ভূয়া সাংবাদিকে ছেয়েগেছে বরিশালের পূর্বাঞ্চল - Alokitobarta
আজ : শুক্রবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভূয়া সাংবাদিকে ছেয়েগেছে বরিশালের পূর্বাঞ্চল


স্টাফ রিপোর্টার:সাংবাদিকতা হলো একটি মহান পেশা। এই পেশা জগৎটা হলো মহা-পবিত্র সংবাদের পূণ্য ভূমি। আর সাংবাদিকদের হতে হবে সৎ এবং সাহসী কলম সৈনিক। একজন সাংবাদিক বা সংবাদকর্মীর বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করাই প্রধান প্রতিপাদ্য বিষয়। একজন সাংবাদিক কারো বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিতে গেলে হুবহু বক্তার কথাটাই তুলে ধরতে হবে। একটা শব্দও বানিয়ে লেখার সুযোগ নেই। প্রকৃত সাংবাদিকদের কোন বন্ধু থাকে না। আগেকার দিনে শুনতাম সাংবাদিকদের নাকি সাধারন জনগন চিনতে পারতো না, অর্থাৎ সাংবাদিকরা অত্যন্ত আড়ালে বিড়ালে, ঘোপে-ঘাপে থেকে অত্যন্ত গোপনে সংবাদ সংগ্রহ করতো। কিন্তু বরিশালের পূর্বাঞ্চলে বর্তমানে কিছু কার্ডধারি নব্য সাংবাদিকরা নিজেকে সাংবাদিক জাহির করার জন্য বুকে, পিঠে, হোন্ডার সামনে সাংবাদিক অথবা প্রেস শব্দটা লিখে এদ্বারে ওদ্বারে ঘূরে বেরায়। অথচ অনেকের সাংবাদিক পেশা সম্পর্কে ধারনার ছিটেফোটাও নেই। বলতে গেলে সাংবাদিক হওয়ার যোগ্যতাও নেই অনেকের। একজন সংবাদ কর্মী হতে হলে সৎ সাহসী ভদ্র এবং শিক্ষিত হতে হবে। কিন্তু হাতে গোনা দু একজন বাদে বলতে গেলে এসএসসি পাশ কেউ করছে বলে মনে হয়না। কথায় আছে শিক্ষিত লোক খারাপ হলেও একজন অমুর্খ লোকের থেকে অনেক ভালো। কারন তাদের মধ্যে শিক্ষার ছিটেফোটা নেই বলেই সাংবাদিক পেশার মতো মহৎ পেশাটাকে বেছে নিয়ে সাধারন মানুষকে নিউজ করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি, টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

বর্তমানে সাধারন জনগন কোন সাংবাদিকের কাছে ভয়েও তার পরিচয় পত্র দেখতে চান না। এই ভয়ের সুযোগ নিয়ে অনেকে ভূয়া সাংবাদিক সেজে সাধারন মানুষকে সংবাদ প্রকাশের ভয় দেখিয়েও টাকা পয়সা হাতিয়ে নেন এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে। যাদেরকে এক কথায় বলা হয় “হলুদ সাংবাদিক”। যারা নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘূরে বেড়ায়। তারা অনেকেই জানে না হলুদ সাংবাদিকতা কি ? মিডিয়া জগৎটা একটা ভিশন। তার সবকিছু হবে স্বচ্ছ, যার মাধ্যমে সবকিছু দেখা যাবে, সত্য ঘটনা প্রকাশ পাবে এবং ন্যায়ের পক্ষে কথা বলবে। বর্তমানে দেশে পুরো মিডিয়া পরিবারটাই উল্টোপাল্টা। বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে রকম পরিবারতন্ত্র সৃষ্টি হয়েছে ঠিক তারই পিচ্ছিল পথ বেয়ে মিডিয়া পরিবারেও সৃষ্টি হয়েছে পরিবারতান্ত্রিক অপো সাংবাদিকতা। প্রশিক্ষনে বলা হয় সাংবাদিক কোনো দলের হতে পারেনা। আজকে দেখা যায় সব উল্টো হয়ে গেছে। প্রেস ক্লাবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাংবাদিকরা সংবাদ সম্মেলন করেন। এখানে একটি প্রশ্ন থেকে যায়। স্ব-স্ব দলের সাংবাদিকরা নিজ নিজ দলের জনপ্রিয় কথা ব্যাতীত ভিন্ন লাইনের গান কি গাইবেন ? এভাবে চলতে থাকলে কারা হবে নিরপেক্ষ সাংবাদিক। অপরদিকে নিরপেক্ষ সাংবাদিক খুজে পাওয়া না গেলে বস্তুনিষ্ট সংবাদ লিখবে কারা। সংবাদ প্রকাশে সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রী স্বাধীনভাবে সংবাদ প্রকাশের পক্ষে বক্তব্য দিলেও এখনও সাংবাদিকদের ও সংবাদপত্র গুলোর সংবাদ প্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতা পায়নি। সাংবাদিকতা একটি সম্মানের ও মহৎ পেশা। বর্তমানে বাংলাদেশে পত্রিকার সংখ্যা পূর্বের তুলনায় কয়েকগুন বেড়ে গেছে। যার ফলে এখন তৃনমূলে পর্যন্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অসংখ্য সাংবাদিক। পত্রিকার মালিকগন যেমনি পত্রিকা প্রকাশকে একটি শক্তিশালী ব্যবসা হিসেবে বেছে নিয়েছেন তেমনি ঐসব পত্রিকার সাংবাদিক এবং সংবাদ কর্মীর ব্যবসাও জমজমাট করে তুলেছেন। তবে পত্রিকার সম্পাদকরাই পারে হলুদ সাংবাদিকতা, অসৎ সাংবাদিকতা, টাকার বিনিময়ে সংবাদ প্রকাশ করা ইত্যাদি দূর্নীতি থেকে সাংবাদিকদের ফেরাতে। সাংবাদিক নিয়োগের ক্ষেত্রেও যাচাই বাছাইয়ের প্রয়োজন রয়েছে।

