বরিশালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরিবহনশ্রমিকদের সংঘর্ষ - Alokitobarta
আজ : মঙ্গলবার, ১৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বরিশালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরিবহনশ্রমিকদের সংঘর্ষ


আলোকিত বার্তা :হাফ ভাড়াকে কেন্দ্র করে বরিশালের কেন্দ্রীয় নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে বাসশ্রমিকদের সঙ্গে ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে দুই পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক লোকজন আহত হন। এ সময় অর্ধশতাধিক বাস ভাঙচুর করা হয়। ঘটনার জন্য একে-অপরকে দায়ী করেছেন।শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে শুরু হওয়া সংঘর্ষ রাত ৯টা পর্যন্ত চলে। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী আসলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এ ঘটনার বিচার দাবিতে রবিবার ধর্মঘট ডেকেছেন পরিবহনশ্রমিকরা।নগরের বাসিন্দা আইয়ুব আলীসহ একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে আসেন। এ সময় সেখানে থামিয়ে রাখা বাসগুলোতে ভাঙচুর শুরু করেন তারা। পরিবহনশ্রমিকরা প্রতিরোধে এগিয়ে এলে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা দুই পক্ষের মধ্যে এ পরিস্থিতি চলে। এ সময় একটি বাসে আগুন দেওয়া হলে তাৎক্ষণিক নিভিয়ে ফেলা হয়। পরে শিক্ষার্থীরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হলেও পুরো বাস টার্মিনাল ও আশপাশ এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

বিএম কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, হাফ ভাড়া দিয়েই তারা সব সময় বাসে চলাচল করেন। শনিবার বিকালে মুলাদী থেকে বিএম কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী বরিশাল আসার পথে হাফ ভাড়া দিতে চাইলে তাদের পরিবহনশ্রমিকরা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। খবর পেয়ে অন্য শিক্ষার্থীরা বাস টার্মিনালে জড়ো হয়ে শ্রমিকদের বিচার দাবি করলে উল্টো শ্রমিকরা তাদের ওপর হামলা চালান। তাদের হামলায় ২৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

বিএম কলেজের শিক্ষার্থী বাপ্পী ও টিটু জানান,হাফ ভাড়া দিলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন শ্রমিকরা। পরে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে বাস টার্সিনালে গেলে তাদের ওপর আবার হামলা চালান তারা।

নথুল্লাবাদের পরিবহন শ্রমিকনেতা আরজু মৃধা বলেন,কলেজ বন্ধের দিনেও হাফ ভাড়া নিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে এক পরিবহনশ্রমিকের বিরোধ হয়। এর জের ধরে সন্ধ্যায় বিএম কলেজের কয়েকশ শিক্ষার্থী নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ডে এসে বাসে ভাঙচুর চালান। একটি বাসে আগুন দেন। শিক্ষার্থীরা শ্রমিকদের ওপর হামলা চালান। এতে ৩০ জন শ্রমিক আহত হন।

রাত ৯টার দিকে বিএম কলেজের উপাধ্যক্ষ রাশেদুজ্জামান ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নিয়ে যান। রবিবার এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে বাস মালিক গ্রুপ শ্রমিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং শিক্ষার্থীদের নিয়ে বসবেন বলেও জানান উপাধ্যক্ষ।

বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি মোশারফ হোসেন বলেন,শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা সমাধানের চেষ্টা করছিলাম আমরা। কিন্তু হঠাৎ করে অনেক শিক্ষার্থী একত্রিত হওয়ায় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে গেছে। এতে আমাদের অনেকগুলো বাস ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় শ্রমিকরা রবিবার সকাল থেকে বাস ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। আমরা আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি।’

বরিশাল এয়ারপোর্ট থানার ওসি আল মামুন উল ইসলাম বলেন,শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। দুই পক্ষের অনেকে আহত হয়েছেন। তবে এখনও কোনও পক্ষ থানায় অভিযোগ দেয়নি। বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা চলছে।

Top