ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বেশি লুটপাট হয়েছে



মোহাম্মাদ নাসির উদ্দিন:ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে এই ব্যাংকটিতেই বেশি লুটপাট হয়েছে। ওইসব ঋণ এখন খেলাপি হচ্ছে।ঋণ নবায়ন ও অবলোপন করেও খেলাপি ঋণের ঊর্ধ্বগতি থামাতে পারছে না সরকারি খাতের চারটি বাণিজ্যিক ব্যাংক। এর মধ্যে জনতা ব্যাংকে খেলাপি ঋণ বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। গত জুন পর্যন্ত চার সরকারি ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকায়। গত জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত খেলাপি ঋণ অবলোপন করেছে ১৪ হাজার ৪২২ কোটি টাকা ও খেলাপি ঋণ নবায়ন করেছে এক হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা। তারপরও ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ না কমে বরং বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
দেখা যায়, গত ডিসেম্বরে ওই চার ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল এক লাখ ৩৩ হাজার ২৫ কোটি টাকা। গত জুনে তা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৪৬ হাজার ৩৬২ কোটি টাকায়। ছয় মাসের ব্যবধানে এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৩ হাজার ৩৩৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকে খেলাপি ঋণ ১৯ হাজার ৮১৮ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২০ দশমিক ১৩ শতাংশ। জনতা ব্যাংকে খেলাপি ঋণ ৭২ হাজার ১০৭ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। যা তাদের মোট ঋণের ৭২ শতাংশ। গত সরকারের আমলে এই ব্যাংকে নজিরবিহীন লুটপাট হয়েছে। এর মধ্যে এস আলম গ্রুপের ১০ হাজার কোটি টাকার ঋণ খেলাপি। বেক্সিমকো গ্রুপের খেলাপি ঋণ প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা। এ্যানন টেক্স গ্রুপের খেলাপি ঋণ ১০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। অগ্রণী ব্যাংকে মোট খেলাপি ঋণ ৩২ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা। যা তাদের মোট ঋণের ৪৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ। রূপালী ব্যাংকে খেলাপি ঋণ ২২ হাজার ১৮০ কোটি টাকা। যা তাদের মোট ঋণের ৪৪ শতাংশ। এসব ঋণের বড় অংশই আদায় অযোগ্য ঋণে পরিণত হয়েছে।
খেলাপি ঋণের ঊর্ধ্বগতি কমাতে চার ব্যাংকই ঋণ নবায়ন ও অবলোপনে জোর দিয়েছে। কিন্তু এসব করেও খেলাপি ঋণের ঊর্ধ্বগতি কমাতে পারছে না। গত জানুয়ারি থেকে জুন এই ছয় মাসে চার ব্যাংক ১৪ হাজার ৪২২ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ অবলোপন করেছে। এক হাজার ৪৪৫ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ নবায়ন করেছে। চার ব্যাংকের মধ্যে সোনালী ব্যাংক ছাড়া বাকি তিনটি ব্যাংকেরই প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে। এর মধ্যে জনতা ব্যাংকের ঘাটতি ৪৬ হাজার কোটি টাকা, অগ্রণী ব্যাংকের সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা এবং রূপালী ব্যাংকের ১০ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা। চারটি ব্যাংকের মধ্যে জনতা ব্যাংকে লোকসান হয়েছে। অগ্রণী ব্যাংক গত ডিসেম্বরে লোকসানে থাকলেও জুনে লাভজনক হয়েছে। সোনালী ও রূপালী ব্যাংক লাভে রয়েছে।