়ে পড়তে পারে। তিনি বলেন, মানুষের জীবন রক্ষার্থে এ ধরনের মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য ব্যবহার কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।প্রসঙ্গত, নমুনা সংগ্রহকারীদের খোদ রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর থেকে এসব মেয়াদোত্তীর্ণ টিউব ও সিরিঞ্জ দেয়ার অভিযোগ উঠে। ইতোমধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নমুনাও এসব মেয়াদোত্তীর্ণ টিউব ও সিরিঞ্জের মাধ্যমে নেয়া হয়েছে। কিন্তু এসব টিউবে সঠিকভাবে নমুনা সংরক্ষণ হওয়ার কথা নয়। এমন গুরুত্বপূর্ণ কাজে এ ধরনের মেয়াদোত্তীর্ণ উপাদান ব্যবহার কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, সাধারণত মুখবন্ধ এসব টিউবগুলোতে নেগেটিভ প্রেসার দেয়া থাকে। কিন্তু মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় টিউবগুলোর ভেতরের নেগেটিভ প্রেসার পরিবর্তিত হয়ে যায়। বা ওই প্রেসার কার্যকারিতা হারাতে পারে। এতে এসব টিউবে নমুনা সংগ্রহ করলে, সেই নমুনা গুণগতমান ঠিক না থাকা স্বাভাবিক। পাশাপাশি নমুনা সংগ্রহে যারা কাজ করছেন তাদের সমস্যা হচ্ছে। পাশাপাশি নমুনার গুণগত মান এবং এসব নমুনার পরীক্ষার ফল নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক আইইডিসিআরে কর্মরত সংশ্লিষ্ট কয়েকজন বলেন,রক্তের নমুনা সংগ্রহ করতে যেসব টিউব সরবরাহ করা হচ্ছে সেগুলোর মেয়াদ ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ছিল। অর্থাৎ ইতোমধ্যে এসব টিউবের মেয়াদোত্তীর্ণের সময় দু’বছর অতিক্রম করেছে। অন্যদিকে রোগী বা সন্দেহজনকদেরও শরীর থেকে রক্ত নিতে যেসব সিরিঞ্জ দেয়া হচ্ছে সেগুলোর মেয়াদ ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ছিল। অর্থাৎ রক্ত টানা এবং রাখার পাত্র দুটোই মেয়াদোত্তীর্ণ। তারা জানান, রোগীর শরীর থেকে রক্ত নিতে যখন এসব সিরিঞ্জ ব্যবহার করা হয় তখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিপত্তি ঘটে। রোগীর শরীরে সিরিঞ্জ ঢুকিয়ে টান দিলে বেশিরভাগ সময় সিরিঞ্জের পিস্টন উঠে আসে। এ সময় সিরিঞ্জে বাতাস ঢুকে পড়ে। ফলে প্রয়োজনমতো রক্ত সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়ে। মেয়াদোত্তীর্ণ টিউব ও সিরিঞ্জ ব্যবহারে কোনো সমস্যা হয় কিনা জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান যুগান্তরকে বলেন, যে কোনো পণ্যের ক্ষেত্রে মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যের গুণগত মান থাকে না। যেহেতু এসব সিরিঞ্জ ও টিউব প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি, অর্থাৎ এসব পণ্য উৎপাদনে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটানো হয়েছে। এক্ষেত্রে রক্তের নমুনা সংগ্রহে এসব উপাদান ব্যবহার করলে নমুনা অন্য রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটতে পারে। এমনকি এসব নমুনা থেকে সঠিক ফলাফল নাও পাওয়া যেতে পারে। তাই মেয়াদোত্তীর্ণ টিউব ও সিরিঞ্জ ব্যবহার না করার পরামর্শ দেন তিনি।
মাস্ক জালিয়াতি : সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে এন-৯৫ মাস্ক ক্রয় প্রক্রিয়ায় কোনো জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে কিনা সেটি তদন্তে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় পৃথক তদন্ত শুরু করেছে। দুদক পরিচালক কাজী শফিকুল আলমের নেতৃত্বে ইতোমধ্যে ৫ সদস্যের একটি দল তদন্ত শুরু করেছে। পাশাপাশি সংস্থাটির গোয়েন্দা পরিচালক মীর জয়নুল আবেদীন শিবলী ও তার নেতৃত্বাধীন দল মাঠপর্যায় থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে সহযোগিতা করছে। এছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. সাঈদুর রহমানের নেতৃত্বে কমিটিতে আছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের হাসপাতাল-১ শাখার উপ-পরিচালক মো. আমিনুর রহমান এবং স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপ-সচিব (ক্রয় ও সংগ্রহ) হাসান মাহমুদ। এ কমিটিকে তিন কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। তবে তারা আরও ৫ কার্যদিবস সময় বাড়িয়ে নিয়েছে।স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কমিটি এরই মধ্যে এন-৯৫ মাস্ক সরবরাহকারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার আবদুর রাজ্জাকসহ বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এর মধ্যে শনিবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে আবদুর রাজ্জাককে। তিনি জেএমআই নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান। ওই প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসামগ্রী সরবরাহ করে। তার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এন-৯৫ মাস্ক সংগ্রহ করে সরকার।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. হাবিবুর রহমান খান শনিবার সন্ধ্যায় বলেন,তদন্ত কমিটি আরও ৫ দিন সময় বাড়িয়ে নিয়েছে। রোববার থেকে তাদের নতুন ৫ দিন শুরু হবে। যে কোনো তদন্ত ভালোভাবে করতে হলে যথেষ্ট সময়ের প্রয়োজন। তিনি বলেন, তদন্তে যদি কেউ দোষী সাব্যস্ত হন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।