বিন্দু বিন্দু রক্ত দিয়ে গড়ে তুলেছিলে আমার স্বদেশ - Alokitobarta
আজ : বৃহস্পতিবার, ২০শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিন্দু বিন্দু রক্ত দিয়ে গড়ে তুলেছিলে আমার স্বদেশ


আলোকিত বার্তা:হে বঙ্গবন্ধু/নিষ্ঠুর বুলেটের আঘাতে নিহত হয়েছো শুনে/পেরিয়েছি আমি এক অস্থির সময়/খোলা জানালা দিয়ে সুদূর আকাশের দিকে/পলকহীন তাকিয়ে থেকেছি/উত্তরহীন এক প্রশ্ন নিয়ে/বিন্দু বিন্দু রক্ত দিয়ে গড়ে তুলেছিলে স্বদেশ তোমার/কিন্তু এ কোন প্রতিদান পেলে তুমি।১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হওয়ার পর নয়াদিল্লির সাহিত্য একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত মনিপুরের অন্যতম শীর্ষ কবি এলাংবম নীলকান্ত’র লেখা ‘শেখ মুজিব মহাপ্রয়াণে’ নামক কবিতার চরণ এগুলো।জাতির পিতা ধানমণ্ডি-৩২ নম্বরের নিজ বাড়িতে বিপথগামী উচ্ছৃঙ্খল সেনা সদস্যদের হাতে নির্মমভাবে শহীদ হয়েছিলেন। বৃষ্টিঝরা শ্রাবণের সেই রাতে বৃষ্টি নয়, ঝরেছিল রক্ত।ঘাতকের বুলেটের আঘাতে তার বাংলার ছাপান্ন হাজার বর্গমাইলের মতো বিশাল বুক থেকে রক্ত ঝরেছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর সেই রক্ত যেন রক্তজবার মতো ফুটে আছে প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে। তাই তো আগস্ট মাস বাঙালি গভীর মর্মস্পর্শী শোক ও শ্রদ্ধায় স্মরণ করে।

সেই শোকাবহ আগস্টের দশম দিন আজ। ১৯৭৫ সালের ১০ আগস্ট ছিল রোববার। তখন রোববার ছিল সাপ্তাহিক ছুটির দিন।বঙ্গবন্ধুর জন্ম হয়েছিল বাঙালির মুক্তির তাগিদে। বাঙালির মুক্তি ও তাদের জন্য একটি স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে সারাটা জীবনই জেলজুলুম সহ্য করেছেন। পাক শাসকদের খনন করা কবরের পাশে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতার গান গেয়েছেন। স্বাধীনতার পরে যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন আলোর নিশানা দেখিয়ে।৪৭, ৫২, ৬৯, ৭০সহ বিভিন্ন সময়ে বারবার ফিরে এসেছিলেন মৃত্যুর দ্বার হতে। কিন্তু পাকিস্তানি হায়েনারা যা করতে পারেনি, সেই কাজটিই অত্যন্ত ঠাণ্ডা মাথায় করেছে পাপিষ্ঠ ঘাতকরা। আঁধার রাতের নিদ্রাচ্ছন্ন নগরীর নীরবতাকে ট্যাঙ্ক-মেশিনগানের গর্জনে ছিন্নভিন্ন করে ওরা সংহার করে বঙ্গবন্ধুকে।এরপর তার রক্তচিহ্ন মুছে দিতে চেয়েছিল ঘাতকরা। কিন্তু ওরা ব্যর্থ হয়েছে। প্রতিটি রক্ত কণা থেকে এক একটি মুজিব সৃষ্টি হয়ে আজ বাংলার ঘরে ঘরে। তিনি মিশে আছেন বাংলার মাটি, আলো, বাতাস সবকিছুর সঙ্গে।

তাই তো অন্নদা শংকর রায় লিখেছেন- ‘যতদিন রবে পদ্মা মেঘনা/গৌরি যমুনা বহমান/ততদিন রবে কীর্তি তোমার/শেখ মুজিবুর রহমান।/দিকে দিকে আজ অশ্রুগঙ্গা/রক্তগঙ্গা বহমান/নাই নাই ভয় হবে হবে জয়/জয় মুজিবুর রহমান।বঙ্গবন্ধুর আজীবনের স্বপ্ন ছিল বাংলার স্বাধীনতা ও বাঙালির জাতিসত্তার প্রতিষ্ঠা। শৈশব-কৈশোর থেকে তিনি এই আদর্শ নিয়েই বড় হয়ে ওঠেন। নিজেই নিজেকে প্রস্তুত করে তোলেন। তার এই চারিত্রিক দৃঢ়তার পেছনে ছিল গভীর অধ্যয়ন, জানা-চেনা-শোনা ও দেখার গভীর অন্তদৃষ্টি। তিনি হৃদয়ের আবেগকে যথেষ্টভাবে ধারণ করতে সমর্থ হন। এর পেছনে ছিল মানুষকে ভালোবাসা ও সাহায্য করার জন্য তার দরদি মন।

Top