২২ ভাগ নারী যৌন নির্যাতনের শিকার পোশাক কারখানায়
আলোকিত বার্তা:তৈরি পোশাক কারখানায় কর্মরত নারী শ্রমিকদের ২২.৪ ভাগ যৌন হয়রানির শিকার হয় বলে জানিয়েছে ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’।মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’ ও ‘কর্মজীবী নারী’ সংগঠন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। গবেষণাটি পরিচালনা করেছে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ)। গবেষণাটি ঢাকার মিরপুর ও চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ ও বায়েজিদ বোস্তামী রোডে অবস্থিত ২২টি পোশাক কারখানায় পরিচালিত হয়েছে।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তৈরি পোশাক কারখানায় যৌন নির্যাতন বলতে শতকরা ৭৯ জন নারী ও ৮২দশমিক ৫৬ জন পুরুষ মনে করেন, নারীর দেহে অপ্রত্যাশিত স্পর্শই হলো যৌন নির্যাতন। কর্ম ক্ষেত্রে নারী শ্রমিকরা যে ধরনের যৌন হয়রানির শিকার হয় এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৪২ দশমিক ৩৩ শতাংশ হচ্ছে কামনার দৃষ্টিতে তাকানো, সংবেদনশীল অঙ্গে কোনো কিছু নিক্ষেপ করা শতকরা ৩৮ দশমিক ৯২ ভাগ, কাজ বুঝানোর বা কথা বলার সময় হাত-পা শরীর স্পর্শ করা শতকরা ২৮.৫৭ ভাগ, এছাড়াও আজেবাজে গালি দেয়া, চাকরিচ্যুতির হুমকি, অঙ্গভঙ্গি, পদোন্নতির কথা বলে সম্পর্কের প্রস্তাবসহ ইত্যাদি।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি হওয়ার কারণ হলো- অপরাধের কোনো রকম শাস্তি না হওয়া,কারখানা কর্তৃক যৌন হয়রানিকে কোনো অপরাধ বলে মনে না করা, মধ্যরাত পর্যন্ত অভার টাইম করানো, সামাজিক কারণ হিসেবে মনে করে নারীরা দুর্বল, নারীরা প্রতিবাদ করে না প্রভৃতি।এতে বলা হয়, হাইকোর্টের নির্দেশনা আছে যৌন হয়রানি সম্পর্কে,কিন্তু এ সম্পর্কে শ্রমিকরা খুবই কমই জানে। দেখা গেছে শতকরা ৭৯ দশমিক ৯ জন নারী শ্রমিক এবং শতকরা ৭৯ জন পুরুষ শ্রমিক এ সম্পর্কে জানেনা। যারা জানেন তাদের ধারণা খুব একটা স্বচ্ছ নয়।আলোচনা সভায় উপস্থিত হয়ে সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি বলেন,নারী শ্রমিকরা যৌন হয়রানি সম্পর্কে অভিযোগ করেন না!তার কারণ হলো চাকরি হারানোর ভয়।তিনি বলেন, যৌন হয়রানি বিষয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা আছে সে সম্পর্কে শ্রমিকরা খুবই কম জানে এ বিষয়ে জানাতে হবে। আর সবচাইতে বড় কথা হলো মানবিক মূল্যবোধ। এটা যে জাতির মধ্যে নাই তারাই নারীদের যৌন হয়রানি করে থাকে।এমজেএফ এর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনামের সভাপতিত্বে সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন সুইডিশ অ্যাম্বাসি সেকেন্ড সেক্রেটারি ইলভা, কর্মজীবী নারীর নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া রফিকসহ প্রমুখ।