এ প্রসঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন,আমরা বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গেই আমলে নিয়েছি। যেসব মাস্ক সরবরাহ করা হয়েছে সেগুলো নিয়ে চিকিৎসকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। এমনকি এ ক্রয় প্রক্রিয়া নিয়ে সংশ্লিষ্টরা সন্দেহ প্রকাশ করে। এসব বিষয় আমলে নিয়েই দুদক তদন্ত শুরু করেছে। তিনি বলেন, এ প্রক্রিয়ায় যদি কোনো অসঙ্গতি পাওয়া যায় এবং এখানে কোনো জালিয়াতির ঘটনা ঘটে তবে জড়িতদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।জানা গেছে, করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে স্বাস্থ্যকর্মীদের এন-৯৫ মাস্কের মোড়কে সাধারণ মাস্ক দেয়ার ঘটনায় ২১ এপ্রিল তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এর আগে ২০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে এ বিষয়ে নজরদারি বাড়াতে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও কেন্দ্রীয় ঔষধাগারকে নির্দেশনা দেন। তিনি বলেন, ‘মাস্ক ও পিপিইর বাক্স ঠিক আছে, কিন্তু বাক্সের ভেতরের জিনিসগুলো ঠিক আছে কিনা- নজরদারিটা একটু বাড়ানো দরকার বা যিনি রিসিভ করবেন উনি যেন দেখেশুনে রিসিভ করেন।’ এ বিষয়ে বেশকিছু অভিযোগ তার কাছে আসার ইঙ্গিতও দেন তিনি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব মো. আবু রায়হান মিঞা স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, ‘উপর্যুক্ত বিষয়ে সম্প্রতি ঢাকার মুগদা জেনারেল হাসপাতালসহ কয়েকটি সরকারি হাসপাতালে এন-৯৫ ব্র্যান্ডের মোড়কে সাধারণ ও নিুমানের মাস্ক সরবরাহের অভিযোগ পাওয়া যায়। এ পরিস্থিতিতে মাস্ক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে সিএমএসডি ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য নির্দেশ দিলে প্রতিষ্ঠানটি একটি ব্যাখ্যা প্রদান করে। আলোচ্য অভিযোগ এবং ব্যাখ্যার পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টির যথাযথ অবস্থা অনুসরণ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তদন্ত কমিটি নির্দেশক্রমে গঠন করা হল।কমিটির কার্যপরিধি সম্পর্কে নির্দেশনায় বলা হয়, কমিটি বর্ণিত অভিযোগের আলোকে চাহিদা, স্পেসিফিকেশন, সংগৃহীত পরিমাণ, সরবরাহকৃত নিুমানের মাস্কের পরিমাণ, সিএমএসডিতে নিুমানের মজুদ মাস্ক (যদি থাকে) ইত্যাদি বিষয়ে প্রকৃত তথ্য উদ্ঘাটনপূর্বক সুস্পষ্ট মতামত দেবেন। কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে তার দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ করবেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের পিপিই নীতিমালা অনুযায়ী, রোগীর নমুনা পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য এন-৯৫ মাস্ক পরা জরুরি। কিন্তু মার্চের শেষ ভাগে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে বিভিন্ন হাসপাতালে যেসব মাস্ক পাঠানো হয়, তার প্যাকেটে ‘এন-৯৫’ লেখা থাকলেও ভেতরে ছিল সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক। ফলে সেগুলো আসল মাস্ক কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন চিকিৎসকরা; বিষয়টি সে সময় সংবাদমাধ্যমেও আসে।জেএমআই নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মুগদা জেনারেল হাসপাতালে সরবরাহ করা মাস্কের প্যাকেটে সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক থাকায় হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী ওই মাস্কের মান সম্পর্কে জানতে চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালককে চিঠি দেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদ উল্লাহ ২ এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদফতরের ব্রিফিংয়ে স্বীকার করেন, ওই মাস্ক সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক ছিল। প্যাকেটের গায়ে এন-৯৫ লেখা হয়েছিল ‘ভুল করে’।হাসপাতালে কীভাবে ‘ভুল মাস্ক’ গেল সে বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন সিএমএসডির পরিচালক। সেখানে বলা হয়েছে, সিএমএসডি কোনো দেশীয় চিকিৎসাসামগ্রী প্রস্তুতকারী কোম্পানি/প্রতিষ্ঠানের কাছে এন-৯৫ মাস্ক সরবরাহের কার্যাদেশ প্রদান করেনি।বাংলাদেশি চিকিৎসাসামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান জেএমআই কোভিড-১৯ সংক্রমণের পূর্ব থেকে হ্যান্ড গ্লাভস, স্যানিটাইজার, সাধারণ মাস্ক ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর কর্তৃক প্রদত্ত লাইসেন্স/কোয়ালিটি সার্টিফিকেট/ছাড়পত্র অনুযায়ী সিএমএসডিকে সরবরাহ করে আসছে। উক্ত কোম্পানি যে মোড়কে সাধারণ মাস্ক সরবরাহ করে, সে মোড়কগুলোতে এন-৯৫ মুদ্রিত ছিল। সিএমএসডি ভুলক্রমে সাধারণ মাস্ক হিসেবেই পণ্যগুলো সরবরাহ করে। বিষয়টি প্রাথমিক পর্যায়েই নজরে আসে। সিএমএসডি তাৎক্ষণিকভাবে সরবরাহকারী কোম্পানিকে মাস্কগুলো ফেরত দেয়। কেন এমন মোড়কে সাধারণ মাস্ক সরবরাহ করেছে তার লিখিত জবাবও চাওয়া হয়।