এক গৃহবধূকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
পাখি আক্তার:বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় বৃদ্ধ শ্বশুর-শাশুড়িকে খাবার না দেওয়া,ঘর থেকে বের করে দেওয়া ও মারধর করায় মনিকা বৈরাগী নামে এক গৃহবধূকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।বুধবার (৩০ অক্টোবর)সকালে দণ্ডপ্রাপ্ত মনিকা বৈরাগীকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। মনিকা বৈরাগী উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের আস্কর গ্রামের বাসিন্দা খোকন বৈরাগীর স্ত্রী। এরআগে মঙ্গলবার(২৯ অক্টোবর)রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও)ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিপুল চন্দ্র দাস এ সাজা দেন।
ইউএনও বিপুল চন্দ্র দাস জানান,দণ্ডপ্রাপ্ত মনিকার বিরুদ্ধে তার শ্বশুর-শাশুড়িকে খাবার না দেওয়া,ঘর থেকে বের করে দেওয়া ও মারধর করায় অভিযোগ রয়েছে।গত ২৩ অক্টোবর শ্বশুর ভবসিন্ধু বৈরাগী তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন।এর পর মনিকা বৈরাগীকে কার্যালয়ে আসতে বলে চিঠি দেওয়া হয়,কিন্তু তিনি আসেননি।এ কারণে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সমাজসেবা কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের নিয়ে ভবসিন্ধুর বাড়িতে যাই।সেখানে গিয়ে তার অভিযোগ শুনি।এসময় মনিকা বাড়িতেই ছিলেন।তাদের মধ্যে মীমাংসার চেষ্টা করি।কিন্তু মনিকা কোনোভাবেই তা মেনে নিতে পারেননি।এছাড়া ওই বাড়িতে প্রায় অর্ধশত ঘর থাকলেও কেউ মনিকার সামনে কথা বলতে সাহস পাননি।পরে মনিকাকে কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।এসময় ওই বাড়ির লোকজন সবকিছু খুলে বলেন,যার ভিডিও ধারণও করা হয়।
এদিকে কার্যালয়ে এনে মনিকার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সে অকপটে তা স্বীকার করেন।পরে তাকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।অপরদিকে বৃদ্ধ দু’জনকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের খারাপ ব্যবহার কিংবা ঘর থেকে বের করে দিতে চাইলে প্রশাসনকে অবহিত করতে বলা হয়েছে বলেও জানান বিপুল চন্দ্র দাস।
মনিকার শ্বশুর ভবসিন্ধু বৈরাগী সাংবাদিকদের জানান,ছয় মাস ধরে তাকে ও তার স্ত্রী বিমলা অধিকারীকে ঘরের বারান্দায় থাকতে দেয় গৃহবধূ মনিকা এবং তিনবেলা খাবার দেওয়াও বন্ধ করে দেয়। রান্নাঘরে রান্না করতে গেলে গালাগাল করে। এছাড়া আমাদের মারধরও করে। বিষয়টি আমার ছেলে খোকন জানলেও সে বউয়ের ওপর কোনো কথা বলতে পারে না। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে চলছে। খাবার না দেওয়ায় শামুক সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে যা পাই তা দিয়ে কোনোমতে আমাদের দু’জনের চলে যায়।সম্প্রতি মনিকা আমাদের ঘর থেকে বের করতে উঠে পড়ে লেগেছে। এ কারণে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে আসছে সে। এজন্য বিষয়টি লিখিতভাবে ইউএনও স্যারকে জানাই যোগ করেন ভবসিন্ধু বৈরাগী।