দল ছাড়ার ঘোষণা পথিকের,গণফোরামের কাউন্সিলে মোকাব্বির - Alokitobarta
আজ : শনিবার, ৯ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদঃ

দল ছাড়ার ঘোষণা পথিকের,গণফোরামের কাউন্সিলে মোকাব্বির


আলোকিত বার্তা:একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হওয়ার পর দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে শপথ নেয়া মোকাব্বির খান গণফোরামের কাউন্সিলে উপস্থিত হওয়ায় দলের কাউন্সিলরদের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।দলটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পথিক অভিযোগ করে বলেছেন,গণফোরাম সভাপতি ড.কামাল হোসেন‘নাটক করেছেন,এই দলই করবো না’।অন্যদিকে দলটির সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু গণফোরামের বিশেষ কাউন্সিলেই যোগদেননি।

শুক্রবার রাজধানীর গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চে গণফোরামের বিশেষ কাউন্সিলে এ ঘটনা ঘটে।কাউন্সিলের মঞ্চে ড. কামাল হোসেনের তিন আসন পর বসেন মোকাব্বির খান। ‘গণতন্ত্র উদ্ধারে জাতীয় ঐক্য তুলুন’ এই স্লোগানকে ধারণ করে গণফোরামের এই বিশেষ জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলের শুরুতে জাতীয় সংগীত বাজিয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ড. কামাল হোসেনসহ গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্যরা মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন।উদ্বোধন অনুষ্ঠানের প্রথমে গণফোরাম নেতা জগলুল হায়দায় আফ্রিক শোক প্রস্তাব পাঠ করেন। ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে কাউন্সিলে গণফোরাম নেতা সুব্রত চৌধুরী, মোকাব্বির খান, ড. রেজা কিবরিয়া, রফিকুল ইসলাম পথিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ক্ষোভে দল ছাড়ারও ঘোষণা দিয়েছেন গণফোরামের প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পথিক। এছাড়া মোকাব্বির খানের জন্য গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টুও কাউন্সিলে আসেননি। তবে গণফোরাম থেকে জানানো হয় যে, মোস্তফা মহসীন মন্টু অসুস্থ বলে তিনি কাউন্সিলে আসতে পারেননি। তবে মোকাব্বিরের অংশগ্রহণের ঘটনায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন।কাউন্সিলের সভা শুরু হওয়ার পর দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে মঞ্চে উঠেন ড. কামাল হোসেন। এসময় কামাল হোসেনের সঙ্গে গণফোরাম থেকে নির্বাচিত সাংসদ মোকাব্বির খানও মঞ্চে উঠেন। এরপর কাউন্সিলে কয়েকজন বক্তার বক্তব্য শেষে প্রথম অধিবেশন শেষ হওয়ার পর রফিকুল ইসলাম পথিক দল ছাড়ার ঘোষণা দেন।মোকাব্বিরের মঞ্চে থাকার বিষয়ে পথিক বলেন, আমি রফিকুল ইসলাম পথিক গণফোরামের প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক। দলের সকল কর্মকাণ্ডে সব সময় সম্পৃক্ত ছিলাম। আর মোকাব্বির খান যখন শপথ নিতে যান তখন দলে দুই ধরনের মত ছিল। পরে বলা হয়েছে, কার্যনির্বাহী সভায় যা সিদ্ধান্ত হবে তাই সবাই মেনে নেবে। কিন্তু ২০ তারিখের কার্যনির্বাহী সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে মোকাব্বির খানকে শোকজ করা হবে। কিন্তু ২৬ তারিখেও শোকজ করা হয়নি! আজকেরটা তো দেখেছেনই।

এসময় দল ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, মোকাব্বির খান ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে গেলে বলে ‘গেট আউট,। আর বাসায় গেলে বলে সংসদে যাও। এধরণের দ্বৈত নীতির যে আচরণ, এই দলে আমি থাকবো না। এই আচরণে আমি ব্যথিত। এই দল আর আমি করবো না।নেতাকর্মীরাও মোকাব্বির খানের উদ্দেশে বলেন, তুই ওখানে বসে আছিস কেন? তোর তো ওখানে বসার জায়গা নয়। ড. কামালের ওপরও ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকেই।এরআগে কাউন্সিলে উদ্বোধনী বক্তব্যে কামাল হোসেন বলেন, ক্ষমতার উৎস হলো জনগণ, আর কেউ না। সুতরাং আপনাদের দেখতে হবে, যারা ক্ষমতায় তারা কি দেশের স্বার্থে না কি নিজের স্বার্থে কাজ করছেন। না কি অন্য কিছু করছেন। উল্টো কিছু করলে সংগঠিত হয়ে তাদের থামাতে হবে। কারণ জনগণ গণতন্ত্রের পাহারাদার। আর এই নাগরিকরা যদি দায়িত্ব পালন না করে তাহলে গণতন্ত্র স্বৈরতন্ত্রে পরিণত হতে পারে।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিষয়ে তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি জনগণের হয়ে যে রায়টা দিলেন, আমি মনে করি- সেটা চির স্মরণীয় থাকবে। আর তিনি ঐতিহাসিক ভূমিকা রেখে গেলেন। এই কথা শুনে যে আপনারা যে করতালি দিলেন, এটা উনাকে জানানো হবে।ড. কামাল বলেন,পুলিশ কিন্তু দেশের মালিক না,দেশের সেবক। সংবিধান মেনে তারা আইন অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবে। আপনারা সতর্ক থাকবেন যে পুলিশ যেন তার ক্ষমতার বাইরে গিয়ে কোনো অন্যায়-অত্যাচার করতে না পারে। সুষ্ঠু গণতন্ত্র ও সংবিধানের শাসন তখনই থাকে, যখন পুলিশ তার দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করে।

Top