ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চুরি যাওয়া মালামালের কোন হদিস মিলেনি।
আলোকিত বার্তা:ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নতুন বিল্ডিং এর ২,৩ ও ৭ তলা থেকে চুরি যাওয়া মালামালের কোন হদিস আজ পর্যন্ত মিলেনি। কিন্তু হাস্যকর বিষয় এই প্রায় তিন বছর পর মচিমহার সাবেক প্রধান কর্মকর্তা মুস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানায় চুরির কথা লিপিবদ্ধ করে একটি জিডি করেছেন। জিডি নং- ৫১০ তারিখ ৬/১০/২০১৮।জানা গেছে, চুরি যাওয়া মালামালের আর্থিক পরিমাণ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। এদিকে কোতোয়ালী মডেল থানা সূত্র উল্লেখ করেন, জিডিতে চুরির মূল সূত্র উল্লেখ থাকলেও থানা পুলিশ মামলা নিবে কিন্তু জিডিতে চুরির উল্লেখ থাকলে এটা মামলা পর্যায়ে পড়ে ।কোতোয়ালী থানার তৎকালিন ওসি মোঃ কামরুল ইসলাম সাংবাকিদরে জানিয়েছিলেন, মচিমহার এই চুরির সাথে একটি সংঘবদ্ধ চক্র জড়িত । তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।
ময়মনসিংহ জেলা জজ কোর্টের বিজ্ঞ আইনজীবী এড. পীযুষ কান্তি সরকার বলেন, তিন বছর আগে মচিমহার চুরির ঘটনায় জিডি করা হাস্যকর । এটা সুনির্দিষ্ট মামলার পর্যায়ে পড়ে।প্রকাশ, ২০১৩ সনের জানুয়ারী মাসে ময়মনসিংহ গনপূর্ত মচিমহার ২,৩,৭ তলার সার্বিক কাজ সমাপ্ত করে মচিমহা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে দেয়। কাজ সম্পাদনের অন্যান্য ইকিউভম্যান্টের মধ্যে ছিল পুরো তিনটি তলার লাইটিং সরঞ্জামদি গ্যাস পাইপ লাইনের মূল্যবান যন্ত্রপাতি, মূলবান লাইট দামী অন্যান্য যন্ত্রপাতি ও তিনটি বিল্ডিং কক্ষের যাবতীয় ফিটিংম সরঞ্জাম । কিন্তু অদৃশ্যভাবে গনপূর্ত কর্তৃক কর্ম সম্পাদনের চূর্ড়ান্ত রিপোর্ট কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর পরপরই এই ভয়াবহ চুরিটি সংঘটিত হয়।জনমনে সে সময় প্রশ্নের উদ্রেক করে, মচিমহার একটি শক্তিশালী কর্তৃপক্ষ বা পরিচালক থাকতে এই অদৃশ্য চুরির কারণ হতাশাব্যঞ্জক কারণ মচিমহার কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে প্রধান সিকিউরিটি কর্মকর্তা , সিকিউরিটি গার্ড, আছে ওয়ার্ড মাস্টার, ওয়ার্ড সর্দার রয়েছে,আছে পুলিশ ফাঁড়ি , আনসার বাহিনী ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী পরিষদ কর্তুপক্ষ।
এত সব বাহিনী থাকতে সরকারী একটি বিশাল হাসপাতালে এই চুরি কিভাবে সম্ভব হলো ? মূল্যবান আসবাবপত্র, যন্ত্রপাতি কিভাবে খোয়া গেল ? মচিমহার উপ-পরিচালক ডাক্তার লক্ষী নারায়নের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিন বছর পর আমরা জানতে পেরেছি মচিমহার নতুন বিল্ডিং এ চুরি হয়েছে। তিনি আরও জানান, পরিচালক মহোদয়ের নির্দেশ মোতাবেক থানায় জিডি করা হয়েছে।এদিকে মচিমহার সংশ্লিষ্ট এলাকার বাইরে – ভেতরে বিভিন্ন গুঞ্জনের শাখা-প্রশাখা ক্রমেই বিস্তৃত হচ্ছে। জনমনে প্রশ্ন বিদ্ব হচ্ছে তিন বছর পর কেন জিডি করা হলো ? অথচ বিজ্ঞ জনের ভাষায় এটা মামলার বিষয়। তৎক্ষণাৎ জিডি তো হয়নি মামলা তো দূরের কথা ।
অন্য দিকে বিশাল একটি চুরির ঘটনা ঘটলো কিন্তু কর্তৃপক্ষ জানেন না এটাও কি মানুষকে বিশ্বাস করতে হবে ? একটি সূত্র জানান ,মচিমহার নতুন বিল্ডিংএ চুরির ঘটনাকে নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, তিন বছর পর জিডি করার ফলেই এটাই প্রমানিত হচ্ছে যারা চুরি করেছে বা চোর তারা বহিরাগত কেউ নয় ! বিল ভাউচারে গড়মিল ছিল অথবা মূল্যবান যন্ত্রপাতি, আসবাবপত্র অন্যত্র সরিয়ে একটি চুরির নাটক সাজানো হয়েছে।
সূত্রটি আরও জানান, চোরদের সাহস ছিল কিন্তু যারা তিন বছর পর জিডি করেছেন তাদের সাহস নেই কারণ সাহস কিংবা সৎ সাহস থাকলে চুরি পরবর্তী সরাসরি মামলা করে দিলেই চোর কারা সেটা বেরিয়ে আসত।যেখানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মত একটি সরকারী প্রতিষ্ঠানে নির্মাণ কাজ ঘুছিয়ে দেওয়ার পরপরই কোটি টাকার সম্পদ চুরি হয়ে যায় সেখানে তাৎক্ষনিক কোন পদক্ষেপ না নিয়ে দীর্ঘ তিন বছর পর কেন জিডি করতে হয় এটাই বড় প্রশ্ন এবং সন্দেহাতীত ভাবে সন্দেহই শুধু থেকে যাচ্ছে জনমনে ।
জনমনে একটাই কথা চোর কোন ভাবেই বহিরাগত নয় কারণ একটি সরকারী প্রতিষ্ঠানে যেখানে একটি বাল্ব নষ্ট হয়ে গেলে সেটারও জবাবদীহিতা আছে সেখানে চুরির নামে কোটি টাকার সম্পদ হাতিয়ে নেওয়ার পরও তাৎক্ষনিক একটি জিডি পর্যন্ত হয়নি। জিডি হয়েছে তিন বছর পর এটা কোনো সুনির্দিষ্ট জবাবদিহিতা হতে পারে না । এর নেপথ্যে রয়েছে , একটি সিন্ডিকেট চক্র এবং তারা বহাল তবিয়তে এখনও আছে। যারা ধীরে ধীরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সর্বনাশ সাধনে লিপ্ত রয়েছে।পর্যবেক্ষক মহল বলেছেন, এই ঘাপটি মারা সম্পদ আত্মসাৎকারী দূর্নীতিবাজদের অবিলম্বে সনাক্ত করে গ্রেফতার করা হোক অন্যথায় মচিমহার ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুন্ন হবে।