বাঙালি জাতির উন্মেষ শেরেবাংলার হাত ধরেই



আলোকিত বার্তা:মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক বলেছেন,শেরেবাংলা এ.কে.ফজলুল হকের হাত ধরেই বাঙালি জাতির উন্মেষ হয়েছে। তার সুযোগ্য নেতৃত্ব বাঙালি জাতিকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শিখিয়েছে।তিনি বলেন,বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং তাদের স্নেহধন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবে। ব্রিটিশ আমলে মুসলমানদের প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ করা হতো। এ সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে শেরেবাংলা আজীবন সংগ্রাম করেছেন।জাতীয় নেতা শেরেবাংলার ৫৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার তার কর্মময় জীবনের ওপর আলোচনা, মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও মাজার জিয়ারত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন,শেরেবাংলা আজীবন গরীব,দুঃখী ও মেহনতি মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। মানুষের প্রতি তার ভালবাসা ছিল গভীর। তিনি অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। একাধারে তিনি সর্বভারতীয় কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক আবার মুসলিম লীগের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন।তিনি বলেন,শেরেবাংলা লাহোর প্রস্তাব উত্থাপন করে ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন। জমিদারদের হাত থেকে গরীব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষদের বাঁচানোর জন্য তিনি ঋণ সালিশি বোর্ড গঠন করেন। স্বাধীন বাংলাদেশ কায়েম করার জন্য তিনি অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন।তিনি আরো বলেন,শেরেবাংলা একজন উঁচু মানের আইনজীবী ছিলেন। আইন পেশার আয়ের অধিকাংশই অসহায় সাধারণ মানুষের জন্য ব্যয় করেছেন।
সভাপতি কবি মুহম্মদ আবদুল খালেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রী এবং অন্যতম সংবিধান প্রণেতা ব্যারিস্টার এম আমিরুল ইসলাম। শেরেবাংলার দৌহিত্র এ.কে. ফাইয়াজুল হক রাজুসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক ১৯৬২ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।একজন বাঙালি রাজনীতিবিদ হিসেবে বিশ শতকের প্রথমার্ধে কূটনীতিক ও রাজনৈতিক মহল এবং সাধারণ মানুষের কাছে বাংলার বাঘ এবং হক সাহেব নামে পরিচিত ছিলেন আবুল কাশেম ফজলুল হক।
একে ফজলুল হক বাকেরগঞ্জ জেলার দক্ষিণাঞ্চলের বর্ধিষ্ণু গ্রাম সাটুরিয়ায় ১৮৭৩ সালের ২৬ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। তবে তার পূর্বপুরুষদের বাড়ি ছিল বরিশাল শহর থেকে ১৪ মাইল দূরে চাখার গ্রামে। তিনি ছিলেন মুহম্মদ ওয়াজিদ ও সায়্যিদুন্নিসা খাতুন দম্পতির একমাত্র পুত্র। ফজলুল হকের বাবা বরিশাল আদালতের দেওয়ানি ও ফৌজদারি উকিল ছিলেন এবং তার দাদা কাজী আকরাম আলী ছিলেন আরবি ও ফারসিতে দক্ষ পণ্ডিত এবং বরিশালের একজন বিশিষ্ট মোক্তার।স্যার খাজা সলিমুল্লাহ ও নওয়াব আলী চৌধুরীর কাছে ফজলুল হকের রাজনীতিতে হাতেখড়ি। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে তিনি ১৯৩৫ সালে কলকাতার মেয়র, ১৯৩৭ থেকে ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, ১৯৫৪ সালে পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, ১৯৫৫ সালে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ১৯৫৮ সালে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরের পদসহ বহু উঁচু রাজনৈতিক পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।