তাই জন সাধারন, সুসীল সমাজ, পত্রিকার মালিকদের অনুরোধ করে বলেছেন যাকে তাকে টাকার বিনিময়ে বা পত্রিকা বিক্রির বদলে সাংবাদিক বা সংবাদকর্মী নিয়োগ দিবেন না। এতে হলুদ সাংবাদিকতার সম্ভাবনা থাকে অনেক বেশি। একজন সাংবাদিক বা সংবাদপত্র থেকে পাঠকরা প্রতিদিন দেশের এবং বিশ্বের নতুন নতুুন খবরসহ জানা অজানা অনেক শব্দ ও কথা শিখে নিতে পারে। সাংবাদিকরা মানুষকে প্রতিদিন নতুন নতুন জ্ঞান দান করে। অনুসন্ধান করলে দেখা যায় বরিশালের মতো ছোট্ট একটি শহর থেকে প্রতিদিন প্রকাশিত হয় প্রায় ২৭-৩৫ টির মতো দৈনিক ও ৫-৮ টি অনলাইন পত্রীকা। তারপরেও যেন মনে হয় আরো দরকার। দেখা যায় উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে যেসব সাংবাদিক বা সংবাদ কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয় এর অনেকেরই ভাষা জ্ঞান জানা নাই। এমনও সাংবাদিকদের নিয়োগ দেওয়া হয় যারা মাধ্যমিক শিক্ষার গন্ডিই পেরোয়নি। সুশীল সমাজের অনেকেই বলেন সাংবাদিকদের প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা উচিত। এরা কোমরে একটা ক্যামেরা ঝুলিয়ে আর একটা মটর সাইকেলে স্টীকার লাগিয়ে ভূংভাং করে নিজেকে সাংবাদিক হিসাবে জাহির করে, অথচ অনেককে ইংরেজিতে নিজের নাম লিখতে দিলে এমনকি সাংবাদিকের ইংরেজি জার্নালিষ্ট লিখতে কলম ভাঙ্গে। এই রিপোর্ট লেখা প্রতিবেদক সম্পাদকদের দৃষ্টি আকর্ষন করে বলেছেন এসব ভূইফোর সাংবাদিকদের জন্য পত্রীকার ভাবমুর্তি নষ্ট করছে হলুুদ সাংবাদিক’রা। আগে থেকেই সাবধান হন, অন্যথায় আপনাদের পত্রিকার বদনাম হতেই থাকবে। এই ভূয়া সাংবাদিকদের জ্বালায় এলাকাবাসি অতিষ্ট। তারা ভূয়া সাংবাদিকদের হাত থেকে বাচতে প্রসাশনের নজর দেয়া দরকার বলে মনে করেন। এ বিষয়ে বরিশাল মেট্টোপলিটন পুলিশ বন্দর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আনোয়ার হোসেন তালুকদারকে ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননী।

Top