টুঙ্গীবাড়িয়ায় মেয়ে দিলো টাকা বসত ঘরে ভাই ও বাবা দিলো আগুন - Alokitobarta
আজ : শুক্রবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টুঙ্গীবাড়িয়ায় মেয়ে দিলো টাকা বসত ঘরে ভাই ও বাবা দিলো আগুন


রেদওয়ান শাওন:বরিশাল সদর উপজেলার টুঙ্গিবাড়িয়া ইউনিয়নের মোল্লার হাওলা গ্রামের এক অসহায় পরিবারের বসত ঘর পরিকল্পিতভাবে পুড়িয়ে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যা’নিয়ে গত শুক্রবার ও শনিবার দৈনিক ভোরের অঙ্গীকার, দৈনিক তারুন্যের বার্তা পত্রিকাসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। মোল্লার হাওলা গ্রামের ফজলে আলম হাওলাদারের মেয়ে লিপি বেগম বলেন গত ২০০৫ সালে আমার বাবা ফজলে আলম হাওলাদারের চিকিৎসার জন্য আমার মামা শশুরের কাছ থেকে এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে দেনা করে কয়েক লক্ষ টাকা দেই ছোট ভাই আতিকুর রহমান ও সোহাগ হাওলাদারের নিকট। বাবা সুস্থ হলে টাকা ফেরত দেয়ার কথা থাকলেও পরবর্তিতে আমার বাবা সুস্থ হলে পাল্টি মারে আমার বাবা ও ভাইয়েরা। তারা সাফ জানিয়ে দেয় যে, আমাকে তারা কোন টাকা ফেরত দিবেনা। যা নিয়ে আমি থানায় একটি অভিযোগ করি এবং মামলা করি। লিপি বেগম জানায়, যার সাক্ষী হিসেবে ছিলো অমর মেম্বার, আমার মামা কাজী বজলুর রহমান, কাজী গিয়াস উদ্দিন, এবং আমার দুলাভাই লোকমান হাওলাদার।

কিন্তু আমার বাবা এবং আমার দুই ভাই আমার সব উপকার ভূলে গিয়ে অকৃতজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছে। শুধু তাই নয় – আমার বাবা এবং ভাইরা আমাকে মেরে ফেলার জন্য রিতিমত ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। এদিকে খোজঁ নিয়ে জানা যায়- গত বুধবার দিবাগত গভীর রাত আনুমানিক ১২.৩০ মিনিটে অগ্নিসংযোগ করে ঘরে আগুন লাগিয়ে মেরে ফেলতে চেয়েছিল বলেও অভিযোগ উঠেছে। ক্ষতিগ্রস্থ লিপি বেগম তাৎক্ষনিক বন্দর থানায় ফোন করলে বুধবার রাতেই বন্দর থানার ডিউটিরত পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার সুত্রে জানাগেছে, মোল্লার হাওলা গ্রামের হাওলাদার বাড়ির ফজলে আলম হাওলাদার ও তার ২ই পুত্র সোহাগ, আতিকসহ বেশ কয়েকজন তাদের বসত ঘরে আগুন ধরিয়ে দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। স্হানীয় সুত্রে জানাগেছে একই গ্রামের জসিম হাওলাদারের সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ ফজলে আলম হাওলাদার ও তার ছেলেদের সাথে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলছিলো। সেই জমি জমার বিরোধকে কেন্দ্র করেই জসিম হাওলাদারের ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। ক্ষতিগ্রস্থ জসিম হাওলাদারের স্ত্রী লিপি বেগম (৩২) বলেন, গত বুধবার রাত ৯টা ৩০ মিনিটের সময় আমি আমার ছেলে মেয়েদের নিয়ে ঘূমিয়ে পড়ি। সেই দিন রাত আনুমানিক সারে ১২ টার দিকে আমি ঘূমের ঘরে ধোয়ার গন্ধ পাই এবং হঠাৎ জেগে দেখি আমার ঘরের উত্তর পাশের বারান্দায় আগুন জ্বলতেছে। আমি ডাক চিৎকার করলে পাশের বাড়ির লোকজন এসে পানি দিয়ে আগুন নিভানোর চেষ্টা করে আগুন নিভিয়ে ফেলে।

আমি দরজা খুলে টর্চ লাইট মারলে আমার আপন ভাই সোহাগ, আতিক ও আমার বাবাকে পালিয়ে যাইতে দেখি। লিপি বেগম আরো বলেন, আমি যখন তাদের দিকে লাইট মারছি তখন দেখি ২ জনের মাথায় টাক আছে। এতেই আমি সিওর হলাম যে এরা আমার বাপ ও ভাই। তিনি আরও জানান, বিভিন্ন সময় আমার মেয়েদের পুরিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয় আমার ভাইয়েরা। এর প্রতিবাদ করায় বুধবার রাতে আমার বসতঘরে আগুন লাগিয়ে আমাদেরকে মেরে ফেলতে চেয়েছিলো তারা। গত ২৫-১০-২০১৯ইং তারিখ বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের বন্দর থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে বলে জানান লিপি বেগম। এবিষয় অভিযুক্ত সোহাগ হাওলাদারকে ফোন করলে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানিনা। তিনি আরও বলেন আমার বাবাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে কিন্তু আমার বাবা বাড়িতেই ছিলোনা। লিপি বেগমকে ফোন করলে তিনি বলেন, আমার ঘরে আমার ভাই ও বাবাই আগুন দিয়েছে। কারন আমাদের আর কোন শত্রু ছিলোনা। এই অগ্নিকান্ড পরিকল্পনা করেই করা হয়েছে। এ বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি শুনে অফিসারদের পাঠিয়েছি এবং অভিযোগও পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত চলতেছে যদি সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারটি প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে ব্যাবস্থা নেওয়ার আহব্বান জানান।

Top