সংকটের মেঘ কেটে যাক দ্রুত।
আলোকিত বার্তা:সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের জাতীয় বেতন স্কেলের দশম ও সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডের দাবি পূরণ না করা হলে আসন্ন প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী(পিইসি)পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।শুধু তাই নয়,দাবি আদায় না হলে স্কুলগুলোর অন্যান্য বার্ষিক পরীক্ষা বর্জনের পাশাপাশি ক্লাসরুমে তালা লাগানোর হুমকিও দিয়েছেন শিক্ষকরা।বলার অপেক্ষা রাখে না,এর ফলে সঙ্গত কারণেই পিইসি পরীক্ষা নিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।এ অনিশ্চয়তা দ্রুত দূর করা উচিত।উল্লেখ্য,আগামী ১৭ নভেম্বর শুরু হওয়া পিইসি পরীক্ষায় অন্তত ৩০ লাখ শিক্ষার্থীর অংশ নেয়ার কথা।অবশ্য আশা জাগানিয়া সংবাদ হল,সংকট সমাধানে শিক্ষকদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চলছে এবং কয়েকদিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিক আলোচনাও হবে,যার মধ্য দিয়ে সমাধানের পথ বেরিয়ে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আমরাও চাই,সংকটের মেঘ কেটে যাক দ্রুত।কারণ,গুরুত্বপূর্ণ পিইসি ও অন্যান্য ক্লাসের বার্ষিক পরীক্ষা নিয়ে কোনো ধরনের অনিশ্চয়তা দেখা দিলে তার ফল মোটেই শুভ হবে না।বলার অপেক্ষা রাখে না,প্রাথমিক শিক্ষা হচ্ছে জাতির ভিত্তিস্তর।বস্তুত এ বাস্তবতা মেনে নিয়েই ১৯৯৩ সাল থেকে দেশে প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে সরকার বিনামূল্যে বই বিতরণ, শিক্ষা উপবৃত্তি, অবৈতনিক শিক্ষা ও দুপুরে খাদ্য ব্যবস্থাসহ নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
দেশের শতভাগ জনগোষ্ঠীকে শিক্ষিত করার লক্ষ্যে সরকারের এ ধরনের পদক্ষেপ অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার।তবে এসব কার্যক্রমের পাশাপাশি শিক্ষকদের চাওয়া-পাওয়ার বিষয়গুলো নিয়েও ভাবতে হবে।শিক্ষকরা হচ্ছেন জ্ঞান ও বিদ্যাদাতা।ঘরে ঘরে জ্ঞান-প্রদীপ প্রজ্বলনে তাদের রয়েছে বিশাল ভূমিকা।মানুষ গড়ার কারিগর-শিক্ষকদের বৈষম্যের বৃত্তে বন্দি রেখে শিক্ষাক্ষেত্রে শতভাগ সাফল্য অর্জনের আশা দুরাশায় পরিণত হওয়াটাই স্বাভাবিক। বিলম্বে হলেও এ বিষয়টি উপলব্ধি করে সরকার বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণ করেছে।
চাকরি জাতীয়করণের সুফল পাওয়ার পাশাপাশি শিক্ষকরা যাতে বঞ্চিত না হয়,সেদিকেও মনোযোগ দেয়া উচিত।সেইসঙ্গে দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও পর্যাপ্ত শিক্ষা উপকরণ সরবরাহের পাশাপাশি চাহিদা অনুযায়ী যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ করাও জরুরি।তবে শিক্ষকদেরও অনেক কিছু করণীয় রয়েছে।পাঠদানের ক্ষেত্রে তাদের আরও দায়িত্বশীল,ন্যায়নিষ্ঠ ও উন্নত মানসিকতার পরিচয় দেয়া উচিত। বস্তুত প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে আমাদের স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটাতে হলে সরকার-শিক্ষক উভয়কেই স্ব-স্ব ক্ষেত্রে শতভাগ আন্তরিক হতে হবে।