মির্জাগঞ্জে শিক্ষকের বাসার কাজের মেয়ে ২ মাসের অন্তঃসত্ত¡া \ ঘটনা ধামাচাপার চেষ্টা
মির্জাগঞ্জ(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি\পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার মজিদবাড়ীয়া ইউনিয়নের করমজাবুনিয়াগ্রামের মোঃ জসিম উদ্দিন নামের এক প্রধান শিক্ষকের বাসার কিশোরী কাজেরমেয়ে ২ মাসের অন্তঃসত্ত¡া হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অর্থের বিনিময়েঅভিযুক্ত ছেলের মামা ও উপজেলা ওলামাদলের সভাপতি মাওলানা ডাঃ মোঃ আবুল কালামআজাদ, মাধবখালী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ মনির হোসেন ওস্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ বাচ্চু মিয়া এ ঘটনাটি ধামাচাপাদেয়ার জন্য পায়তাঁরা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের ভয়ে এলাকায় কেউ মুখ খুলতে সাহসপাচ্ছে না। ফলে ভিকটিমের পরিবার আতংকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। অন্তঃসত্ত¡া কাজেরমেয়ে লাইজু আক্তার(১৭)(ছদ্মনাম) উপজেলার বাজিতা গ্রামের এক দিন মজুরেরমেয়ে। ভিকটিমের পরিবার সূত্রে জানা যায়,উপজেলার বাজিতা (৪র্থ খন্ড) গ্রামেরমোঃ হিরন সরদারের স্ত্রী শিল্পি আক্তার মেয়ে লাইজু আক্তারকে রেখে না ফেরার দেশে চলেযান। মা হারা মেয়ে এতিম হয়ে পড়ে। এরপরে পিতা দ্বিতীয় বিয়ে করলে পিতারসংসারে অভাব-অনটনের কারনে মেয়েকে করমজাবুনিয়া গ্রামের মোঃ জসিমউদ্দিনের স্ত্রী শিক্ষিকা শিউলী বেগম নিজ বাসায় ঝি’এর কাজের জন্য নিয়েযায়।ওই বাড়িতে অনেক বছর কাজ করার সুবাদে শিউলী বেগমের বড় বোনের ছেলে ওঘটকের আন্দুয়া গ্রামের মোঃ ওহাব মিয়ার পুত্র মোঃ ওলি আহম্মেদ খালা বাড়িতেপ্রায়ই আসা-যাওয়া করত এবং এসময় ওলি আহম্মেদের কু-নজর পরে কাজের মেয়েটিরদিকে। ভিকটিম বলেন, ওলি খালার বাড়িতে আসলে আমাকে বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিত,এক পর্যায়ে খালা-খালু স্কুলে থাকায় সে আমাকে বিয়ের প্রলোভনদেখিয়ে আমার সাথে দৈহিক মেলামেশা করে।
এভাবে প্রায় সময়ই সে বাড়িতেআসলেই আমার সাথে দৈহিক সম্পর্ক করতো,এতে আমি অন্তঃসত্বা হয়ে পড়ি।ঘটনাটি জানাজানি হলে ছেলের খালা করমজাবুনিয়া সরকারি প্রাথমিকবিদ্যালয়ের শিক্ষিকা শিউলী বেগম ও তার স্বামী জসিম উদ্দিন আমাকে মেডিকেলচেকআপ করানোর জন্য পার্শ্ববর্তী জেলা বরগুনার একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলেচেকআপের রিপোর্টে দুই মাসের অন্তঃসত্ত¡ার বিষয়টি ধরা পড়ে। পরের দিন ছেলেরখালা শিউলী বেগম আমাকে বাড়ী পৌঁছে দেয়ার কথা বলে নিয়ে এসে আমারবাড়ির পাশের রাস্তায় আমাকে নামিয়ে দেয় এবং ঘটনাটি কাউকে না বলার জন্যভয়ভীতি দেখিয়ে চলে যায়। বাড়িতে এসে সৎ মা’কে জানালে আমার পিতা হিরনসরদার শিউলী বেগমের কাছে বিষয়টি জানতে চান। পরে উভয় পক্ষ আলোচনা করেআবারও ২য় বারের মত মেডিকেল চেকআপ করানোর জন্য ছেলের মামা মোঃ মিজানুররহমান, মনির হোসেন ও বাচ্চু আমাকে বাকেরগঞ্জের একটি হাসপাতালে নিয়েযায়। রিপোর্টে অন্তঃসত্ত¡ার বিষয়টি পূনঃরায় ধরা পড়লে আমার বাবা হিরন সরদারস্থানীয় মাধবখালী ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম তালুকদারকে অবহিত করলেতিনি (চেয়ারম্যান) তাৎক্ষনিকভাবে ছেলের অভিভাবকদের ডেকে সামাজিকভাবেবিয়ের করার জন্য প্রস্তাব দেন। এসময় বৈঠকে উপস্থিত ছেলের মামা উপজেলাওলামাদলের সভাপতি মাওলানা ডাঃ মোঃ আবুল কালাম আজাদ বিয়ের প্রস্তাবপ্রত্যাখ্যান করেন এবং বিষয়টি মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে সমঝোতার জন্যপাল্টা প্রস্তাব করলে ইউপি চেয়ারম্যান ও ভিকটিমের পরিবার রাজি না হওয়ায় বৈঠকথেকে বেরিয়ে যান ছেলে পক্ষ।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ওলির বড় মামা মাওলানা ডাঃ মোঃআবুল কালাম আজাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ স্বীকার করেবলেন, উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধান করাহয়েছে। মিজানুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমিঘটনাটি শুনেছি তবে আমি সাথে যাইনি। মোঃ মনির হোসেন এবং বাচ্চুমেয়েটিকে দ্বিতীয়বার মেডিকেল চেকআপের জন্য নিয়ে গিয়েছিল। তবে লোকমুখে শুনেছি মেয়েটি অন্তঃসত্ত¡া। মাধবখালী ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলামতালুকদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অভিযোগ পেয়ে ছেলে পক্ষকেইউপি কার্য্যালয়ে ডেকে সামাজিকভাবে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তারা তাপ্রত্যাখ্যান করে অর্থের বিনিময়ে সমঝোতার জন্য পাল্টা প্রস্তাব করলে আমি ওভিকটিমের পরিবার রাজি না হওয়ায় তারা বৈঠক থেকে বেরিয়ে চলে যান,পরবর্তীতেকি হয়েছে আমার জানা নেই।মেয়ের সৎ মা মোসাঃ পারভীন বেগম বলেন, আমার মেয়ে ওই বাড়িতে দীর্ঘদিন যাবৎকাজ করত। বাড়ির গৃহর্কতার ভায়রার ছেলে ওলী দীর্ঘদিন যাবৎ তার সাথেজোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করে বলে আমার মেয়ে জানায়। এ ব্যাপারে অভিযুক্তছেলের খালু দক্ষিন গাবুয়া সরকরি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জসিমউদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,আমারবাসায় থাকাকালীন এরকম কোন ঘটনা ঘটেনি। মির্জাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্তকর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মাসুমুর রহমান বিশ^াস বলেন, এখন পর্যন্ত কোনঅভিযোগ পাইনি,তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।